কেমন আছেন সন্ধ্যা রায়? বয়সের ভারে জীর্ণ অভিনেত্রীর কীভাবে কাটছে দিন
প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ৪ অক্টোবর: বাংলা সিনেমা জগতের একজন স্বনামধন্য অভিনেত্রী হলেন সন্ধ্যা রায়। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে টলিউডে দাপটের সাথে অভিনয় করেছেন তিনি। বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায় থেকে শুরু করে তখন সিনহা অঞ্জন চৌধুরী কিংবা স্বামী তরুন মজুমদারের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ অভিনেত্রীর অভিনয়ের ঝুলি। কিন্তু জানেন কি এখন একাকীত্বে ভোগেন অভিনেত্রী। জেনে নিন তার কারণ।
১৯৪১ সালের নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু মাত্র ৭ বছর বয়সেই পিতৃহারা হয়েছিলেন সন্ধ্যা রায়। আর তার দু’বছর যেতেই মাকে হারিয়ে জগতে অভিভাবকহীন হয়ে পরেন তিনি। জানা যায় এরপর তিনি চলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে মামার বাড়িতে। আর সেখানেই বস্তির মেয়েদের সঙ্গে মামলার ফলে সিনেমায় শুটিং দেখতে গিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় বাপ-মা মরা মেয়েটার।
ভিড়ের মধ্যেই তিনি নজরে পরে গিয়েছিলেন পরিচালক পশুপতিনাথ চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি তাকে ভিড়ের একটি দৃশ্যে অভিনয় করার সুযোগ দিয়েছিলেন। আর এই সিনেমায় অসামান্য অভিনয়ের জন্য দর্শক মনে তিনি পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নেন। শুধু তাই নয়, সন্ধ্যা রায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন বেশ কিছু হিন্দি সিনেমাতেও। সেই তালিকায় রয়েছে পূজা কি ফুল, আসলি নকলি, অপরিচিত ইত্যাদি।
প্রসঙ্গত সিনেমার অভিনয়ের সূত্রেই পরিচালক তরুণ মজুমদারের সঙ্গে প্রেম হয় সন্ধ্যা রায়ের। পরবর্তীতে ১৯৬৭ সালে বিয়েও করেছিলেন তারা । কিন্তু সেই বিয়েও স্থায়ী হয়নি। পরবর্তীতে পরিচালক তরুণ মজুমদারের সঙ্গে নাম জড়ায় মহাশ্বেতা রায় নামে এক উড়িয়া অভিনেত্রীর। এরপরেই ফাটল ধরে তরুণ মজুমদার এবং সন্ধ্যা রায়ের সংসারে।
আইনি বিচ্ছেদ না হলেও ছাদ আলাদা হয়ে যায় তাদের। প্রসঙ্গত গত বছরেই প্রয়াত হয়েছেন তরুণ মজুমদার। কিন্তু আজও অভিনেত্রী তার স্বামী হিসেবে তরুন মজুমদারকেই মানেন। এমনকি আর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দুদিন আগে পর্যন্ত সন্ধ্যা রায়ের খোঁজ নিয়েছিলেন তরুণ মজুমদার।
অন্যদিকে স্বামীর শারীরিক সুস্থতার খবরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছিলেন সন্ধ্যা রায়। অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। কিন্তু দেখতে দেওয়া হয়নি তাকে। এরপর ২০২২ সালের ৪ঠা জুলাই ৯১ বছর বয়সে প্রয়াত হন বর্ষীয়ান প্রখ্যাত পরিচালক তরুণ মজুমদার।
তবে স্বামী হারানো বিরাট ধাক্কা ছিল বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়ের কাছে। তরুণ মজুমদারের মৃত্যুর পর মানসিকভাবে ভেঙে পরেন তিনি।তাকে গ্রাস করে একাকীত্ব। মানসিক শূণ্যতাকে সঙ্গী করেই এখন জীবন কাটাচ্ছেন বাংলা সিনেমার এই কিংবদন্তি বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।
No comments:
Post a Comment