জৌলুস তলানিতে! মূর্তির বদলে ঘটেই বিশ্বকর্মা পুজো
নিজস্ব সংবাদদাতা, হাওড়া, ১৭ সেপ্টেম্বর: একদিন পর বিশ্বকর্মা পূজা। গৃহস্থের বাড়িতে সেভাবে না হলেও যে কোনও লোহা-লস্কর সংক্রান্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আর্থিক উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশ্বকর্মা পুজো করে থাকেন। আর হাওড়ার মতো পুরাতন শিল্প নগরীতে এক সময়ে ধূমধাম করে পুজো হলেও বর্তমানে সেই জৌলুসের কণা মাত্র অবশিষ্ট নেই। একের পর এক ছোট বড় কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বা কোথাও ধুঁকতে থাকা ছোট কারখানার মালিকদের আর্থিক অবনতি হাওড়া শহরে শিল্পের অবলুপ্তির পথেই ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে অতীতের শিল্প নগরীর জৌলুস।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ অতীতের শিল্প নগরীর অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হাওড়ার ইছাপুর এলাকায় বেশির ভাগ কারখানাতেই ঘট বসিয়ে নম নম করেই পুজো সম্পন্ন করা হয়। আগের তুলনায় এখন ব্যবসায় এসেছে মন্দা। কারখানার কারিগররা জানান, বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ঘট পুজো করা হয়। এছাড়াও কাজের অবস্থা আগের থেকে অনেকটা খারাপ।
হাওড়ার দাস নগর এলাকা তথা ইছাপুর এলাকাতে ছোট বড় লেদ মেশিনের কারখানা রয়েছে। সেখানেও বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে ঘট বসিয়েই পুজো সম্পন্ন করা হয়। ব্যবসার হাল মন্দ হওয়ার জন্য শ্রমিকদের সংখ্যাও দিনের পর দিন কমেছে। এই সকল লেদ কারখানাতে অতীতে শ্রমিকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাওড়ার শিল্পের জৌলুস তলানিতে এসে ঠেকার কারণে এই ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে পরবর্তী প্রজন্ম।
ঐ এলাকার একটি লেদ মেশিন কারখানার শ্রমিক মানস মান্না বলেন, 'আমাদের ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। এখানে পুজোর আগের দিন কারখানা পরিষ্কার করা হয়। পরের দিন ঘট বসিয়ে পুজো করা হয়। তারপরে আমরা বাড়ি চলে যাই।'
এলাকার লেদ কারখানার মালিক মন্টু সাধুক বলেন, 'এই কারখানা আমি ১৫ বছর ধরে চালাচ্ছি। এখানে ঘট বসিয়ে পুজো করা হয়। মূর্তি আনলে দু'বেলা পুজো করতে হবে। শ্রমিকের অভাব, তাই ঘটেই পুজো করা হয়। ব্যবসার অবস্থা খুব ভালো নয়। এক কথায়, চলার মতো চলছে। আমরা রেলের ও গ্যাস কাটিংয়ের কাজ করি। আগে যে ব্যবসা ছিল এখন আর সেটা নেই।'
অতীতের শিল্পের শেফিল্ড তকমাতে ভূষিত হাওড়ার শিল্প নগরীর পুনরুদ্ধার কীভাবে সম্ভব বা আদৌ সম্ভব কিনা তাই নিয়ে আলোচনা চলেই আসছে। যদিও অতীতের কৌলিন্য থেকে বর্তমানের ধুঁকতে থাকা হাওড়া শিল্প নগরী রয়েছে তার গৌরবময় অতীতের স্মৃতিচিহ্নকে বুকে নিয়ে।
No comments:
Post a Comment