দাঁত ভালো রাখতে ঠিক সময়ে ব্রাশ বদলান
প্রদীপ ভট্টাচার্য, ২৯শে অক্টোবর, কলকাতা : সাবধান! আপনি কী টুথব্রাশ যতক্ষণ শেষ না হচ্ছে দাঁত মেজেই যাচ্ছেন? জানেন অজান্তেই কি ক্ষতি করে চলেছেন নিজের! কতদিন অন্তর বদলানো উচিত দাঁত মাজার ব্রাশ? লাগাতার একই ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজলে কি কি ক্ষতি হতে পারে? জানুন বিস্তারিত।
দাঁত ভালো রাখতে নিয়মিত ব্রাশ করা খুবই জরুরী। দাঁতের যত্নে দামি টুথপেস্ট থেকে শুরু করে অনেকেই আয়ুর্বেদিক টুথপেস্টও ব্যবহার করেন। কিন্তু একটানা একই ব্রাশ ব্যবহার করা যে ক্ষতিকর এটা মানুষ ভুলেই যান। তাই অধিকাংশ মানুষই টুথব্রাশ খারাপ না হওয়া পর্যন্ত তা ব্যবহার করে চলেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে মুখের ভেতর স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য দাঁতের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি ঠিক সময়ে ব্রাশ বদলানোও প্রয়োজন। কারণ একই ব্রাশ দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্যের উপকারের বদলে ক্ষতি হয়। তাহলে কতদিন অন্তর দাঁত মাজার ব্রাশ বদলানো উচিত?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন তিন থেকে চার মাস অন্তর দাঁত মাজার ব্রাশ বদলে ফেলা উচিত। তা সে সাধারণ ব্রাশ হোক বা ইলেকট্রিক ব্রাশ। এছাড়া টুথব্রাশটি যদি ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে এখনই তা বদলে ফেলা উচিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যাদের দাঁতের সমস্যা বা কোনো ধরনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে তাদের এক থেকে দুই মাস অন্তর টুথব্রাশ পরিবর্তন করা উচিত।
দীর্ঘদিন ধরে একই ব্রাশ ব্যবহার করার ফলে দাঁত ও মুখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। দেখে নিন কি সেই সমস্যা?
টুথব্রাশের ব্রিকলস দাঁত পরিষ্কার করতে ও জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে। এখন দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের ফলে ব্রিকলসএ ভঙ্গুরতা দেখা দিতে পারে তার ফলে সেগুলি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। দীর্ঘদিন একই ব্রাশ ব্যবহারের ফলে দাঁতে ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি জন্মাতে পারে। এই জীবাণুর অবাঞ্ছিত বৃদ্ধি মুখের মধ্যে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে একই টুথব্রাশ ব্যবহার করলে তাতে ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু বাড়তে পারে, যা দাঁত ও মাড়ির সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
কিভাবে যত্ন নেবেন টুথব্রাশের?
ব্যক্তিগত পণ্য বা স্বাস্থ্যবিধি সরঞ্জামের যত্ন নেওয়ার মতোই টুথব্রাশের যত্ন নেওয়া উচিত, কারণ দাঁত মাজার ব্রাশের যত্ন নেওয়ার ওপরই তার হাইজিন নির্ভর করে। তাহলে কি করবেন?
অন্য কোনো দাঁত মাজার ব্রাশের সঙ্গে নিজের ব্রাশ রাখা চলবে না। তাহলে অন্য ব্রাশ থেকে জীবাণু ছড়াতে পারে। প্রতিবার ব্রাশ ব্যবহারের আগে তা ধুয়েই ব্যবহার করতে হবে। ঢাকা কোনো বাক্সে বা কৌটোতে ব্রাশ রাখবেন না। অত্যন্ত প্রিয়জনের সঙ্গেও দাঁত মাজার ব্রাশ শেয়ার করা চলবে না। এমনকি ভুল করে কেউ আপনার ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজলে সেটা ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। কারণ প্রত্যেকের মুখে আলাদা ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে। ব্রাশের মধ্যে দিয়ে সেটা আপনার মুখে ছড়িয়ে যেতে পারে। তাতে দাঁতের নানা ক্ষতি হতে পারে। ব্রাশ পরিস্কারের জন্য মাউথ ওয়াশ, সাবান, গরম জল বা অন্য কিছু ব্যবহার করা চলবে না।
অর্থাৎ নিয়মিত ট্রুথব্রাশ না বদলালে নানা ধরনের সংক্রমণ হতে পারে। বিশেষ করে টুথব্রাশে থাকা জীবাণু যতটা মুখের ভেতর কন্ঠনালীর সংক্রমণ ঘটায় তার থেকেও বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে অন্ত্র বা শরীরের অন্যত্র। এমনকি নিয়মিত টুথব্রাশ না বদলালে তা পেটের সমস্যার আশঙ্কাও বাড়াতে পারে।
No comments:
Post a Comment