মানত করেন মুসলিম ভক্তরাও, ৫১ সতীপীঠের অন্যতম এই কালীমন্দির - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday 24 October 2023

মানত করেন মুসলিম ভক্তরাও, ৫১ সতীপীঠের অন্যতম এই কালীমন্দির


মুসলিম ভক্তরাও মানত করেন এই হিন্দু মন্দিরে


প্রদীপ ভট্টাচার্য, ২৪শে অক্টোবর, কলকাতা: এই  হিন্দু মন্দিরে মানত করেন মুসলিম ভক্তরাও। ৫১ সতী পীঠের অন্যতম বাংলাদেশের এই কালী মন্দির। জানেন বাংলাদেশের কোথায় অবস্থিত জাগ্রত এই কালী মন্দির? ভক্তদের কাছে কেন এই মন্দির এত গুরুত্বপূর্ণ? 


স্বামীর অপমান সহ্য করতে না পেরে যজ্ঞের আগুনে নিজের প্রাণ ত্যাগ করেছিলেন সতী। তারপরই নিজের স্ত্রীর মৃত্যুতে রাগে, শোকে, অপমানে তার দেহ কাঁধে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য শুরু করেন মহাদেব। সৃষ্টি তখন রসাতলে যাওয়ার জোগাড়। তখন ধ্বংসের হাত থেকে তাকে রক্ষা করতেই, সৃষ্টিকর্তা বিষ্ণু সুদর্শন চক্রের দ্বারা সতীর দেহ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেন। সেই দেহাবশেষ একান্নটি ভাগে ছড়িয়ে পড়ে নানা প্রান্তে।


কথিত আছে দেবীর দেহাবশেষ যেখানে যেখানে পড়েছিল সেখানেই গড়ে উঠেছে এক একটি সতীপীঠ। আজও সেই সতীপীঠ গুলি ভীষণ জাগ্রত বলে বিশ্বাস করেন ভক্তরা। সেই সব জায়গায় পুজো হয় মহা ধুমধামের সঙ্গে। সঙ্গে নিত্য পুজো তো আছেই। সেই রকমই এক সতীপীঠ হল যশোরেশ্বরী কালী মন্দির। জনশ্রুতি বলে, এখানে নাকি মায়ের করকমল পড়েছিল। 


পুরান মতে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামে সতীর হাতের তালু পড়েছিল। বলা হয় বঙ্গদেশের হিন্দু রাজা প্রতাপাদিত্য মানুষের হাতের তালুর আকারে একখণ্ড পাথর পেয়েছিলেন অলৌকিকভাবে। তারপরই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন এই মন্দির। যা নির্মাণ করেছিলেন আনাড়ি নামে এক ব্রাহ্মণ। তিনি এই মন্দিরে ১০০ টি দরজা তৈরি করেন। পরবর্তীকালে মন্দির সংস্কার করেন লক্ষণ সেন ও রাজা প্রতাপাদিত্য। সেই সঙ্গে পাশেই তৈরি করা হয় নাট মন্দির। শোনা যায় সেই সময়ে মায়ের নামে দান করা হয়েছিল প্রায় ২০০ বিঘা জমি।


তবে আজ সবই হারিয়েছে কালের গর্ভে। দাঁড়িয়ে রয়েছে শুধু কয়েকটি স্তম্ভ। মন্দিরের বেদীতে প্রতিষ্ঠিত বিগ্রহে শুধু মুখ দেখা যায়, নজরে আসেনা গলার নিচের শ্রীহস্ত বা শ্রীচরণ। মূর্তির অবয়ব পুরোটাই মখমলে আবৃত। গলায় রক্ত জবার মালা এবং নানা অলংকার। মাথায় সোনার মুকুট। 


প্রতি শনি ও মঙ্গলবার নিত্য পূজা হয় এ মন্দিরে। এছাড়াও এখানে কালীপুজো হয় বেশ ধুমধাম করে। হয় ছাগ বলী। সমাগম ঘটে হাজার হাজার ভক্তের। এই মন্দিরের দেবী খুবই জাগ্রত বলে বিশ্বাস ভক্তদের। শুধুই হিন্দুরা নয় এখানে মানত করতে আসেন মুসলিম ভক্তরাও। আর মনবাঞ্ছা পূর্ণ হলে মন্দিরের বারান্দা থেকে জোড়া পায়রা উড়িয়ে দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। 


এছাড়াও এই মন্দিরকে নিয়ে রয়েছে আরো অনেক ইতিহাস। শোনা যায় একবার অম্বররাজ মানসিংহ এক পুরোহিতের সাহায্যে মায়ের বিগ্রহ চুরি করে নিয়ে গিয়ে রাজস্থানের অম্বর দুর্গে তা প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু তার কয়েকদিনের মধ্যেই মায়ের রুষ্ট মূর্তি দেখে তাঁকে সুখ্যবতী নদীর তীরে পুন:প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য হন তিনি।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad