উত্তরকাশীতে সূর্যোদয়, সুড়ঙ্গ থেকে বের করা হল ৪১ শ্রমিককে
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৮ নভেম্বর: উত্তরকাশীতে সূর্যোদয়। ১৭ দিনের মাথায় অবশেষে একে একে বেরিয়ে আসছেন সিল্কিয়ার টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকরা। মঙ্গলবারের রাত তাদের জন্য জীবনের নতুন আলো বয়ে আনল। সুড়ঙ্গ থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে শ্রমিকদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উদ্ধার অভিযানের সাফল্যের পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে শ্রমিকদের পরিবার, উদ্ধারকারী দল ও প্রশাসন। বর্তমানে এক এক করে শ্রমিকদের বের করে আনা হচ্ছে। খবর লেখা পর্যন্ত সকল শ্রমিককেই বের করা হয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বিজয় হোরোকে প্রথমে বের করে আনা হয়। আরেক শ্রমিক গণপতি হোরোকেও সুড়ঙ্গ থেকে বের করে আনা হয়েছে। এসময় মুখ্যমন্ত্রী তাকে শাল দিয়ে স্বাগত জানান। সকলের নাম এই মুহূর্তে জানা না গেলেও মনজিৎ, অনিল, ধীরেন্দ্র নায়ক, উনাধর নায়ক, তপন মণ্ডল, রাম প্রসাদ, চম্পা উরাও, জয় প্রকাশ, সুখরামকে বের করা হয়েছে বলে খবর। এছাড়াও রঞ্জিত লোহার, মহাদেব নায়ক, জয়দেব ভাইরা, সোখিম মান্না, সঞ্জয়, রাজেন্দ্রও সুড়ঙ্গ থেকে বের করে নেওয়া শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন। বের করে আনা হয়েছে রামসুন্দর, সুবোধ কুমার ভার্মা, বিশ্বজিৎ ভার্মাকেও।
ধ্বংসাবশেষ খনন করে এবং ড্রিলিং মেশিনের সাহায্যে একটি টানেল তৈরি করে এই শ্রমিকদের বের করা হয়েছিল, যাতে ৮০০ মিমি পাইপ ঢোকানো হয়েছিল। এসব পাইপ দিয়ে একে একে শ্রমিকদের হামাগুড়ি দিয়ে বের করা হয়। যেসব শ্রমিক দুর্বল ছিলেন বা কোনও কারণে হামাগুড়ি দিতে পারছে না তাদের জন্য চাকা সহ একটি স্ট্রেচার তৈরি করা হয়েছিল। এই শ্রমিকদের স্ট্রেচারে শুইয়ে দড়ি দিয়ে টেনে বের করা হয়।
শ্রমিকরা টানেল থেকে বেরিয়ে আসার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখানে ৪১টি অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকদের একটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। টানেল থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রাথমিক পরীক্ষার জন্য টানেলের বাইরে অস্থায়ী পরীক্ষা করা হয়েছে। এই শ্রমিকদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এখানে একটি হেলিকপ্টারও রাখা হয়েছে, যাতে প্রয়োজনে তাকে দ্রুত বড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়।
শ্রমিকদের পরিচর্যার জন্য চিনিয়ালিসাউরের কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে ৪১ শয্যার একটি হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে, যেখানে এই শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া হয়। গোটা দেশ ও বিশ্বের নজর ছিল এই উদ্ধার অভিযানের দিকে। প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজে এই অপারেশনের ঝপর নজর রাখছিলেন এবং উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির কাছ থেকে ক্রমাগত আপডেট নিচ্ছিলেন।
১২ই নভেম্বর, দীপাবলির দিন, উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা টানেলে আচমকা তলিয়ে যায়, যাতে ৪১ জন শ্রমিক সুড়ঙ্গেই আটকা পড়েন। গত কয়েকদিন দিন ধরে এই শ্রমিকদের উদ্ধারে অব্যাহতভাবে যুদ্ধাভিযান চলছিল। অনেক সময় এতে কিছু প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়, যার কারণে উদ্ধারকাজে বিলম্ব হলেও সে সব বাধা দূর হয়ে অবশেষে আজ তাতে সফলতা পেয়েছে প্রশাসন।
No comments:
Post a Comment