শিক্ষকের মারে মাথার খুলিতে ফাটল, বেরিয়ে এল মগজ
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ১৭ সেপ্টেম্বর: একজন ব্যক্তি আপনার কাছে খুব মূল্যবান, এতটাই যে আপনি তার জন্য আপনার জীবনও উৎসর্গ করতে পারেন। কিন্তু আপনি কি তাকে অচেনা ব্যক্তির হাতে তুলে দেবেন? বিশ্বাস থাকলে তবেই, অন্যথায় না। কিন্তু তারপরও এ নিয়ে ভয় থাকবে। সন্তানরাও তাদের পরিবারের জন্য এমন। এমনকি তাদের যাতে একটু আঁচড়ও না লাগে তার জন্য অভিভাবকরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। একটু অসুস্থ হয়ে পড়লে সারা রাত মা ঘুমায় না। কিন্তু শিক্ষার জন্য এই শিশুদের নিজেদের থেকে আলাদা করতেই হয়। শিশুরা ৮ থেকে ৯ ঘন্টা স্কুলে কাটায়। কিন্তু এই সময়ে তারা কি সম্পূর্ণ নিরাপদ?
বেশ কিছুদিন ধরে এমন ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, যার কারণে এই প্রশ্নের উত্তর শুধু 'হ্যাঁ'-তে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছেন। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে আলোচিত ৯ বছরের এক শিশুর ঘটনা। সে চীনে থাকেন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি। অভিযোগ, শিক্ষক তাকে এতটাই মারধর করেন যে, তার মাথার খুলি থেকে মগজ বেরিয়ে আসে।
৯ বছর বয়সী একটি মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার মাথার খুলিতে এত ক্ষত ছিল যে কল্পনাও করা যায় না। ধাতুর তৈরি স্কেল দিয়ে শিক্ষক তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। মাথায় স্কেলটি এতবার আঘাত করে যে, মস্তিষ্ক প্রায় বেরিয়ে এসেছিল। হাড় ঢুকে গিয়েছিল মাথার খুলিতে। ঘটনাটি চীনের হুনান প্রদেশের।
এখানকার বোকাই মেইসিহু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় পুলিশ। তিনি মেয়েটির মাথায় এতটাই আঘাত করেন যে এতে ৫ সেন্টিমিটার গভীর ক্ষত হয়, যার কারণে মেয়েটির মাথার খুলি গুরুতরভাবে আহত হয়। কেন তাকে এত বেধড়ক মারধর করা হয়েছে সে তথ্য এখনও জানা যায়নি। গত ৬ সেপ্টেম্বর এ ঘটনা ঘটে।
ওই শিক্ষকের নাম গান মৌমিং। মেয়েটির অবস্থার অবনতি হলে তাকে স্কুলে উপস্থিত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। স্কুল এটিকে ছোটখাটো আঘাত হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে যে, শুধুমাত্র সেলাই প্রয়োজন। কিন্তু মেয়েটির অবস্থা খারাপ হতে দেখে স্কুলের কর্মীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান
পরীক্ষা করে দেখা যায় মাথার খুলিতে ফাটল রয়েছে। তার হাড় ভেঙে গেছে এবং অবিলম্বে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল। কয়েক ঘন্টা ধরে অস্ত্রোপচার চলে। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা অপারেশন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন, কারণ পিতামাতার অনুমোদনের অভাব। পরে তার বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়। তার মা জানান, স্কুলের ডাক্তার সঙ্গে এসেছেন। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বলতে থাকেন শুধু সেলাই দিতে। আক্রান্ত মেয়ের বাবা জানান, তার মেয়ে এখনও আইসিইউতে রয়েছে।
এরপর স্কুল থেকে পরিবারের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি। তিনি বলেন, 'স্কুল থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি। আমি এখন কী করব জানি না, তবে আমি শুধু চাই আমার মেয়েকে বাঁচানো হোক। স্কুল বলছে যে, পুলিশি তদন্তে সহযোগিতা করবে।'
প্রসঙ্গত, আমাদের দেশেও শিক্ষকদের করা নিষ্ঠুরতার অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। মাত্র দুদিন আগের কথা। ইউপি থেকে একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। ১৭ বছরের এক কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এর জন্য তার শিক্ষককে দায়ী করেছে পরিবার। ৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ে শিক্ষক দিবস পালিত হয়। এ সময় এক শিক্ষক নাচলে, মেয়েটি হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে তার ভিডিও পোস্ট করেছে। অভিযোগ, এ নিয়ে ওই শিক্ষক তাকে ফোনে হুমকি দেন এবং স্কুল থেকে তার নাম কেটে দেওয়ার হুমকি দেন। এরপরই ওই কিশোরী এই পদক্ষেপ নেন।
No comments:
Post a Comment