তারা মায়ের আবির্ভাব দিবস, তারাপীঠে বিশেষ পুজো-ভক্তদের ঢল
নিজস্ব সংবাদদাতা, বীরভূম, ২৭ অক্টোবর: মা তারার আবির্ভাব দিবস উপলক্ষে সকাল থেকেই ভক্তদের ঢল তারাপীঠে। আজ তারা মায়ের আবির্ভাব দিবস, আজ মাকে বসানো হয় পশ্চিম দিকে মুখ করে। শুক্লা চতুর্দশী তিথিতে শুক্রবার তারাপীঠে তারা মায়ের আবির্ভাব দিবস উপলক্ষে শক্তির আরাধনা। দিনভর বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়েছে।
কথিত আছে, তারা-মায়ের বোন মৌলাক্ষী মা। ঝাড়খণ্ডের মলুটিতে তাঁর অধিষ্ঠান। মানুষের বিশ্বাস, চতুর্দশীতেই দেখা হয় দুই বোনের। কারণ, মলুটির মৌলাক্ষী মা পশ্চিমমুখী, তাই তারা-মাকেও এদিন বসানো হয় পশ্চিম দিকে মুখ করে। সেই উপলক্ষে পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে তারাপীঠে। শুক্রবার ভোরে মূল মন্দির থেকে মায়ের বিগ্রহ বের করে পশ্চিম দিকে মুখ করে বসানো হয় বিশ্রাম মঞ্চে। স্নানপর্ব মেটার পর মাকে সাজানো হয় রাজ-রাজেশ্বরী সাজে। এরপর বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে মঙ্গল আরতি পর্ব। সকালে মঙ্গলারতির পর দেওয়া হয় শীতল ভোগ।
সকালে মঙ্গলারতির পর দেওয়া হয় শীতল ভোগ। এরপর দুপুরে ফল ভোগ। এদিন দুপুরে কোনও অন্নভোগ রান্না হয় না৷ রীতি অনুযায়ী মায়ের আজ উপোস। দিনভর তাই ফল-মিষ্টিই খান মা। মহাভোগ তোলা থাকে রাতের জন্য। মাকে অন্নভোগ দেওয়া হয় না বলে, এদিন মন্দিরের সেবায়েতরাও অন্ন ছোঁন না। দুপুরে তারা-মাকে কোনও অন্নভোগ দেওয়া না হলেও, দুপুর থেকেই শুরু হয় রাতের ভোগের প্রস্তুতি। সন্ধ্যায় বিরামমঞ্চেই করা হয় আরতি ।
সন্ধ্যারতির পর বিগ্রহকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মূল মন্দিরে। স্নান করিয়ে পরানো হয় নতুন সাজ। নতুন করে হয় অভিষেক। আবার শুরু হয় আরতি। রাতে মাকে দেওয়া হয় অন্ন ভোগ, যাকে বলা হয় মহা ভোগ। রাতে মায়ের কাছে অন্নভোগ নিবেদন করার পরই উপবাস ভাঙেন সেবায়েতরা।
কথিত আছে, পাল রাজত্বের সময় স্বপ্নে তারা মায়ের নির্দেশ পেয়ে চতুর্দশীতে শ্মশান থেকে তাঁর মূর্তি এনে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন জয় দত্ত সওদাগর। সেই থেকে প্রতিবছর শারদ উত্সবের শেষে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয় তারাপীঠে।
No comments:
Post a Comment