দেবীকে দেওয়া হয় মাছের ভোগ, ৩৬৩ বছরের প্রাচীন পুজো আলিপুরদুয়ারে
আলিপুরদুয়ার: প্রাচীন বনেদি বাড়ির দুর্গাৎপূজার মধ্যে অন্যতম আলিপুরদুয়ারের গাঙ্গুলী বাড়ির পুজো। জানা যায়, এই পুজো ৩৬৩ বছরের পুরনো। পুজো শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার মাদারিপুর মহকুমার অন্তর্গত মহীশূর গ্রামে। এখনও বাংলাদেশ থেকে আনা প্রতিমার কাঠামোতেই তৈরি হয় এই প্রতিমা। বংশ পরম্পরায় কুমোরেরা তৈরি করে আসছেন এই প্রতিমা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯১১ সালে আলিপুরদুয়ারে চলে আসে এই গাঙ্গুলী পরিবার। তখন থেকে এখানেই হয়ে আসছে পুজোর আয়োজন। প্রথম পুজো শুরু হয়েছিল ১৬৬০ সালে ফরিদপুরে। উমাচরণ গাঙ্গুলী শুরু করেছিলেন এই পুজো। তারপর আলিপুরদুয়ারে এই পুজো শুরু করেছিলেন দিলীপ গাঙ্গুলী। বর্তমানে সৌরভ গাঙ্গুলী এই পূজার দায়িত্বে রয়েছেন।
বনেদি বাড়ির এই পুজোয় দেখা যায় বিশেষ নিয়ম। যেমন কার্ত্তিক ও সরস্বতী থাকেন দেবীর ডানদিকে আর লক্ষ্মী ও গণেশ থাকেন দেবীর বাম দিকে। এছাড়া নবমীতে চাল বাটা দিয়ে মানুষ তৈরি করে তাকে বলি দেওয়া হয়।
পুজোর অন্যতম আয়োজক অমিতাভ গাঙ্গুলী জানান, পুজোয় প্রতিদিন খিচুড়ি দেওয়া হয়। এছাড়া থাকে পায়েস, লুচি ছাড়াও বিভিন্ন পদ। তবে মাছের একটি পদ দেবীর ভোগে দেওয়া হবেই। পুজো শুরু হয় প্রথমা থেকেই। দেশ ও বিদেশ থেকে পরিজনরা চলে আসেন পঞ্চমীর মধ্যেই। ঐতিহ্য বজায় রেখেই অনুষ্ঠিত হয় এই পুজো।
তিনি আরও জানান, মূর্তির কাঠামো ভাসানের দুদিন পর তুলে আনা হয়। পুজোর কয়েকটা দিন সকলে মিলে একসঙ্গে এক জায়গায় খাওয়া-দাওয়া হয়। সকলে পুজো মন্ণ্ডপেই গল্পগুজব করেন। বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে যে যা পারেন, তাই করেন। সবমিলিয়ে পুজোর দিনগুলো সকলে মিলে একসঙ্গে আনন্দ করে কাটানোর চেষ্টা করা হয়।
No comments:
Post a Comment