হোমিওপ্যাথি ঔষধের ছোট্ট শিশির ভেতরে দুর্গা প্রতিমা এঁকে নজির গড়লেন নদিয়ার শিল্পী
নদিয়া: হোমিওপ্যাথি ঔষধের ক্ষুদ্র কাঁচের শিশির ভেতরে তুলির টানে দুর্গা প্রতিমা, ভাবতে পারছেন? হ্যাঁ, এমন অসম্ভবকে সম্ভব করে নজির গড়লেন নদিয়ার তুহিন মণ্ডল। একজন শিল্পীর জীবনে হাজার ঝড়-তুফান বয়ে গেলেও তাঁর অদম্য ইচ্ছে শক্তি একদিন তাঁকে পৌঁছে দেয় সাফল্যের দৌড়গোড়ায়, একথাই প্রমাণ করলেন তুহিন।
সংসারে অভাব-অনটন পিছু না ছাড়লেও সবকিছু উপেক্ষা করেও হোমিওপ্যাথি ঔষধের ছোট্ট কাঁচের শিশির ভেতরে দুর্গা প্রতিমা এঁকে এক অনন্য নজর গড়লেন নদিয়ার চাপড়ার বড় আন্দুলিয়া এলাকার অঙ্কন শিল্পী তুহিন মণ্ডল।
তুহিন জানিয়েছেন এই পেশার সাথে তিনি ২২ বছর ধরে যুক্ত। সংসার চালানোর ক্ষেত্রে অনেক ঝড়-ঝাপট তার মাথার উপর দিয়ে গেছে, কিন্তু তিনি পিছুপা হননি। বাবা আব্দুল মুজিব মণ্ডল একজন অঙ্কন শিল্পী ছিলেন। তাঁর ইচ্ছে ছিল সন্তান বড় হয়ে তাঁর মত একজন শিল্পী হবে। তবে, বাস্তব জীবনে ছেলে যে এত বড় সাফল্য পাবে তা কখনও ভাবতে পারিনি তিনি।
জানা গেছে মাত্র কয়েক মাস আগে পেট দিয়ে রবীন্দ্রনাথের মূর্তি এঁকে সারা বিশ্বের দরবারে পৌঁছে গিয়েছিলেন তুহিন। এরপর বিদেশ থেকে আসে সাফল্যের শংসাপত্র, আর তাতেই তার আগামী দিনের জীবনের প্রতিষ্ঠিত হতে আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন তুহিন।
স্ত্রী নাহারানা খাতুন বলেন, 'প্রতিদিন রাত জেগে শিল্প কলার কাজ করে স্বামী তুহিন, তবে কখনও বিরক্ত হননি তিনি। উপরন্ত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তুহিনের মত একজন স্বামী পেয়ে আমি গর্বিত।'
ছোটমা লুসি মণ্ডল বলেন, তারাও অবাক হয়ে যেতেন তুহিনের এই ধৈর্য দেখে। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ধরে অঙ্কনের কাজ করে তুহিন, আর হোমিওপ্যাথির একটি ক্ষুদ্র শিশির ভেতরে এইভাবে যে দুর্গা প্রতিমা আঁকা যায় তা ভাবতেই পারছেন না তারা।
গর্বের সুরে তুহিন বলেন, 'একটা সময় তার সাংসারিক অস্বচ্ছলতার কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, কিন্তু তার একের পর এক সাফল্যের পরে এখন অনেক পরিবারের কচিকাঁচারা তার কাছে অঙ্কন শিখতে আসে, যা এখন সংখ্যায় প্রায় ৫০০-রও বেশি। তবে লণ্ডনের একটি সংস্থা শংসাপত্র দেওয়ায় জীবনের সবথেকে মূল্যবান জিনিস লাভ করেছে বলে জানিয়েছেন তুহিন মণ্ডল। আগামী দিনে অঙ্কন শিল্পকলার মধ্যে দিয়ে জীবনে আরও প্রতিষ্ঠিত হতে চান তুহিন।
No comments:
Post a Comment