শরীরে প্রতিদিন তৈরি হয় নতুন রক্ত - কোথায়,কিভাবে জেনে নিন
প্রেসকার্ড নিউজ,হেল্থ ডেস্ক,২৬ ডিসেম্বর: আপনি নিশ্চয়ই ডাক্তারদের বলতে শুনেছেন যে শরীরে প্রতিদিন নতুন রক্ত তৈরি হয়,তাই রক্ত দান করতে হয়।এটি কোনও দুর্বলতা নিয়ে আসে না।কারণ রক্ত সবসময় উৎপন্ন হয়।তা সত্ত্বেও অনেকেই রক্ত দেন না।আপনার মনে একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আসতেই পারে যে প্রতিদিন যখন শরীরে রক্ত তৈরি হয়,তখন পুরনো রক্ত যায় কোথায়?কারণ একটানা রক্ত তৈরি হলে শরীরে রক্তের পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে যাবে।এমন অবস্থায় কোথাও না কোথাও রক্ত খরচ করতে হবে,না হলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।আসুন জেনে নেই এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর।
রক্তকে আমাদের শরীরের নদী বলা হয়।কারণ এটি ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না।এটি শরীরের ক্ষুদ্রতম অংশেও পৌঁছায়,তবেই সমস্ত অঙ্গ সক্রিয় থাকে।এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে শরীরে রক্ত তৈরি হয়।যখনই আমরা কিছু খাই বা পান করি তখন আমাদের শরীর এই খাবার শোষণ করে হাড়ে পৌঁছে যায়।এখান থেকেই শুরু হয় রক্ত তৈরির কাজ। হাড়ের মধ্যে লাল অস্থি মজ্জা ভরা থাকে,এটি লাল রক্তকণিকা তৈরি করে।অস্থি মজ্জার ভিতরে সমস্ত রক্তকণিকা স্টেম সেল নামে এক ধরণের বিশেষ কোষ থেকে তৈরি হয়।যখন একটি স্টেম সেল বিভাজিত হয়,এটি প্রথমে একটি অনুন্নত লোহিত রক্তকণিকা,শ্বেত রক্তকণিকা বা প্লেটলেট উৎপাদনকারী কোষে পরিণত হয়।
আমাদের শরীরে উপস্থিত রক্তের ৬০% হল প্লাজমা,যা হলুদ রঙের তরল।অবশিষ্ট অংশ লোহিত রক্ত কণিকা,শ্বেত রক্তকণিকা এবং প্লেটলেট নিয়ে গঠিত।লোহিত রক্ত কণিকার (RBC) সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ।এটি হিমোগ্লোবিনের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন পরিবহন করে।এগুলো না থাকলে অঙ্গগুলো কাজ করা বন্ধ করে দেয়।শ্বেত রক্তকণিকা (WBC) মাত্র ৪ দিন বেঁচে থাকে এবং তারপর ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর নতুন করে তৈরি করা হয়।এগুলো ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।এরপরে প্লেটলেটগুলি কার্যকর হয়। তাদের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ।তারা ৭ দিন বেঁচে থাকে।আহত হলে তারা রক্তে জমাট বাঁধে।প্লেটলেট কম হলে শরীর দুর্বল হতে শুরু করে।
এখন মূল প্রশ্নের উত্তর।শরীর প্রতিদিন নতুন রক্ত তৈরি করে, কিন্তু পুরানো রক্ত নষ্ট হতে থাকে যাতে সতেজতা থাকে।দুটি উপায়ে রক্ত নষ্ট হয়ে যায়।প্রথমত,পুরানো রক্ত প্রধানত প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে।দ্বিতীয়ত,পুরানো রক্ত শরীরের বিভিন্ন অংশে স্থানান্তরিত হয় এবং সেখানে নতুন রক্ত তৈরি হয়।এই রক্ত প্রবাহ বেশিরভাগই শরীরের সংবহনতন্ত্রের মাধ্যমে ঘটে,যার মধ্যে রয়েছে হৃদয়,ধমনী এবং শিরা।এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরে পুরনো রক্ত নষ্ট হয়ে নতুন রক্ত তৈরি হতে থাকে।এই প্রক্রিয়াটিও সতেজতা বজায় রাখে। কারও শরীর থেকে ১\২ লিটার রক্ত বের হলে তা তৈরি হতে বেশি সময় লাগে না।তিনি ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন।তবে এটা নির্ভর করে ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস এবং তার শরীরের ওপর।
No comments:
Post a Comment