জড়-বস্তু বা পশুপাখিরাই যাদের জীবনসঙ্গী! কেউ বিয়ে করেছেন বালিশ, কেউ বা ডলফিন
প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ০৯ নভেম্বর: পশুপাখি বা জড় বস্তুদের সঙ্গে তাদের সংসার। কেউ বা বিয়ে করেছেন সাপকে, আবার কারও বিয়ে হয়েছে বালিশের সঙ্গে। কিন্তু কেন এমন কাণ্ড ঘটালেন তারা? কীভাবেই বা এল ওই চিন্তা তাদের মাথায়?
বিয়ে মানেই আমরা বুঝি নারী-পুরুষের এক হওয়াকে। তবে, সাধারণত নারী-পুরুষের বিয়ে হলেও অনেকেই এই প্রথা ভেঙেছেন, তাও আবার জড় বস্তু কিংবা পশুকে বিয়ে করে এবং তাদেরই জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দিচ্ছেন। হয়তো মানুষের সঙ্গে জীবন কাটানোর ইচ্ছেটাই তাদের নেই। এজন্যই কেউ পছন্দের গাছ বা কম্বলের সাথে সংসার শুরু করেছেন। এক মহিলা তো আইফেল টাওয়ারকেই স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছেন। এদিকে আমাদেরই দেশে অর্থাৎ ভারতে এক ব্যক্তি গাঁটছড়া বেঁধেছেন গোখরোর সঙ্গে। সেই বিয়েতে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। রীতিমতো পুরোহিত ডেকে, আধ ঘন্টা ধরে বসে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়।
প্রায় ২০ বছর আগে প্রথম বিয়ে করেন অ্যামোন্ডা রজার্স নামে এক মহিলা। তারপর কয়েক মাসের মধ্যেই স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর কুড়িটি বছর কাটিয়েছেন প্রিয় পোষা কুকুরের সঙ্গে। একজন উপযুক্ত স্বামীর সমস্ত গুণ পোষা প্রাণীটির মধ্যে খুঁজে পেয়ে শেষমেষ বিয়েই করে বসেন পোষা কুকুরটিকে। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রিটেনের দক্ষিণ লণ্ডনে। আর পাঁচটা সাধারণ বিয়ের মতোই তিনিও তার বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। তৈরি করিয়েছিলেন আলাদা বিয়ের পোশাক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন ২০০ অতিথি। এমনকি উপস্থিত সকলেই নবদম্পতির ওপর কাগজের ফুলও ছেটান।
১৯৭৯ সালে কিছু সংখ্যক অতিথির সামনে বার্লিন ওয়ালকে বিয়ে করেন ইসারিত্তার বার্লিনার নামের এক মহিলা। কোরিয়ার এক ভদ্রলোক বিশেষ এক ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিয়ে করেছেন তার ব্যবহৃত বড় কোলবালিশকে, যেখানে একটা মেয়ের ছবি আঁকা। একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি তাঁর প্রিয় বালিশটাকে বিয়ের পোশাকে সাজিয়ে, রীতিমতো ধর্মযাজক পর্যন্ত ডেকে নিয়ে বিয়ে করেন।
এখানেই শেষ নয়, মার্কিন এক যুবক তার ল্যাপটপ-কম্পিউটার-কেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে তার এই বিচিত্র বিয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় আদালত। কারণ মানুষের সঙ্গে যন্ত্রের বিয়ের যে কোনও আইন নেই। ল্যাপটপকে জীবনসঙ্গী করতে অবশ্য সেই যুবক আদালতের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও নেমেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের এক অঙ্গরাজ্যের আদালতে নিজের ল্যাপটপ-ম্যাকবুকটিকে বিয়ে করার অধিকার চেয়ে তিনি ৫০ পৃষ্ঠার একটি আবেদন করেছিলেন। নিজেরই আবেদনে আদালতের কাছে তিনি যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে, তিনি সবসময় এই ল্যাপটপটিকে নিয়ে ঘোরাফেরা করেন, এমনকি ঘুমাতেও চান। আদালতের কাছে ক্রিস আরও যুক্তি দেখান, যেহেতু রাজ্যে অন্যান্য লিঙ্গের বিয়েতে কোনও বাধা নেই, সেহেতু কেউ যন্ত্রকে বিয়ে করতে চাইলে তাতে বাঁধা দেওয়া ঠিক নয়। তাই এই বিষয়ে বিবেচনা করে যেন তাকে বিয়ের লাইসেন্স দেওয়া হয়। ল্যাপটপকে বিয়ের সিদ্ধান্ত শুধু এই যুবকই নয়, এর আগেও অনেক নারী-পুরুষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
বিখ্যাত ডিজাইনার কার্ল লেগারফিল্ড এক বিড়ালকে বিয়ে করেছিলেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৭৭ বছর এবং বিড়ালটির ২২ মাস। ২০১৩ সালে তিনি তাঁর পোষা বিড়ালটিকে বিয়ে করেন। ২০১৯ সালে লেগারফিল্ড শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার পর থেকে বিড়ালটি তাঁর এক পরিচারিকার কাছে আছে। লেগারফিল্ড তাঁর বিড়াল-স্ত্রীর নামে লিখে দিয়ে গেছেন ১.৫ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি।
২০০৬ সালে সুডানের এক ব্যক্তি বিয়ে করেন একটি ছাগলকে। যৌতুক হিসেবে ১৫ হাজার সুদানি দিনারও দিয়েছিলেন ছাগলের মালিককে। শ্যারন ট্রেনলার নামে এক কোটিপতি মহিলা ডলফিনের প্রেমে পড়েন এবং ১৫ বছর প্রেমের পর সিন্ডি নামের ডলফিনের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন।
No comments:
Post a Comment