শোল মাছের রোগ-প্রতিরোধ!
রিয়া ঘোষ, ১১ ডিসেম্বর : ব্যয়বহুল মাছ শোল পালনে খরচ তুলনামূলকভাবে কম। মাছ সব ধরনের দুর্যোগ বা প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে। শোল মাছ আমাদের শরীরের বেশিরভাগ আমিষের চাহিদা পূরণ করে। এছাড়া এটি আমাদের প্রিয় খাবারও বটে।
নদীতে অগভীর জল সাধারণত বেশি থাকে। শোল মাছ কর্দমাক্ত এবং জলজ গাছপালা আছে এমন জলের দেহে বাস করতে পছন্দ করে। এরা সাধারণত পানির ভেতরে থাকতে পছন্দ করে। এসব বৈশিষ্ট্য নদীতে বিদ্যমান। তাই অধিকাংশ নদীতেই শোল পাওয়া যায়। তবে নদীতে এ মাছ পালন করা সম্ভব নয়। তাই পুকুরে শোল চাষ করা যেতে পারে।
রোগ
শীতকালে প্রায় সব মাছই বিশেষ কিছু রোগে আক্রান্ত হয়। একইভাবে শোল মাছও এ সময় আক্রান্ত হয়। শোল মাছ সাধারণত ক্ষত রোগের জন্য বেশি সংবেদনশীল। এই সময়ে তাদের বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিৎ, অন্যথায় তারা এই রোগে মারা যেতে পারে। এতে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ব্যাহত হবে। শোল মাছ কোনও রোগে আক্রান্ত কিনা তা বোঝানোর উপায় হল আক্রান্ত মাছের গায়ে ক্ষত বা লাল দাগ থাকবে। এই সময়ে, দাগের আকার ধীরে ধীরে বাড়বে। ক্ষত প্রধানত মাছের লেজে, পিঠে এবং মুখে দেখা যায়। মাছগুলোকে জলে ভারসাম্যহীনভাবে ভাসতে রেখে লেজ পড়ে যেতে দেখা যায়। তবে এই রোগ নিরাময় করা সম্ভব।
পুকুরে পালন করা শোল মাছ প্রতি ১৫-২০ দিন পর পর পরীক্ষার জন্য জাল দিতে হবে। পরীক্ষণ শেষ হলে নিয়ম অনুযায়ী পুকুরে ফেলে দিতে হবে। এ সময় আহত মাছ ধরা পড়লে তা অবিলম্বে আলাদা করতে হবে। এরপর আক্রান্ত মাছকে ১০ লিটার জলে ১০০ গ্রাম লবণ মিশিয়ে পাঁচ থেকে ১০ মিনিট জলে ডুবিয়ে পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে। তাছাড়া শীতকালে যেহেতু এ রোগ হয় তাই রোগের আক্রমণের আগে আশ্বিন মাসের শেষে বা কার্তিক মাসের শুরুতে এক কেজি পাথর চুন ও এক কেজি লবণ পুকুরে মিশিয়ে দিতে হবে। এতে শীত মরসুমে কিছুটা হলেও রোগমুক্ত থাকবে।
অনেক সময় শোল মাছে পুষ্টির অভাব হয়। ভিটামিন এ, ডি এবং কে-এর ঘাটতি অনেক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই মাছকে দেওয়া খাবারে নির্দিষ্ট ভিটামিন ও খনিজ লবণ যোগ করতে হবে। তবেই মাছের উন্নতি সম্ভব হবে।
No comments:
Post a Comment