তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলের দাদাগিরি! প্রতিবেশী আইনজীবীর বাড়িতে দলবল নিয়ে চড়াও, সদ্য প্রসূতিকে মারধর

তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলের দাদাগিরি! প্রতিবেশী আইনজীবীর বাড়িতে দলবল নিয়ে চড়াও, সদ্য প্রসূতিকে মারধর 

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৪ ডিসেম্বর: প্রতিবেশী আইনজীবীর বাড়িতে দলবল নিয়ে ঢুকে হামলা ও সদ্য প্রসূতিকে মারধর করার অভিযোগ তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলের বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল সেই ভিডিও। 'বাবার ক্ষমতার অপব্যবহার', কটাক্ষ বিজেপির। সাফাই তৃণমূলের, তদন্তে পুলিশ। ঘটনা পুরাতন মালদার।

তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলের দাদাগিরি, প্রতিবেশী আইনজীবীর বাড়িতে ঢুকে সদ্য প্রসূতিকে মারধর ও ভাঙচুর করার অভিযোগ। আর সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া ভাইরাল হতেই তুমুল শোরগোল মালদা জেলা জুড়ে। যদিও ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি প্রেসকার্ড নিউজ। বাবার ক্ষমতার অপব্যবহার করে এলাকায় দলবল নিয়ে হামলা করার অভিযোগে নাম জড়াল মালদার পুরাতন মালদা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বশিষ্ট্য ত্রিবেদীর ছেলে সুতিম ত্রিবেদীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা, সাফাই তৃণমূলের। তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানৌউত্তর। 

ঘটনার প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ৯ তারিখ রাত বারোটা নাগাদ পুরাতন মালদা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পেশায় আইনজীবী অমরেশ দত্তের ছোট ছেলে অভিষেক দত্তের জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। সেই জন্মদিন অনুষ্ঠানে বড় ছেলে অর্কপ্রভ দত্ত ও তাঁর স্ত্রী এবং অন্যান্য আত্মীয়রা আসেন। অভিযোগ, হঠাৎ অতর্কিতভাবে তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলে সুতিম ত্রিবেদী দলবল নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়। আর এই নিয়ে শুরু হয় দু'পক্ষের মধ্যে বচসা। বাড়িতে থাকা সমস্ত খাবার ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। 

আরও অভিযোগ, পরবর্তীতে অর্কপ্রভ দত্ত তার স্ত্রী মৌসুমী মণ্ডলকে বাবার বাড়িতে রেখে আসলে, সেখানে গিয়ে রাত ১ টা নাগাদ প্রথমে পেটে লাথি ও চুলের মুঠি ধরে তার স্ত্রীকে মারধর করা হয়। আর এই গোটা ঘটনা নিয়ে মালদা থানার দ্বারস্থ হয়েছেন আইনজীবীর পরিবার এবং অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে মালদা থানার পুলিশ।

   

এদিকে এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর বশিষ্ট্য ত্রিবেদীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কিছুই বলতে চাননি। মৌখিকভাবে সাফাই দিয়েছেন, 'মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে আমার ছেলের বিরুদ্ধে। এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। ওইদিন রাতে সেখানে একজন পুরসভার অস্থায়ী কর্মী মারা গিয়েছিলেন সে কারণে গোটা এলাকা শোকস্তব্ধ ছিল। যারা অভিযোগ করছেন তারাই মাইক বাজিয়ে সেখানে পার্টি করছিল আর তাতেই স্থানীয়রা বাধা দিতে যায় এবং গন্ডগোল হয়। এখন আমার ছেলের বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করছে, অভিযোগ যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে আইন আইনের পথে চলবে।'

     

এই ঘটনার কড়া ভাষায় নিন্দা করেছে মালদা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক গোপাল চন্দ্র সাহা। তিনি বলেন, 'ঘটনাটা শুনেছি। অনুষ্ঠানে কে কাকে ডাকবে, সে তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেখানে গিয়ে তৃণমূলের কাউন্সিলরের ছেলের এই সমস্ত করাটা ঠিক হয়নি। তৃণমূলের এটাই কালচার সারা রাজ্য জুড়ে চলছে। অভিযোগ হয়েছে পুলিশ তদন্ত করবে এবং যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।'

এদিকে পাল্টা সাফাই জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি শুভময় বসুর। তাঁর কথায়, 'ঘটনাটি শুনেছি আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত দলগতভাবে বিষয়টি আসেনি। তবে প্রশাসনিক যদি কোনও অভিযোগ হয়ে থাকে। তাহলে দলের যে কোনও স্তরের নেতা-কর্মী যাই হোক না কেন, প্রশাসন সঠিক ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।'