জমি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ, একে অপরের বিরুদ্ধে মারধরের নালিশ! কংগ্ৰেস-তৃণমূল তরজা
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ৩০ডিসেম্বর: জমি সংক্রান্ত পারিবারিক বিবাদের জের, তৃণমূলের মহিলা সদস্যাকে বাড়িতে ঢুকে মারধরের অভিযোগ উঠল কংগ্রেসের সমর্থক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। পাল্টা কংগ্রেস সমর্থক ও তার মাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত একাধিক। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা জুড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার দৌলতপুর গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক মা ধরে দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা রিয়াজউদ্দিন ও তার খুঁড়তুতো ভাই কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ইমদাদুল হকের মধ্যে একটি জমি নিয়ে গন্ডগোল চলছিল। এই জমির দখল নিয়ে পুলিশে অভিযোগ এবং কোর্টে মামলা পর্যন্ত হয়। অভিযোগ যে, ইমদাদুল, রিয়াজুদ্দিনের পরিবারকে চাপ দেয় অবিলম্বে থানা থেকে তাদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ তুলতে হবে। এই ঘটনার জেরে গত বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের মধ্যে মারামারিও হয়। অভিযোগ ওঠে এই ঘটনার পরেই শুক্রবার সন্ধ্যা বেলা ইমদাদুল দলবল নিয়ে রিয়াজুদ্দিনের বাড়িতে হামলা চালায়। রিয়াজুদ্দিন তৃণমূল করেন। বাড়িতে পুরুষদের না পেয়ে রিয়াজুদ্দিনের দুই বৌমার ওপর অত্যাচার, এমনকি শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে অভিযোগ। তার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ।
আরও অভিযোগ, এরপরে রিয়াজুদ্দিনের পরিবার দৌলতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ নম্বর বুথের তৃণমূলের সদস্যা আরজুমান খাতুনের বাড়িতে এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে সেখানেও তাদের ওপর চড়াও হয় ইমদাদুল ও তার দলবল। তৃণমূলের সদস্যা আরজুমান খাতুনকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ইমদাদুলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় রিয়াজউদ্দিন গুরুতর আহত হয় এবং তাকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চাঁচল সুপার স্পেসালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
অন্যদিকে ইমদাদুল হক জানিয়েছেন, সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী তাদের পরিবার এবং তার ওপর নির্মম আক্রমণ চালিয়েছে। তিনি বলেন, 'এর আগেও আমাকে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। আমি কংগ্রেস করি বলেই তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী আক্রমণ করেছে।'
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, এই নিয়ে দুই পক্ষই হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে, ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
এদিকে এই ঘটনার সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবী, 'কংগ্রেস হরিশ্চন্দ্রপুর সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাদের দাদাগিরি শুরু হয়েছে। আমাদের কর্মীদের মারধর করছে, অত্যাচার করছে। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।'
অন্যদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বের সাফাই, 'এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়। যদি কেউ এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলে আইন আইনের পথে চলবে। দল এ ব্যাপারে কাউকে প্রশ্রয় দেবে না।'
No comments:
Post a Comment