তৃণমূলের হাত ধরে বাংলায় ফিরতে চাইছে কংগ্রেস, রাহুলের ফন্দি ধরলেন মমতা - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday 27 January 2024

তৃণমূলের হাত ধরে বাংলায় ফিরতে চাইছে কংগ্রেস, রাহুলের ফন্দি ধরলেন মমতা

 


তৃণমূলের হাত ধরে বাংলায় ফিরতে চাইছে কংগ্রেস, রাহুলের ফন্দি ধরলেন মমতা


কলকাতা: ইন্ডিয়া যতের বৈঠকে বসে রাহুল গান্ধী পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১০-১২ টি আসন চেয়েছিল তৃণমূলের কাছে। রাজি হননি মমতা। দিতে চেয়েছিলেন দুই বা তিনটি আসন, এভাবেই জোটের সমাপ্তি হয় বাংলায়। তবে কংগ্রেস এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যদি তৃণমূলের হাত ধরে আরও বেশি আসন নেওয়া যায়।


সূত্রের খবর জোটের মাধ্যমে বাংলায় ফিরে দাঁড়াতে চাইছে কংগ্রেস। সে ক্ষেত্রে শাসক তৃণমূলের আখেরে ক্ষতি হবে তা বুঝেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাহুলের সঙ্গে জোটের বৈঠকে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহরমপুর এবং মালদা দক্ষিণ আসন দুটি দিতে চেয়েছিল অর্থাৎ অধীর চৌধুরী এবং আবু হাসেম খান চৌধুরী দুটি আসন পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রায়গঞ্জ আসনটি ও কংগ্রেসকে দিতে মানসিকভাবে তৈরি হন। 


সূত্রের দাবী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রস্তাব শুনে রাহুল গান্ধী ১০ বা ১২টি আসন কংগ্রেসকে ছাড়তে হবে বলেন। নইলে আসন সমঝোতার কোনও অর্থ হয় না। রাহুলের এই দাবীকে অযৌক্তিক বলে দাবী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


মমতা ঘনিষ্ঠদের দাবী, বাংলায় ৪২ টি আসনের একা লড়াই করার বিষয় তৃণমূল নেত্রী মনস্থির করেই ফেলেছেন, যদিও কংগ্রেস হাই কমান্ড এখনও বরফ গলানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু তৃণমূল আর সমঝোতার জায়গায় নেই বলে দলের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন। ফলে বড় কোনও মোচড় না হলে বাংলায় কংগ্রেস তৃণমূল জোট হওয়া কঠিন ।


গত বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই কারণ কংগ্রেস প্রথমেই তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে। সেই প্রস্তাবে কি ছিল তা অবশ্য মমতা প্রকাশ্যে বলেননি। শুক্রবার তৃণমূলের দাবী, সেই প্রস্তাবের কথা এবং ওই বিষয়ে রাহুলের বক্তব্য জানা গিয়েছে যদিও কংগ্রেসের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে সত্যতা স্বীকার করা হয়নি বরং বলা হচ্ছে মমতা নমনীয় হচ্ছেন না তাই জোট নিয়ে আলোচনা এগোচ্ছে না। 


মমতা অবশ্য বাংলা ছাড়া বাকি দেশে ইন্ডিয়ার শরিকদের মাধ্যমে আসন সমঝোতা নিয়ে আশাবাদী। তিনি এমনও বলেছিলেন যে, 'আমরা অ-বিজেপি আঞ্চলিক দলেরা বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চাই কীভাবে সেটা করব সেটা আমরা দরকারে ভোটের পরে বসে ঠিক করে নেব।' তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যে পরিষ্কার যে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছেন। তৃণমূল নেতাদের একাংশের বক্তব্য, যেভাবে কংগ্রেস জোটের অন্তরে দাদাগিরি করছে তা নেত্রীর ঘোর অপছন্দ।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ মহলের দাবী, রাহুলকে নিয়েও তৃণমূল নেত্রীর অযুযোগ রয়েছে। দলের এক প্রথম শ্রেণীর নেতার কথায়, 'মমতা দি ইন্ডিয়া নামটা দিয়েছিলেন, যদি রাহুল গান্ধী আমাদের নেত্রীকে মর্যাদা দিতে চাইতেন তাহলে অন্তত বাংলা থেকে তার ন্যয় যাত্রা শুরু করতে পারতেন। সেটা করা তো দূরস্ত, দিদিকে ওই বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। এটাই কি জোটের শরিকদের সম্পর্কে কংগ্রেসের মনোভাব!' কংগ্রেস অবশ্য দাবী করেছে, মমতাকে রাহুলের বাংলা পর্বের ন্যায়যাত্রা বিধিবদ্ধ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। 


প্রসঙ্গত, মমতা বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে দেওয়ার কথা প্রকাশে বলতেই কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মমতা এবং তৃণমূলের স্তুতি শুরু করেছেন বলা হয়েছে মমতা এবং তৃণমূল ইন্ডিয়ার আসল স্তম্ভ। এমনও দাবী করা হয়েছে যে, কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে মমতাকে ফোন করেছিলেন, যদিও শুক্রবার মমতার ঘনিষ্ঠ সূত্রে সে কথা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। 


পূর্ব বর্ধমানের সরকারি কর্মসূচি ফেরার পথে মমতা কপালে আঘাত পাওয়ার পরে তার খোঁজ নিতে ফোন করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী। মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে মমতার খোঁজ নেন সোনিয়া কন্যা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রাও।কিন্তু খাড়গে কোনও ফোন করেননি বলেই মমতার ঘনিষ্ঠদের দাবী। তাদের আরও বক্তব্য, মমতার যেদিন চোট লেগেছিল, তারপর দিন রাহুল বাংলায় ঢুকেছেন তার যাত্রা নিয়ে কিন্তু তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নেওয়ার বিষয়ে কোনও আগ্রহ দেখেননি। 


মমতা ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, নীতিশ কুমার সম্পর্কে আগে ইন্ডিয়া শরিকদের সতর্ক করেছিলেন মমতা। তিনি জানিয়েছিলেন, নীতিশ বিজেপির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তাই তাকে আহ্বায়ক করার পক্ষে তিনি শামিল হননি। সেই কারণে ইন্ডিয়ার শেষ ভার্চুয়াল বৈঠকেও মমতা ছিলেন না। সেদিন তার সাগর মেলার প্রস্তুতি দেখতে যাওয়ার কর্মসূচি ছিল। 


সূত্রের খবর মমতাকে ইন্ডিয়ার আহবায়ক হিসেবে নীতিশের নামে রাজি করানোর জন্য অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং উদ্ধব ঠাকরকে অনুরোধ করা হয়েছিল কংগ্রেসের তরফে। তবে তারাও খুব একটা গা করেন নি বরং দুজনেই বলে দেন মমতাকে ছাড়া এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। মমতার অনুপস্থিতিতে সেই বৈঠকেই নীতিশের নাম প্রস্তাব করা হয় কিন্তু তিনি আহ্বায়ক হতে রাজি হননি।


শুক্রবার মমতা তার ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, এতে শাপে বর হয়েছে। বিরোধী জোটের আবহাওয়া যদি বিজেপির সঙ্গে চলে যেতেন তাহলে তার রাজনৈতিক অধিকার আরও অনেক নেতিবাচক হতো। অন্তত সেই বিষয়টি এড়ানো গিয়েছে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad