মুম্বাই পুলিশের হেফাজত থেকে পালালো অভিযুক্ত বাংলাদেশী মহিলা
নিজস্ব প্রতিবেদন, ০৮ নভেম্বর, কলকাতা: মুম্বাই পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পালালো ভুয়া পাসপোর্ট মামলায় গ্রেফতার এক বাংলাদেশি মহিলা। পুলিশ কর্মীরা ঘুমিয়ে থাকার সুযোগ নিয়েই ওই মহিলা মুম্বাইয়ের পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযুক্ত মহিলার বিরুদ্ধে নতুন করে এফআইআর দায়ের করা হয় হয়েছে, পাশাপাশি তাকে খুঁজে বের করতে নতুন টিমও গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে দেশে প্রবেশ ও বসবাসের অভিযোগে গত ৫ নভেম্বর মুম্বাইয়ের সহার থানা পুলিশ ৩০ বছর বয়সী অভিযুক্ত কবিতা বেগমকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ (প্রতারণা), ৪৬৫ (জালিয়াতি), ৪৬৮ (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি), ৪৭১ (ভুয়া জিনিস ব্যবহার করা) এবং পাসপোর্ট আইনের ১২ (ভুয়া পাসপোর্ট থাকা) ধরার অধীনে মামলার পাশাপাশি, ফরেনার্স আইনের অধীনে ১৪ (এ)(বি) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৬ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৬ টা নাগাদ কবিতা ওয়াশরুমে গিয়েছিলেন, সেই সময় তার নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন ডিউটি অফিসার সাবিত্রী হিরেমথ। অপরদিকে আরেক কনস্টেবল ললিতা কোট মহিলা কনস্টেবলের ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।
এফআইআর'এ বলা হয়েছে 'হিরেমথ হটাৎ করেই লক্ষ্য করেন দীর্ঘক্ষণ সময় পেরিয়ে গেলেও কবিতা আর ওয়াশরুম থেকে ফিরে আসেনি। সাথে সাথেই তিনি ললিতা ও অন্যদের সতর্ক করেন। এরপর থানার সকল সদস্যরাই অভিযুক্ত বাংলাদেশী মহিলার সন্ধান চালান, তবে তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।'
জানা গেছে, সহার পুলিশ থানা ভবনের তৃতীয় তলে রাখা হয়েছিল অভিযুক্ত বাংলাদেশী মহিলা কবিতা বেগমকে। গত ৬ নভেম্বর কবিতা যেদিন পালিয়ে যায়, সে সময় তার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন কনস্টেবল সাবিত্রী হিরেমথ। ওয়াশরুম থেকে বেরিয়েই সিঁড়ি দিয়ে নিচের চলে আসে কবিতা। এরপরই সেখান থেকে গা ঢাকা দেয়। পরে থানার সিসিটিভি ফুটেজেও তার পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে।
পুলিশের অনুমান তাদের কর্মীদের তন্দ্রাচ্ছন্ন হওয়ার সুযোগ নিয়েই শৌচালয়ে যাওয়ার অজুহাতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় কবিতা।
ইতিমধ্যেই পুলিশের হেফাজত থেকে বাংলাদেশী মহিলার পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তাদের জানানো হয়েছে। সোমবার সহার পুলিশ তার বিরুদ্ধে নতুন করে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২২৪ ধারায় (আইন অনুযায়ী গ্রেফতারের পর তার বাধদান ও বিরোধ করা) একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। মুম্বাই পুলিশের ডিসিপি (জোন-৮) দীক্ষিত গেদাম জানিয়েছেন, তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকালীন তদন্তে ব্যাঘাত করতে পারে এমন কোনও তথ্য এক্ষুনি বলা সম্ভব নয়।
জানা গেছে ২০১৫ সালে অবৈধভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে কবিতা। এরপর কলকাতা হয়ে সে পৌঁছে যায় মহারাষ্ট্রের পুনে শহরে। ২০১৬ সালে স্থানীয় এক যুবককে বিয়ে করে এবং ভারতীয় আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড তৈরি করে। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করে ফেলে কবিতা। এই ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়েই ২০১৯, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে তিনবার ঢাকা সফর করেছিল কবিতা বেগম। অভিবাসন দপ্তরের তরফে এমন অভিযোগ পেয়েই তাকে গ্রেফতার করেছিল সহার থানার পুলিশ।
No comments:
Post a Comment