সাংসদের তহবিলে বসানো কোটি কোটি টাকার হাইমাস্ট লাইট বিকল! সিবিআই তদন্তের দাবী বিজেপির - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday 20 January 2024

সাংসদের তহবিলে বসানো কোটি কোটি টাকার হাইমাস্ট লাইট বিকল! সিবিআই তদন্তের দাবী বিজেপির


সাংসদের তহবিলে বসানো কোটি কোটি টাকার হাইমাস্ট লাইট বিকল! সিবিআই তদন্তের দাবী বিজেপির 




নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ২০জানুয়ারি: সদর এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন। রাজ্যসভার সাংসদ তহবিলের বরাদ্দকৃত অর্থে বসানো হাইমাস্ট লাইট দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বিকল। কিন্তু হচ্ছে না সংস্কার। সন্ধ্যের পরেই এলাকার প্রাণ কেন্দ্রে ঘুটঘুটে অন্ধকার। তবে শুধু এলাকার প্রাণকেন্দ্র নয় স্টেশন রোড থেকে শুরু করে অন্যান্য জায়গাতেও আলো নিয়ে সমস্যা। কিন্তু জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসন সকলেই যেন শীতঘুমে। বিধায়ক তহবিল থেকে বসানো সোলার লাইটও জ্বলে না ঠিক করে। ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষেরা। কোটি কোটি টাকা খরচ করে আলো বসানো নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবী বিজেপির। যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি বিরোধী জোটের দখলে থাকায় তাদের ঘাড়েই দায় চাপিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। অন্যদিকে দুর্নীতির অভিযোগে শাসক কে বিঁধেছে বিরোধীরা। আর রাজনীতির যাঁতাকলে থমকে নাগরিক পরিষেবা। 


মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকা। হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রাণ কেন্দ্র শহীদ মোড়। সেখানেই রাজ্যসভার সাংসদ মৌসুম বেনজির নূরের বরাদ্দকৃত অর্থে বসানো হয়েছিল একটি হাইমাস্ট লাইট। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে সেই আলো বিকল, যার ফলেই সন্ধ্যের পর আঁধারে ডুবছে শহীদ মোড়। শীত পড়তে কুয়াশার কারণে সমস্যা আরো বেড়েছে। ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে পথ চলতি মানুষ থেকে শুরু করে স্থানীয়রা। কিন্তু সেই আলো সংস্কারের উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। সংস্কারের প্রশ্ন উঠলেই একে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি। 


শাসক দল তৃণমূলের দাবী, এলাকায় এই ধরনের সমস্যা স্থানীয় পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি দেখভাল করে। কিন্তু হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি বিরোধী জোটের দখলে। তারা কোনও উদ্যোগ নেয়নি এই আলো সংস্কারের। পাল্টা জোট নেতৃত্বের দাবী, আলো বসানোর সময় দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। তার প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে তাদের। বিজেপির অভিযোগ, শুধু শহীদ মোড় নয় স্টেশন যাওয়ার রাস্তাতেও স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন তার তহবিলের টাকায় সোলার লাইট বসিয়েছিলেন। যেখানে প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছিল। কিন্তু সেই আলো জ্বলছে না। দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের দাবীও তুলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।


স্থানীয় বাসিন্দা কামনাশীষ রায় বলেন, 'আমাদের শহরের এটা প্রাণকেন্দ্র। তিন মাস থেকে লাইট খারাপ হয়ে আছে। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি, পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি, কিন্তু তারপরেও কেউ কর্ণপাত করেনি। আমাদের খুব সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রশাসন পদক্ষেপ করুক আমরা এটাই চাই।' তিনি আরও বলেন, 'দশ দিনের মধ্যে লাইট খারাপ হয়ে গেলে বুঝতে হবে দুর্নীতি হয়েছে।'


বিজেপির উত্তর মালদা জেলা সাংগঠনিক সদস্য কিষাণ কেডিয়া বলেন, '৩ কোটি টাকা খরচ করে যে লাইট লাগানো হয়েছে, তা কি নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে! এত টাকা খরচ করার পরও আলো জ্বলছে না, তার সিবিআই তদন্ত করা হোক। 


তাঁর সংযোজন, 'কাটমানিতেই অর্ধেক টাকা চলে গেছে। লাইটটা জ্বলবে কি করে ! সারা রাজ্যের লোক দেখছে টিএমসির আমলে কাটমানি ছাড়া কাজ হচ্ছে না। এই লাইটের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে; কাটমানিতে সব টাকা চলে গেছে তাই আলো জ্বলছে না। তাই আমরা সিবিআই তদন্ত চাইছি। তাহলে বোঝা যাবে কত টাকার লাইট লেগেছে আর কত টাকা বিল হয়েছে।'


হরিশ্চন্দ্রপুর এক এ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, 'এখানে দুর্নীতির কোনও প্রশ্ন নেই ভালো কাজ করেছিলেন আমাদের বিধায়ক। এখানে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি জোটের। এগুলো লাগানোর পর দেখভালের দায়িত্ব পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির এবং তারা যদি না করতে পারে, ওরা বলে দিক। আমাদের মন্ত্রী আছেন, আমরা ঠিক করিয়ে নেব।' তাঁর খোঁচা, 'ওরা না পারলে এটা ওদের ব্যর্থতা।'


কংগ্রেস নেতা তথা বন ও ভূমিক কর্মাধ্যক্ষ স্বামী আব্দুস শোভান বলেন, 'তৃণমূল কাটমানি খেয়ে কাজ করেছে বলে আজ এই অবস্থা এরা পাপ করবে আমাদের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, ঠিক করে নেব।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad