পালিয়ে আসা প্রেমিক- প্রেমিকাদের জন্য বিয়ের দোকান! কোথায় আছে জানেন?
প্রদীপ ভট্টাচার্য , ৭ই নভেম্বর, কলকাতা: পালিয়ে আসা প্রেমিক-প্রেমিকাদের বিয়ে দেওয়ার জন্য গড়ে উঠেছে দোকান। এইসব দোকানে তাদের জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন করে বিয়ে দেওয়া হয়। এর জন্য ভাড়া পাওয়া যায় বিয়ের সাজ ও গহনা। বিয়ের দোকানে কনের সাজের জন্য মেকাপ ম্যান, ছবি তোলার জন্য ফটোগ্রাফার এবং বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের জন্য আইনজীবী রেডি করে রাখা আছে। নিজের পছন্দমতো সেজে তাদের ইচ্ছেমতো ছবি তুলতে পারেন প্রেমিকযুগলেরা। বিয়ের আইনি সব রকম কার্যাবলী নিষ্পন্ন করা হয় দুদিনের মধ্যে। এইরকম দোকান রয়েছে হরিয়ানা রাজ্যে।
পুরো প্রক্রিয়ার জন্য এখানে রয়েছে বিভিন্ন মূল্যের প্যাকেজ। ৫১০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৬ হাজার টাকার মধ্যে এতসব কাজ সেরে ফেলতে পারবেন যে কেউ। এখানকার দোকানগুলোতে বিয়ের সব সামগ্রী রেডি থাকে সব সময়। চাওয়া মাত্রই সবকিছুই মুহুর্তের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হয়। এইসব সারি সারি দোকান গুলো গড়ে উঠেছে হরিয়ানার মাতা মনসা দেবী মন্দিরের রাস্তার সামনে। এদের কাজই হল পালিয়ে আসা প্রেমিক-প্রেমিকাদের বিয়ে সম্পন্ন করিয়ে দেওয়া।
অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ভালবাসা পরিণতি পাওয়ার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবার। যার কারণে ভালোবাসার মানুষের সাথে ঘর বাধা তাদের অধরাই থেকে যায়। তার ওপর আবার জাত পাত ও গোত্রের দাপট তো আছেই। এইসব বাধা উপেক্ষা করার জন্য অনেকেই পালিয়ে বিয়ে করেন। ম্যারেজ রেজিস্ট্রার এর অফিস কিংবা মন্দির যেকোনো একটিতে গেলেই এই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা যায়।
কিন্তু এভাবে বিয়ের পরিপূর্ণ স্বাদটা মেটানো যায় না। বিয়ে মানে বধু বেশে বা বর বেশে ভালোবাসার মানুষটির সাথে দাঁড়ানো, সাত পাকে বাঁধা এবং চোখে চোখ রেখে শুভদৃষ্টি হওয়া। এগুলো জীবনের এক স্মরণীয় স্মৃতি হয়ে থাকে। কিন্তু পালিয়ে বিয়ে করতে আসা জুটিদের বেলায় এমনটা হয় না, সেখানে অসম্পূর্ণ থেকে যায় অনেক কিছুই। এছাড়া পালিয়ে মন্দিরে এসে বিয়ে করলে ধর্মীয় প্রথা অনুসারে দিয়ে সম্পন্ন হয় ঠিকই কিন্তু এ ক্ষেত্রে আইন রক্ষা হয় না।
আর এইসব সমস্যার সমাধান দিতেই ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পঞ্চকুলায় তৈরি হয়েছে বিয়ের দোকান। এই বিয়ের দোকানগুলো তৈরি হওয়ার পর থেকে এখনও এখানে অসংখ্য বিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে একজন দোকানী জানান, এখানে প্রতি মাসে প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি বা কোনও কোনও সময় তারও বেশি বিয়ে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। পালিয়ে আসা প্রেমিক যুগলদের বিয়ের জন্য প্রথমে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় মন্দিরে। সেখানে আশীর্বাদ গ্রহণ করে নতুন জীবনের পথে পা বাড়ান নব দম্পতিরা। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর বিয়ের গহনা ও পোশাক ফেরত দিয়ে দিতে হয়। তবে জিনিসপত্র ফেরত দিলেও মনের মত বিয়ে সম্পন্ন করার স্মৃতি থেকে যায় আজীবন।
No comments:
Post a Comment