ষষ্ঠী-সন্ধিপুজো শুরুর আগে কামান দাগা হত গোবরডাঙার জমিদার বাড়িতে - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 11 October 2023

ষষ্ঠী-সন্ধিপুজো শুরুর আগে কামান দাগা হত গোবরডাঙার জমিদার বাড়িতে


ষষ্ঠী-সন্ধিপুজো শুরুর আগে কামান দাগা হত গোবরডাঙার জমিদার বাড়িতে




উত্তর ২৪ পরগনা: সেই চাকচিক্য আজ আর নেই, হারিয়ে গিয়েছে জৌলুস। অনেকদিন আগেই চলে গিয়েছে জমিদারি। বেশকিছু নিয়ম-নীতিরও পরিবর্তন করা হয়েছে। তবুও পুরনো ঐতিহ্য মেনে এখনও ঠাকুর দালানে এক চালার প্রতিমায় পুজো হয়ে আসছে উত্তর ২৪ পরগনার অন্যতম প্রাচীন শহর গোবরডাঙার জমিদার বাড়িতে। চলতি বছর গোবরডাঙার জমিদার বাড়ি তথা মুখোপাধ্যায় বাড়ির এই দুর্গা পূজা ৩১২ বছরে পড়ল। 


পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক শত বছর আগে মুখোপাধ্যায় পরিবারের পূর্বপুরুষেরা উত্তরপ্রদেশ থেকে অধুনা বাংলাদেশের সারসা এলাকার সাগরদাঁড়িতে এসে বসবাস শুরু করেন। পরিবারের এক সদস্য শ্যামরান মুখোপাধ্যায় গাইঘাটার ইছাপুরে এসে চৌধুরী জমিদার পরিবারের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। সেই সূত্রেই জমিদারির একাংশ পান তিনি। তার ছেলে খেলারাম কালেক্টর ছিলেন। গোবরডাঙার বাড়িতে তিনি দুর্গা পূজার সূচনা করেন। এছাড়াও এলাকায় প্রসন্নময়ী দক্ষিণা কালীমন্দির ও দ্বাদশ শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। কথিত আছে ওই কালী মন্দির এসেছিলেন রানী রাসমণি। 


জানা গিয়েছে, ষষ্ঠীতে ও সন্ধিপুজো শুরু করার আগে কামান দাগা হত। আশেপাশের মানুষকে জানান দেওয়া হতো পুজো শুরু হচ্ছে। একটা সময় এই পুজোতে মাকে উৎসর্গ করে বলি দেওয়া হতো ১৩ টা পাঠা, ২ টো ভেড়া। তবে, ১৯৯৭ সালের পর সেই বলি প্রথাও উঠে গিয়েছে। এখন মধু ও চিনির ভোগ দেওয়া হয় মাকে। 


আগে পুজো উপলক্ষে আসতেন রাজ্যের বড় বড় সংগীতকার ও সংগীত বাদকেরা। নিয়ম করে বসতো ক্লাসিকাল মিউজিকের আসর। এক সময় পুজোর কটা দিন আত্মীয়-স্বজন এবং বিখ্যাত বিখ্যাত লোকেরা আসতেন এই জমিদার বাড়ির পুজোতে। বহু মানুষকে ভোগ খাওয়ানো হতো। তবে এখন সেসব যেন অতীত, স্মৃতি ছাড়া আর কিছুই নয়। সেই আড়ম্বরও আর নেই। এখন এলাকার কিছু মানুষ ও জমিদার বাড়ির সদস্যরাই পুজোয় উপস্থিত থাকেন। 


জমিদার বাড়ির সামনে থেকে বয়ে গিয়েছে যমুনা নদী। নিয়ম করে দশমীর পুজোর পর জোড়া নৌকো বেঁধে প্রতিমা নিয়ে গিয়ে নৌকার মধ্যেই চলতো গান-বাজনা ও পরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হতো। কথিত আছে জমিদারদের বাড়ির প্রতিমা বিসর্জনের পর এলাকার অন্যান্য প্রতিমা বিসর্জন হত। তবে সেই রীতি আজ আর কেউ অনুসরণ করে না। তবে, পুরনো ঐতিহ্য ধরে রেখে ঐতিহ্যবাহী গোবরডাঙার জমিদার বাড়ির দুর্গা পুজো আজও একই ভাবে হয়ে আসছে। 


এর আগে করোনা কালে দু'বছর মূর্তিপূজো বন্ধ ছিল। সে সময় জমিদারদের বাড়ির কালী মন্দিরে ঘটে নিয়ম করে দুর্গা পুজোর আচার অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad