কালী দৌড়! ৩৫০ বছরের রীতি আজও অটুট চাঁচলে - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, 14 November 2023

কালী দৌড়! ৩৫০ বছরের রীতি আজও অটুট চাঁচলে

 


কালী দৌড়! ৩৫০ বছরের রীতি আজও অটুট চাঁচলে



নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৪ নভেম্বর: দৌড় প্রতিযোগিতা। তবে, মাথায় করে মা কালীর প্রতিমা নিয়ে। অভিনব এই 'কালী দৌড়'-এর আয়োজনের ইতিহাস সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো। মালদার  চাঁচলে আজও মা’কে বিসর্জন দেওয়া হয় মাথায় করে দৌড়ে নিয়ে গিয়ে। উদ্যোক্তারা নিজেদের পূজিত কালী মায়ের প্রতিমা মাথায় করে নিয়ে দৌড় লাগান ঘাটের দিকে। প্রতিযোগিতা দর্শনে ভিড় উপচে পড়ে এলাকায়।


রাজার প্রচলিত রীতি মেনে মালদার চাঁচলের মালতীপুরে আয়োজিত হয় ঐতিহ্যবাহী কালী দৌড় প্রতিযোগিতা। মালাতিপুর এলাকার আটটি কালী প্রতিমাকে কাঁধে নিয়ে ছোটেন এলাকাবাসী। কালী দৌড় প্রতিযোগিতাকে ঘিরে রচিত হয় সম্প্রীতির এক আশ্চর্য আবহ। তবে, এগ রীতির পিছনে লুকিয়ে আছে এক আশ্চর্য ইতিহাস। 


জানা যায়,আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে, মালদার চাঁচলের তৎকালীন রাজা শরৎচন্দ্র রায় চৌধুরী চালু করেছিলেন এই কালী দৌড় প্রতিযোগিতা। কিন্তু কেন এই কালী দৌড়? কালী দৌড়কে ঘিরে রয়েছে এক আশ্চর্য কাহিনী। জানা যায়, সেই সময় মালদার মালতীপুর  এলাকায় পুকুরের সংখ্যা ছিল মাত্র একটি। মালতিপুর কালীবাড়ী লাগোয়া পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হত একাধিক কালী প্রতিমা। সেই সময় চাঁচলের রাজা শরৎচন্দ্র রায় বাহাদুর সুষ্ঠুভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন প্রক্রিয়ার জন্য শুরু করেছিলেন এক প্রতিযোগিতা। দীপান্বিতা অমাবস্যা অর্থাৎ কালী পুজোর পরের দিন সন্ধ্যার সময় মালতিপুর বাজারে একটি কালী দৌড় প্রতিযোগিতার (কালী প্রতিমা হাতে দৌড়) আয়োজন করেন তিনি। এই প্রতিযোগিতার নিয়ম ছিল এই কালী দৌড়ে যার কালী প্রতিমা অক্ষুন্ন থাকবে, সেই প্রতিমাকেই প্রথম বিসর্জন দেওয়া হবে কালী দিঘিতে। সেই দৌড়ের রীতি চলে আসছে।


বর্তমানে নেই রাজা, নেই তার রাজবৈভব। কিন্তু রাজার প্রচলিত রীতিনীতি আজও অব্যাহত মালতিপুরে।মালতীপুরে সোমবার আয়োজিত হল এই ঐতিহ্যবাহী কালী দৌড় প্রতিযোগিতা। মালতিপুর এলাকার মোট আটটি কালীর দৌড় হয়েছে। এদের মধ্যে ছিলেন বুড়ি কালী, চুনকা কালী, বাজারপাড়া কালী, আম কালী, হ্যান্টা কালী, হাট কালী ও শ্যামা কালী। পুজো কমিটি ও এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে কালী প্রতিমাকে কাঁধে নিয়ে ছুটলেন ঘাটের দিকে। মালতিপুর বাজার এলাকা পরিক্রমা করে কালীকে নিয়ে আসা হয় মালতীপুর কালীবাড়ি লাগোয়া কালী দীঘিতে। আর এই প্রতিযোগিতার আবহ উপভোগ করতে ভিড় জমিয়েছিলেন দূরদুরান্ত এলাকার থেকে আসা মানুষজন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad