হবিবপুরে মুসলিম মহিলার হাতে পূজিতা হন 'শেফালি কালী', ১৫ দিন‌ পর হয় বিসর্জন - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, 6 November 2023

হবিবপুরে মুসলিম মহিলার হাতে পূজিতা হন 'শেফালি কালী', ১৫ দিন‌ পর হয় বিসর্জন


 হবিবপুরে মুসলিম মহিলার হাতে পূজিতা হন 'শেফালি কালী', ১৫ দিন‌ পর হয় বিসর্জন 



মালদা: হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির চিত্র ধরা পড়ল মালদার হবিবপুর ব্লকের মধ্যমকেন্দুয়া গ্রামে। এখানে মুসলিম মহিলার হাত ধরেই শুরু হয় কালী পুজো। ওই মহিলার নাম শেফালি বেওয়া, ফলত এটি শেফালি কালী পুজো নামেই পরিচিত। পুজোয় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন গ্ৰামবাসীরাই। 


শেফালি দেবী  নিজেও প্রথমে দেবীর এই স্বপ্নাদেশ পেয়ে হতভম্ব হয়ে যান। এরপর স্বপ্নাদেশের কথা তিনি গ্রামবাসীকে জানালে প্রথমে কেউ বিশ্বাস করেননি। মুসলিম মহিলা হয়ে কালীপুজো করবে! এই কথা গ্রামে ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনার ঝড় ওঠে। তারপর হঠাৎ একদিন এলাকাবাসীর সামনেই শেফালি দেবীর শরীরে ভর করেন স্বয়ং মা কালী। তখনও শেফালিকে পুজো করার আদেশ দেন দেবী। এরপরই শেফালিকে এই পুজো করার সম্মতি দেন এলাকাবাসী। সেই থেকে আজও একইভাবে ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে কালীপুজো করে আসছেন শেফালি বেওয়া ও তাঁর পরিবার। 


কালীপুজোয় সম্প্রীতির অনন্য নজির মধ্যমকেন্দুয়া রেললাইনের পুজো। বছরের পর বছর ধরে মুসলিম মহিলার হাত ধরেই হয়ে আসছে এই কালীপুজো। আর এই পুজোকে ঘিরে হিন্দু, মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই আনন্দে মেতে ওঠেন। সংখ্যালঘু মহিলার মা কালীর প্রতি প্রেমভক্তি সকলকেই আকর্ষণ করে।

     

এবিষয়ে শেফালি বেওয়া জানান, প্রায় ৪৫ বছর আগে তাঁর খুব অসুখ হয়েছিল এবং কোনও চিকিৎসক রোগ ধরতে পারেননি। হঠাৎ তিনি স্বপ্ন দেখেন মা কালীর পুজো করলে তাঁর অসুখ সেরে যাবে। গ্রামবাসীদের এই কথা জানালে তারা প্রথমে বিশ্বাস করতে চাননি। মুসলিম মহিলা কালী পূজা করবে গ্রামবাসীরা এই শুনে অবাক হয়েছিলেন। প্রথমদিকে কালী পুজো করার অনুমতি দিতে চায়নি। কিন্তু যত দিন যায় দেখা যায়, পুজোয় বসে তিনি যা বলতেন, অধিকাংশ সময়ই সেটা লেগে যেত। এমনকি কারও অসুখ করলে পুজোয় বসে শেফালি দেবী নিদান দিতেন এবং সেটা করে রোগী সুস্থ হয়ে যেত। এরপর সকল গ্রামবাসীরা জাত-ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সেই থেকে মায়ের নাম রাখেন 'শেফালি কালী' এবং সেই থেকে আজও এই নামেই এই পুজো পরিচিত। 


গ্রামবাসীরাই মিলিতভাবে রেললাইনের ধারে মা কালীর একটি বেদি করে দিয়েছেন। সেখানে নিত্যপুজো হয়। আর এই কালী পুজোর দিন মূর্তি পুজো করা হয়। টানা ১৫ দিন ধরে এই পুজো চলে। তারপর সামনের পুকুরে মূর্তি বিসর্জন করা হয়। শেফালির নাম থেকে এই পুজোর নাম হয়ে গিয়েছে "শেফালি কালী" পুজো। এই পুজোতে যে যা মনষ্কমনা করেন তাই কালী মা পূরণ করেন। মায়ের ভক্তরা বহু দূর-দূরান্ত থেকে আসেন এবং বহু অলংকার দিয়ে থাকেন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad