অ্যাসিডিটি ভেবে বুকে ব্যথা অপেক্ষা না করে সময় থাকতে হন সতর্ক!
প্রেসকার্ড নিউজ লাইফ স্টাইল ডেস্ক,১১নভেম্বর:প্রায় প্রত্যেকেই কখনো না কখনো বুকে ব্যথা অনুভব করে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বুকের ব্যথাকে অ্যাসিডিটির সমস্যা মনে করে অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিশ্চিন্ত হয় মানুষ । কিন্তু অনুমানের ওপর ভিত্তি করে বুকের ব্যথার সহজ প্রতিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। হঠাৎ বুকে ব্যথা হলে করণীয় সম্পর্কে আমাদের ধারণা না থাকায় হার্ট অ্যাটাকের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে হয় অনেককেই।
আপনার বুকে যদি কখনো ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে এর কারণ প্রথমে শনাক্ত করতে হবে। হ্যাঁ, কারণ বুকে ব্যথা হওয়ার অসংখ্য কারণ রয়েছে। আর একেক ক্ষেত্রে একেক ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। বিশেষত হৃদরোগের ঝুঁকি বর্তমান সময়ে সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
তাই যদি কখনো বুকে ব্যথা হয় তাহলে অ্যাসিডিটির সমস্যা না ভেবে একটু সময় নিয়ে পর্যবেক্ষণ করুন। সেলফ মেডিকেশনের চর্চা আমাদের দেশে একটু বেশি। বিশেষত কিছু শারীরিক সমস্যা সম্পর্কে আমাদের গৎবাঁধা কিছু ধারণাও রয়েছে। বুকের ব্যথার ক্ষেত্রেও এমনই একটি ধারণা রয়েছে। প্রথমেই বলেছি, অনেকে মনে করেন অ্যাসিডিটির সমস্যার কারণে বুকে ব্যথা হয়। মূলত অ্যাসিডিটির কারণে বুকে প্রদাহজনিত সমস্যা হতে পারে–এমন ধারণা অমূলক নয়। কিন্তু বুকে যদি চিনচিনে ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে অবহেলা করা যাবে না।
বুকে ব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে। কিন্তু বুকে ব্যথার ফলাফল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। কদিন আগে বিশ্ব হৃৎপিণ্ড দিবসে বলা হয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তন আমাদের শরীরে ব্যাপক স্ট্রেস ফেলে বলে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়া, শরীরে অক্সিজেন প্রবাহ কমে যাওয়া ইত্যাদি জটিলতা দেখা দেয়, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
বুকে ব্যথা থেকে হার্ট অ্যাটাকে নিকট অতীতেই গায়ক কেকে মারা গিয়েছিলেন। বুকের ব্যথাকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। অথচ সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে এই ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব।তাই যখনই বুকের ব্যথা অস্বাভাবিক মনে হবে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। যদি আপনি দেরি করেন তাহলে এর ফলাফল আপনাকেই ভুগতে হতে পারে।
বুকে ব্যথার কিছু কিছু কারণ সরাসরি হৃদরোগের ঝুঁকিকে নির্দেশ করে। কি সেসব কারণ? আসুন জেনে নেওয়া যাক:
মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন: হার্টে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়।
মায়োকার্ডাইটিস: হৃদযন্ত্রের পেশিতে প্রদাহ হয়।
পেরিকার্ডাইটিস: হার্টের থলিতে প্রদাহজনিত ব্যথা তীব্র।
করোনারি আর্টারি ডিজিজ: একে এনজাইনাও বলা হয়। হৃদপিণ্ডে রক্তনালীর ব্লকেজের কারণে এমন হয়।
মাইট্রাল ভালভ প্রল্যাপস: হৃদপিণ্ডে অবস্থিত মাইট্রাল ভালভ সঠিকভাবে বন্ধ হয় না।
আবার এও সত্য, বুকে ব্যথা হওয়া মানেই হৃদরোগ নয়। প্রথমেই বলেছি, বুকে ব্যথার একাধিক কারণ রয়েছে। আর চিকিৎসকরা দেখেছেন, বুকে ব্যথা মানেই হৃদরোগ নয়। এজন্য যখনই বুকে ব্যথা হয় তখন আপনার শরীরে কিছু সমস্যা চিহ্নিত করে একটি অনুমান করতে হবে। তারপর চিকিৎসকের কাছে গিয়ে তা খোলাখুলি বলতে হবে।
No comments:
Post a Comment