পাখিদের জন্য ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা ৯০০ পরিবারের! ২২ বছর ধরে আতশবাজি-হীন দীপাবলি পালন
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৩ নভেম্বর: দেশজুড়ে ব্যাপক আড়ম্বরে পালিত হল দীপাবলি। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দিল্লী সহ বিভিন্ন শহরে প্রচুর আতশবাজি দেখা গেছে। কিন্তু জানলে অবাক হয়ে যাবেন কিছু মানুষ শুধুমাত্র পাখিদের জন্য আতশবাজি এড়িয়ে গেছেন। এমনকি গত ২২ বছর ধরে তাঁরা দীপাবলিতে একটি পটকাও ফাটাননি। এই সংখ্যা ১ বা ২ নয়, প্রায় ৯০০ পরিবার, যারা তামিলনাড়ুর ইরোড জেলার ৭টি গ্রামে বাস করে। এই মানুষেরা দীপাবলিতে পূজা করেন, মিষ্টি বিতরণ করেন, দীপ জ্বালান কিন্তু পটকা ফাটাননি। আসুন জেনে নিই এর কারণ।
এই লোকেরা তামিলনাড়ুর ইরোড জেলায় থাকেন। তাদের ৭টি গ্রাম ইরোড থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ভেলোড বার্ড স্যাঙ্কচুয়ারির আশেপাশে। আতশবাজির শব্দে পাখিরা যেন ভয় না পায় এবং ভেলোদ বার্ড স্যাকচুয়ারি ছেড়ে চলে না যায়, সেদিকে গ্রামবাসীরা খেয়াল রাখেন, দীপাবলিতে একটি পটকাও তাঁরা জ্বালাননি।
উল্লেখ্য, ভেলোদ বার্ড স্যাঙ্কচুয়ারিতে স্থানীয় ও পরিযায়ী প্রজাতির হাজার হাজার পাখি রয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে আসা পাখিরাও এখানে বাসা বাঁধে। অক্টোবর ও জানুয়ারি মাসে এখানে ডিম পাড়ে। এ সময় ডিম ফুটানোর কাজও করা হয়। এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে, বার্ড স্যাঙ্কচুয়ারির আশেপাশের গ্রামবাসীরা দীপাবলিতে আতশবাজি এড়িয়ে চলেন।
ভেলোদ বার্ড স্যাঙ্কচুয়ারির আশেপাশের গ্রামে প্রায় ৯০০ পরিবার বাস করে। এই সমস্ত লোকেরা সিদ্ধান্ত নেন যে, কেউ পটকা ফাটাবে না যাতে পাখিরা ভয় না পায় এবং এই জায়গাটি ছেড়ে না যায়। বলা হয় যে গত ২২ বছর ধরে প্রতি দীপাবলিতে এটাই হয়ে আসছেন।
পাখিদের কারণে ইরোডের এই গ্রামগুলিতে দীপাবলি যে নিস্তেজ থাকে, তা নয়। গ্রামবাসীরা খুব আড়ম্বরে দীপাবলি উদযাপন করেন। তাঁরা দীপাবলির জন্য নতুন জামাকাপড় কেনেন। গ্রামের সব ঐতিহ্য মেনে চলেন। শিশুরা যদি রাজি না হয়, তাদের কেবল ফুলঝুরি পোড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়। তবে কেউ যেন পটকা না ফাটায় সেদিকে সবাই খেয়াল রাখেন।
প্রতিবারের মতো এ বছরও ইরোডের এই ৭টি গ্রাম আতশবাজি না পোড়ানোর তাদের ভীষ্মের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেননি। এ কারণে ভেলোদ বার্ড স্যাঙ্কচুয়ারির পাখিরাও নিরাপদ। শনিবার ও রবিবার এখানে পটকা পোড়ানোর কোনও ঘটনা ঘটেনি।
No comments:
Post a Comment