"শেষ পর্যন্ত লড়ব, ১০ কোটি বাঙালি আমার সঙ্গে আছে", মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ রাজ্যপালের
নিজস্ব প্রতিবেদন, ০৭ সেপ্টেম্বর, কলকাতা : রাজ্য এবং রাজ্যপালের মধ্যে দ্বন্দ্ব কমার কোনও লক্ষণ নেই। শিক্ষাক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ হলে অর্থনৈতিক অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক ঘন্টা পরে, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাকে মধ্যরাতে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত করেন। এবার মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির কড়া কথায় জবাব দিলেন তিনি। তিনি মন্তব্য করেন, প্রতিবাদ করতে চাইলে রাজভবনের ভেতরে আসুন।
রাজ্য বিধানসভা ইতিমধ্যেই রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়োগের জন্য একটি বিল পাস করেছে। কিন্তু রাজ্যপাল সই না করায় এই বিল এখনও আইনে পরিণত হয়নি। উত্তেজনার মধ্যে, রাজ্যপাল অনেক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। কিন্তু তা করতে গিয়ে রাজ্যপাল রাজ্যের বিষয়গুলোকে পাত্তা দিচ্ছেন না বলে রাজ্যের অভিযোগ। যখন তারা দাবী করেন, উপাচার্যের পদ তাদের চাওয়া কাউকে দেওয়া হচ্ছে। মমতা নিজেও এগিয়ে গেলেন তাঁর সঙ্গে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, রাজ্যপাল যদি তার ইচ্ছানুযায়ী কাজ করেন তাহলে তার সরকারও অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। রাজভবনের বাইরে ধর্নায় বসতে বাধ্য করা হবে বলেও জানান তিনি।
সেই চর্চার মধ্যেই মুখ খুললেন রাজ্যপাল। দিল্লী থেকে ফেরার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, "আমি একজন অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে আচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। শিক্ষা বিভাগ বলছে, এটা ভুল। কলকাতা হাইকোর্ট বলেছে আমিই ঠিক। বাংলার শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক তাকে নির্বাচিত ও উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কিছু ত্রুটি ছিল। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, তাদের যেতে হবে, পদত্যাগ করতে হবে। পাঁচ অন্তর্বর্তী উপাচার্যের পদত্যাগ দুঃখজনক। তিনি বলেন, তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। তারা ভীত। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমার বাংলার ভাই ও বোনেরা, বলুন তো, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কি সহিংসতা চান? আপনি কি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুর্নীতি চান?"
রাজ্যপাল বলেন, “আমি নেতাজির নামে শপথ করছি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে শপথ করছি। আমি স্বামী বিবেকানন্দের নামে শপথ করছি। বাঙালিয়ানার শপথ করছি। আমি আইনের শপথ করছি। বাংলার মানুষের শপথ করছি। শেষ পর্যন্ত লড়ব। আমি একা থাকতে পারি কিন্তু আমি একা নই। ১০ কোটি বাঙালি আমার সঙ্গে আছে। এটাই আমার শক্তি। আপনারা আমার পিছনে থাকলে আমি একা চলতে পারব। সহিংসতা হবে না, দুর্নীতি হবে না। একলা চলো। বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমার নোয়াখালী হোক। জয় ভারত, জয় বাংলা।"
No comments:
Post a Comment