রাজ্য পুলিশের নতুন ডিজি রাজীব কুমার! মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদন, ২৭ ডিসেম্বর, কলকাতা : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য পুলিশের নতুন মহাপরিচালক অর্থাৎ ডিজিপি হিসাবে আইপিএস রাজীব কুমারের নাম অনুমোদন করেছেন। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজীব কুমার একবার কলকাতা পুলিশের কমিশনার ছিলেন। তাকে নিয়ে বিতর্কও কমেনি। চিটফান্ড মামলায় আইপিএস অফিসার রাজীব কুমারের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। এখন একই রাজীব কুমারকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নতুন ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ হিসাবে নিযুক্ত করেছেন, যদিও তিনি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত ডিজি হিসাবে কাজ করবেন।
সাম্প্রতিক সূত্র অনুসারে, নতুন ডিজিপির জন্য ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন অর্থাৎ ইউপিএসসি-তে তিন আইপিএস-এর নাম পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তা অনুমোদন করা হয়নি। ডিজিপির পদ এভাবে খালি রাখা যাবে না, তাই বৃহস্পতিবার থেকে সেই পদের দায়িত্ব নেবেন রাজীব কুমার।
এর আগে ডিজিপি পদে ছিলেন মনোজ মালব্য। প্রাথমিকভাবে তিনি শুধু ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে তাকে স্থায়ী ডিজিপি করা হয়। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের জারি করা নির্দেশে বলা হয়েছে মনোজ মালব্যকে রাজ্য পুলিশের উপদেষ্টা করা হয়েছে।
কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বর্তমানে তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পদে ছিলেন। বুধবার এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে রাজীব কুমারের নিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়।
কলকাতা পুলিশ কমিশনার থাকাকালীন রাজীব কুমারের নাম অনেক বিতর্কের সাথে যুক্ত ছিল। ২০১৩ সালে, রাজ্য সরকার সারদা অর্থ বিনিয়োগ কোম্পানি মামলার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করেছিল।
তৎকালীন বিধাননগর পুলিশ কমিশনার ছিলেন রাজীব কুমার। তাকে SIT-এর প্রতিদিনের কাজকর্ম দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ২০১৩ সালে, তারা সারদা মামলায় তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ এবং বর্তমান দলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছিল, কিন্তু ২০১৯ সালে, সিবিআই সারদা মামলায় রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করে।
২০১৯ সালের এক সন্ধ্যায় সিবিআই রাজীব কুমারের বাড়িতে হানা দেয়। একটি চিটফান্ড মামলার তদন্তে রাজীব কুমারের নাম জড়িত ছিল। কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকদের ঢুকতে দেননি সিপি নিরাপত্তারক্ষীরা। পরে রাজীব কুমারকে কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ দায়ের করতে হয় এবং তাকে আগাম জামিন নিতে হয়।
ঘটনার কথা শুনে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার প্রতিবাদে সরাসরি ধর্মঘটে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জায়গায় রাজীব কুমারকে তার পাশে দেখা যায়। কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই অভিযানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও তুলেছিলেন তিনি।
No comments:
Post a Comment