বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জাল শংসাপত্র! প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস বিডিওর, গ্ৰেফতার তৃণমূল কর্মীসহ ৩ - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday 23 January 2024

বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জাল শংসাপত্র! প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস বিডিওর, গ্ৰেফতার তৃণমূল কর্মীসহ ৩


বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জাল শংসাপত্র! প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস বিডিওর, গ্ৰেফতার তৃণমূল কর্মীসহ ৩




নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ২৩ জানুয়ারি: বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জাল শংসাপত্রের প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস করলেন বিডিও, গ্রেফতার প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত পুলিশের হোমগার্ড, এক তৃণমূল কর্মী সহ মোট তিন। প্রতারিত হাজার হাজার মানুষ, খোঁচা বিজেপির, পাল্টা তৃণমূল।


বিশেষ ভাবে সক্ষমদের শংসাপত্র নিয়ে জালচক্রের পর্দা ফাঁস। পাড়ায় সমাধান প্রকল্পে পর্দা ফাঁস হল বিডিওর কাছে। পুলিশের জালে তিন প্রতারক। তাদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশেরই এক হোমগার্ড এবং তার জামাইবাবু যিনি তৃণমূল কর্মী। দীর্ঘ এক বছর ধরে এই প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিলেন প্রতারকরা। হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে বহু মানুষকে দিয়েছেন জাল শংসাপত্র। সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল এলাকায়। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর শালদহ গ্রামে পাড়ায় সমাধান প্রকল্পে এই প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস করেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌমেন মণ্ডল। 


এলাকা সূত্রে জানা গেছে সোমবার ওই প্রকল্পে উপভোক্তারা তাদের সমস্যা নিয়ে এসেছিল। সেই সময় বিশেষ ভাবে সক্ষম কিছু উপভোক্তা ভাতার আবেদনের জন্য শংসাপত্র জমা দেন। সেই শংসাপত্র দেখেই সন্দেহ হয় বিডিওর। তারপর খতিয়ে দেখেই জানা যায় সেই শংসাপত্র গুলি জাল। তারপরেই সামনে আসে ওই চক্রের কুকীর্তি। জানা যায়, এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের পারো গ্রামের নুর আলম যিনি মালদা পুলিশ লাইনে হোমগার্ড পদে কর্মরত। তার সঙ্গে রয়েছেন তৃণমূল কর্মী তার জামাইবাবু নাজিমুল হক এবং মামুন আলী নামে এক ছাপাখানা দোকান ব্যবসায়ী।তৃণমূল কর্মী নাজমুল হককে এলাকার মানুষ এলাকায় আটক করে। তারপরেই তাকে গ্রেফতার করে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। এরপর নুর আলম এবং মামুন আলীকেও গ্রেফতার করা হয়।


এলাকা সূত্রে জানা গেছে রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েত, তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েত, বরুই গ্রাম পঞ্চায়েত সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ এক বছর ধরে এই জাল চক্র চলছিল। হাজার হাজার মানুষ প্রতারিত হয়েছেন এদের কাছে। এমনকি বিশেষ ভাবে সক্ষম নয় কিন্তু ভাতা পাওয়ার লোভ দেখিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে অনেককে জাল শংসাপত্র দিয়েছেন। কারও কাছে নিয়েছেন ৩ হাজার আবার কারও কাছে ৮ থেকে ১০ হাজার। মঙ্গলবার ধৃত ৩ অভিযুক্তকে চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। 


এদিকে সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূল যে রাজ্য-জুড়ে প্রতারণা চক্র চালাচ্ছে তা এখানে প্রমাণিত।যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবী, প্রশাসন এখানে যথেষ্ট সক্রিয় তাই এই চক্রের পর্দা ফাঁস হয়েছে।


জেলা বিজেপির সাংগঠনিক কমিটির সদস্য রূপেশ আগরওয়াল বলেন, 'পুরো রাজ্যের ক্ষেত্রে ভুয়ো ব্যাপারটা চলে এসেছে, সে শিক্ষা হোক আর রেশন কার্ড। এটা তৈরি হওয়ার একমাত্র কারণ শাসক দলের নেতাকর্মীরা। মন্ত্রীদের মদত ছাড়া রাজ্যে এত দুর্নীতি হতে পারে! এসবের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার দাবী করেছেন তিনি।  


তিনি আরও বলেন, 'নেতা-মন্ত্রীদের দেখে হোমগার্ডেরও লোভ হয়েছে এবং তৃণমূল নেতার যোগসাজশে কম্পিউটার অপারেটরও হয়তো চাকরির অভাবে এই দুর্নীতি করেছে। শিক্ষিত বেকাররা এভাবেই একের পর এক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। সামনেই ভোট আছে, সেখানেই বোঝা যাবে তৃণমূলের কী অবস্থা হবে।'


অপরদিকে, জেলা তৃণমূল সম্পাদক নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারির কথায়, 'কোনও কিছু পেলেই এরা প্রথমে তৃণমূল পরিচয় দেয়। কিন্তু কেউ চুরি করলে কী তার জন্য দল দায়ী থাকবে! যে এটা করেছে তার দায়িত্ব।‌ এই ধরণের কাজ যারা করেছে আইন ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, 'বিজেপির কোনও কাজ নেই, শুধু রাম আর তমুক করার জন্য এগুলো করছে, এটা ঠিক না। যারা চুরি করছে তারা চোর, যারা বেইমানি করছে তারা বেইমান, তারা তৃণমূল না। অন্যায় করলে শাস্তি পেতেই হবে, সে যেই হোক।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad