'লিভ-ইন সম্পর্ক টাইম পাসের মতো', যুগলের মামলায় রায় হাইকোর্টের
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৩ অক্টোবর: লিভ-ইন সম্পর্ক নিয়ে বড় রায় দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। লিভ-ইন রিলেশনশিপ নিয়ে কটাক্ষ করে হাইকোর্ট একে টাইম পাসের মতো বলে অভিহিত করেছেন। হাইকোর্ট বলেছে, 'সুপ্রিম কোর্ট লিভ-ইন সম্পর্ককে অবশ্যই স্বীকৃতি দিয়েছে, কিন্তু এই ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সততার চেয়ে পারস্পরিক মোহ বা আকর্ষণই বেশি থাকে। লিভ-ইন সম্পর্ক খুবই কোমল এবং অস্থায়ী। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, জীবন কষ্ট ও সংগ্রামে ভরা। এটিকে ফুলের শয্যা ভেবে ভুল করা উচিৎ নয়।'
এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট মুসলিম যুবকের সাথে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা হিন্দু মেয়েকে নিরাপত্তা দেওয়ার আবেদন খারিজ করে দেয়। আদালত বলেছে যে, ২২ বছর বয়সে মাত্র ২ মাস কারও সাথে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার মাধ্যমে সম্পর্কের পরিপক্কতা বিচার করা যায় না। লিভ-ইন রিলেশনশিপে বসবাসকারী হিন্দু মেয়ে ও মুসলিম ছেলের আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট।
বিষয়টি মথুরা জেলার রিফাইনারি থানা এলাকায়। রাধিকা নামের ২২ বছরের এক তরুণী বাড়ি ছেড়ে সাহিল নামে এক যুবকের সাথে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে শুরু করে। ১৭ অগাস্ট, রাধিকার পরিবারের সদস্যরা সাহিলের বিরুদ্ধে মথুরার রিফাইনারি থানায় আইপিসির ৩৬৬ ধারায় মামলা দায়ের করেছিলেন। পরিবারের সদস্যরা সাহিলের বিরুদ্ধে বিয়ের জন্য রাধিকাকে অপহরণ করার মামলা করেছিলেন এবং তাকে তার জীবনের জন্য হুমকি বলেও বর্ণনা করেছিলেন। লিভ-ইন রিলেশনশিপে থাকা রাধিকা এবং সাহিল এফআইআর বাতিলের দাবীতে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেন।
পিটিশনে, রাধিকা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে মথুরা পুলিশকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়ারও আবেদন করেন, এই বলে যে তার বা তার প্রেমিক সাহিলের জীবনের হুমকি রয়েছে। অভিযুক্ত সাহিলকে গ্রেফতারে নিষেধাজ্ঞার আবেদনও জানানো হয় আদালতে। সাহিলের পক্ষে আবেদনটি করেন তার আত্মীয় এহসান ফিরোজ।
এখন এই আবেদনের শুনানি হয়েছে বিচারপতি রাহুল চতুর্বেদী এবং বিচারপতি মোহাম্মদ আজহার হুসেন ইদ্রিসির ডিভিশন বেঞ্চে। আদালতে শুনানির সময়, রাধিকা ও সাহিলের পক্ষে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল যে, তারা দুজনই প্রাপ্তবয়স্ক এবং নিজেদের ইচ্ছায় লিভ-ইন সম্পর্কে একে অপরের সাথে বসবাস করছেন। পাশাপাশি বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুজনেরই একসঙ্গে থাকার অধিকার রয়েছে এবং তাদের জীবনে হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারও নেই। রাধিকা ও সাহিলের এই আবেদনের বিরোধিতা করেছিলেন রাধিকার পরিবারের সদস্যরা।
আদালতকে বলা হয় যে, সাহিলের একটি অপরাধমূলক ইতিহাস রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে মথুরার ছাতা থানায় গ্যাংস্টার মামলাও নথিভুক্ত করা হয়েছিল। ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাহিলের সঙ্গে রাধিকার ভবিষ্যৎ মোটেও নিরাপদ নয় এবং যে কোনও সময় সে তার জীবনের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
এই মামলায় রায় দেওয়ার সময় হাইকোর্ট এফআইআর বাতিল এবং রাধিকা ও সাহিলকে নিরাপত্তা দেওয়ার আবেদন গ্রহণ করেনি, তা খারিজ করে দেয়। আদালত তার রায় দেওয়ার সময় লিভ-ইন সম্পর্ককে টাইম পাস হিসাবে বর্ণনা করেছে এবং এই সম্পর্ককে অস্থায়ী ও কোমল বলে বর্ণনা করেছে।
এর পাশাপাশি আরও বলা হয়, 'জীবন জটিলতায় পূর্ণ এবং এটিকে ফুলের শয্যা হিসাবে বিবেচনা করা উচিৎ নয়। একটি সম্পর্কের পরিপক্কতা মাত্র ২ মাসের মধ্যে বিচার করা যায় না।' এলাহাবাদ হাইকোর্ট এও বলেছে যে, :লিভ-ইন সম্পর্ককে সুপ্রিম কোর্ট অনুমোদন দিয়েছে, তাই তার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা উচিৎ নয়।'
No comments:
Post a Comment