গুড়-জিরার যুগলবন্দিতেই মিটবে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা
প্রেসকার্ড নিউজ, হেল্থ ডেস্ক, ২১ জানুয়ারি: গুড় এবং জিরা সাধারণত আমাদের রান্নাঘরে পাওয়া যায়, যা শুধুমাত্র স্বাদ বাড়ায় না,এর অনেক ঔষধি উপকারিতাও রয়েছে। গুড় এবং জিরার ব্যবহার,যা আমাদের ভারতীয় রন্ধনশৈলীতে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে,খাবার এবং মিষ্টি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে,স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অন্যান্য অনেক সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে।শুধু সঠিক সমাধান জানতে হবে।আসুন আপনাদের বলি এদের ঔষধি গুণ সম্পর্কে।
সাধারণ সর্দি - কাশি এবং ফ্লু -
ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে জিরা এবং গুড় সর্দি,কাশি এবং ফ্লু-র মতো সাধারণ ঋতুজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন এমন লোকদের জন্য ওষুধ হিসাবে কাজ করে।গুড়ের প্রভাব গরম। সর্দি-কাশির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে গরম খাবার উপকারী। এই কারণেই গুড় খাওয়া সর্দি,কাশি এবং ফ্লু সম্পর্কিত উপসর্গগুলিকে অনেকাংশে উপশম দিতে পারে।বিশেষ করে যারা কাশির সমস্যায় ভুগছেন তারা রাতে ঘুমানোর আগে ছোট টুকরো আদার সাথে গুড় খেলে আরাম পাবেন।
পেট এবং হজম সুস্থ রাখে -
শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ রোগই পাকস্থলী থেকে শুরু হয়। শরীরের প্রায় সমস্ত কার্যকারিতা পরিপাকতন্ত্র দ্বারা প্রভাবিত হয়,যার কারণে আমরা বিভিন্ন ধরণের পুষ্টি পাই এবং সেই অনুযায়ী আমাদের শরীর কাজ করে।তাই পেটের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি।এর জন্য জিরা এবং গুড় কার্যকর প্রমাণিত হবে,কারণ এতে ফাইবার রয়েছে।ফাইবার পরিপাকতন্ত্রকে মসৃণভাবে কাজ করতে সাহায্য করে এবং অনেক ধরনের পেট সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় -
গুড় ও জিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।এই দুটি খাবারেই প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।এর সরাসরি প্রভাব ইমিউন কোষকে শক্তিশালী করে।এই কারণে, এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং অনেক ধরণের সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়।
হৃদরোগের জন্য একটি ওষুধ -
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর বহু মানুষ প্রাণ হারায়।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে,বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর প্রধান কারণ হৃদরোগ। গুড় ও জিরা খাওয়া হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে।গুড় এবং জিরা উভয়েরই কার্ডিওপ্রোটেক্টিভ কার্যকলাপ রয়েছে।এটি অনেক ধরনের হৃদরোগ সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি কমাতে বহুগুণে কাজ করতে পারে।এই কারণে এটি হৃদরোগের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।
ওজন কমাতে কার্যকরী -
গুড় ও জিরা একসাথে মিশিয়ে খেলে ওজন বাড়ানো যায়। প্রকৃতপক্ষে চর্বি বৃদ্ধি বা অনিয়মিত জমা টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং অনেক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় এবং এই বিষয়ে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায়।জিরার জল ফুটিয়ে গুড় দিয়ে খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে।জিরা ভেজে গুড় দিয়েও খেতে পারেন।এটি প্রধানত ওজন কমানোর জন্য অনেক লোকই খেয়ে থাকে।
রক্তশূন্যতার ঝুঁকি দূর করে -
শরীরে রক্তশূন্যতাকে অ্যানিমিয়া বলা হয়।এই সমস্যাটি মূলত গর্ভাবস্থায় মহিলাদের সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেয়।গুড়ের মধ্যে থাকা আয়রন সঠিক পরিমাণে খেলে রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি বহুগুণ কমে যায়।সেই সঙ্গে গুড়ের সঙ্গে জিরা খেলে রক্ত সঞ্চালনও ভালো হয়।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে -
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাকে হাইপারটেনশনও বলা হয়।এই কারণে হৃদরোগ ও স্ট্রোকজনিত নানা ধরনের রোগও বেড়ে যায়।যেখানে জিরা এবং গুড়ের মধ্যে উপস্থিত পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমাতে কার্যকরী কাজ করে।তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত জিরা ও গুড় খাওয়া উচিৎ।
বি.দ্র: এখানে দেওয়া তথ্য সাধারণ জ্ঞান ও ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে দেওয়া। প্রেসকার্ড নিউজ এটি নিশ্চিত করে না। কোনও নতুন কিছু শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অবশ্যই নিন।
No comments:
Post a Comment