বাংলায় হিংসার রক্তক্ষয়ী খেলা! দিবালোকে গুলি করে খুন তৃণমূল নেতাকে

বাংলায় হিংসার রক্তক্ষয়ী খেলা! দিবালোকে গুলি করে খুন তৃণমূল নেতাকে

নিজস্ব সংবাদদাতা, ০৭ জানুয়ারি, মুর্শিদাবাদ : লোকসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই রাজ্যে ফের শুরু হয়েছে হিংসার রক্তক্ষয়ী খেলা।  রবিবার দিবালোকে খুন হলেন এক তৃণমূল নেতা।  ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে। বুলেটের আঘাতে মৃত্যু হল তৃণমূল নেতা তথা জেলা সাধারণ সম্পাদক সত্যেন চৌধুরী।  সত্যেন চৌধুরী একসময় অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।  কিন্তু পরে তৃণমূলে যোগ দিলেও সম্প্রতি রাজনীতি থেকে সত্যেন চৌধুরীর দূরত্ব বাড়তে থাকে।  রবিবার দুপুরে তাকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা।

 

৪ জানুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুরের খেজুরির এক তৃণমূল কর্মীর মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল।  এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে খেজুরি বিধানসভার বড়তলা ও কালগেছিয়া এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তৃণমূল কর্মীরা।  তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছিল স্থানীয় লোকজন।  এর আগে এক বিজেপি কর্মীর মৃতদেহও পাওয়া গিয়েছিল।

 

 সূত্রের খবর, বহরমপুরের ভাকুড়ি মোড়ে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের কাছে তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে বসেছিলেন সত্যেন চৌধুরী।  এরপর দুটি বাইকে করে তিন দুষ্কৃতী সত্যেন চৌধুরীকে ঘিরে ফেলে।  তারা পরপর তিন রাউন্ড গুলি ছোড়ে।  গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন রক্তে ভেজা সত্যেন চৌধুরীকে বাঁচাতে ছুটে আসেন।  তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সত্যেন চৌধুরীর মৃত্যু হয়।

 স্থানীয় লোকজনের দাবী, সত্যেন চৌধুরী প্রথমে রাজনৈতিকভাবে অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।  সত্যেন চৌধুরী সুতিরামথ সেবা সমিতি সহ অনেক ক্লাবের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন।  বামপন্থী আমলে বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার কারণে সত্যেন চৌধুরীকে কয়েকবার সংশোধনাগারে যেতে হয়েছে।

রাজ্যে দল বদলের পর, অধীর চৌধুরীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে সত্যেন তৃণমূলে যোগ দেন।  প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা সত্যেন চৌধুরীকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে।  যদিও গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে সত্যেন চৌধুরীকে সক্রিয় দেখা যায়নি।  

 বহরমপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, "কংগ্রেস এবং সিপিএম-সমর্থিত দুষ্কৃতীরা লোকসভা নির্বাচনের আগে অশান্তি তৈরি করতে সত্যেনকে হত্যা করেছে।"  বামপন্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে মুর্শিদাবাদ জেলা সিপিএম সেক্রেটারি জামির মোল্লা বলেছেন, “তাদের নিজেদের লোকজনই মেরেছে।  এটা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ লড়াই।"

 তৃণমূল নেতা খুন মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার সূর্য প্রতাপ যাদব বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।  এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।"