বন্ধ হল স্কুল
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ০৭ জানুয়ারি: স্কুল আছে, আছে ভবনও। সেই স্কুল ভবনের চার চারটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও সেই শ্রেণিকক্ষে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি নেই। কারণ নতুন করে শিক্ষিকা নিয়োগ না হওয়ায় বন্ধ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে তৈরি স্কুল।
চলতি বছরের ৩১ শে জানুয়ারির পর তালাবন্ধ হয়ে জরাজীর্ণ দশায় পড়ে নষ্ট হবে বেড়াচাঁপা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে গড়পাড়া বৈদ্যনাথ স্মৃতি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রটি। গ্রামের পিছিয়ে পড়া দুঃস্থ, অসহায় বিশেষ করে আদিবাসী সম্প্রদায় মানুষের পরিবারের শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে জমি দান করেছিলেন বেড়াচাঁপার এক বস্ত্র ব্যবসায়ী।
দীর্ঘ ২৩ বছর পর শুধুমাত্র শিক্ষিকা নিয়োগ না হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেল সেই শিশু শিক্ষাকেন্দ্রটি, যা নিয়ে ক্ষোভ ঝরে পড়ল স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার গলায়। পাশাপাশি জমিদাতার কাতর আবেদন স্কুলটিতে নতুন করে শিক্ষিকা নিয়োগ করা হোক।
স্কুলের শিক্ষিকা ভারতী কর্মকার বলেন, 'হ্যাঁ এই স্কুলে তালা পড়ে যাবে। আমরা নিজেরা অনেক কষ্ট করে হাতে করে স্কুলটা তৈরি করেছি ২০০০ সাল থেকে। স্কুলটা চললে আমাদের ও পাড়ার লোকেদেল ভালো হতো। বিশেষ করে এলাকার আদিবাসী শিশুগুলোর। এরাতো অন্য স্কুলেও ভর্তি হতে পারবে না, এদের মা-বাবারা ঠিকমতো স্কুলে পাঠাতেও পারেন না, মাঠেঘাটে কাজ করে। আমরা বাড়ি থেকে ডেকে ডেকে পড়ুয়াদের নিয়ে আসতাম, এদের ভবিষ্যৎটা অন্ধকার হয়ে যাবে।'
জমিদাতা গোপাল সাধুকা বলেন, 'ওখানকার কিছু লোক আমার কাছে আসেন, তারা বলেন ওখানে কিছু গরীব-দুঃস্থ পরিবার আছে, যারা ভালো স্কুলে যেতে পারে না, স্কুলের প্রয়োজন। তখন আমি তাদের কথামত এবং সরকারি পদাধিকারীরাও এসেছিলেন আমার কাছে, তাদের কথামতো আমি ওখানে জমিটা স্কুলকে দান করি এবং আমার বাবার নামানুযায়ী; বৈদ্যনাথ শিশু শিক্ষা নামে স্কুলটা হবে। কিন্তু আজকে আমি খুব দুঃখের সঙ্গে জানতে পারলাম, স্কুলটা হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষিকার অভাবে। আমি খুব ব্যথিত।'
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ, শিক্ষিকা নিয়োগ করে অবিলম্বে স্কুলটা যাতে পুনরায় চালু করা যায়। তাঁর কথায়, 'যেহেতু আমার বাবার নামে স্কুলটা হয়েছে, আমার স্বপ্ন ছিল এই স্কুলটা চলুক।'
No comments:
Post a Comment