চীন চুক্তি ভঙ্গ করেছে; বিশ্বকে গালওয়ানের সত্যতা জানালেন এস জয়শঙ্কর - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 27 September 2023

চীন চুক্তি ভঙ্গ করেছে; বিশ্বকে গালওয়ানের সত্যতা জানালেন এস জয়শঙ্কর


চীন চুক্তি ভঙ্গ করেছে; বিশ্বকে গালওয়ানের সত্যতা জানালেন এস জয়শঙ্কর 



প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৭ সেপ্টেম্বর: পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ২০২০ সালের জুনে ভারত ও চীনা সেনাবাহিনীর মধ্যে হিংসাত্মক সংঘর্ষের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা স্বাভাবিক নয় এবং সম্ভবত এই সমস্যাটি প্রত্যাশার চেয়ে দীর্ঘতর হতে পারে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ফরেন রিলেশনস কাউন্সিলে ভারত-চীন সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, 'বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই দেশের মধ্যে যদি এই মাত্রায় উত্তেজনা থাকে, তাহলে তা নিশ্চিতভাবে সবার ওপর প্রভাব ফেলবে।'


বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন যে, 'চীন যেভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) তার সৈন্য মোতায়েন করছে, উত্তেজনা কমানোর পরিবর্তে তা বাড়ছে।' তিনি বলেন, 'এলএসি নিয়ে চীন যে তথ্যই দিচ্ছে তা বাস্তবে যৌক্তিক নয়।' তিনি বলেন, 'ভারত ক্রমাগত বলছে যে, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য সীমান্তে শান্তি ও সম্প্রীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'


চীনে ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত থাকা এস জয়শঙ্কর বলেন, 'চীনের সাথে সম্পর্কের দুর্বলতা হল এই যে, আপনি কখনই জানতে পারবে না যে তারা কী করতে চলেছে। এ কারণে চীনের সঙ্গে সম্পর্কে সবসময়ই অস্পষ্টতা থাকে।' জয়শঙ্কর বলেন, 'লাদাখে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়ে চীনা পক্ষ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেছে, তবে সেগুলির কোনওটিই সঠিক নয়। গালভান উপত্যকায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের পর গত তিন বছর ধরে অনেক জায়গায় অচলাবস্থা বিরাজ করছে। কয়েক দফা কূটনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ের আলোচনার পর উভয় দেশের সেনারা অনেক জায়গা থেকে পিছু হটেছে।'


বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, 'যেই দেশ সম্পর্কে স্পষ্টতা রাখে না সেই দেশের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্কের কথা বলা খুবই কঠিন। এ কারণেই গত তিন বছর ধরে চলমান উত্তেজনা এখনও স্বাভাবিক হয়নি।' তিনি বলেন, 'দুই দেশের মধ্যে অবশ্যই উচ্চ পর্যায়ের সামরিক উত্তেজনা রয়েছে। চীনের এ ধরণের কর্মকাণ্ড ভারতে চীনের প্রতি ধারণাকেও প্রভাবিত করেছে।' জয়শঙ্কর বলেন, 'আমি মনে করি চীন এটিকে তৎকালীন ইস্যু হিসাবে রাখতে চায়। এমন পরিস্থিতিতে, এই সমস্যাটি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সময় ধরে টানতে পারে।'


তিনি বলেন, ১৯৬২ সালে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ হয়। এরপর সামরিক ঘটনা ঘটলেও ১৯৭৫ সালের পর সীমান্তে কোনও যুদ্ধে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।' তিনি বলেন, '১৯৮৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী চীনে যাওয়ার পর ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক আরও স্বাভাবিক হয়। 'সীমান্তে স্থিতিশীলতার জন্য চীনের সঙ্গে ১৯৯৩ ও ১৯৯৬ সালে দুটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেগুলো বিতর্কিত। তিনি বলেন, সেসব বিষয়ে আলোচনা চলছে', সংযোজন জয়শঙ্করের। 


তিনি আরও বলেন, 'চুক্তির অধীনে, দুই দেশ সহমত হয় যে, ভারত বা চীনের পক্ষ থেকে কেউই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সেনা সমাবেশ করবে না। এলএসি-তে যদি কোনও পক্ষ নির্দিষ্ট সংখ্যক সৈন্য আনেও, তা অপর পক্ষকে জানিয়ে দেবে।' বিদেশ মন্ত্রী বলেন, 'এটা ছিল সম্পূর্ণ পরিষ্কার চুক্তি। ২০২০ সালে, যখন ভারত কোভিড -১৯ লকডাউনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, তখন বিপুল সংখ্যক চীনা সৈন্য প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।' 


তিনি বলেন, 'চীনের এই পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদেরও সীমান্তে সেনার সংখ্যা বাড়াতে হয়েছে। আমরা চীনাদের সতর্ক করে দিয়েছিলাম যে, এই ধরনের পরিস্থিতি সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং তারপর ২০২০ সালের জুনের মাঝামাঝি এমন ঘটনা ঘটে।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad