শাহজাহান আতঙ্কে বসিরহাটের তৃণমূল নেতৃত্ব
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ২৫ জানুয়ারি: শাহজাহান আতঙ্কে বসিরহাটের তৃণমূল নেতৃত্ব। সন্দেশখালির সরকারি অনুষ্ঠানে হাজির হননি সভাধিপতি সহ জেলাপরিষদের কেউই। নিচু তলার নেতাদের প্রশ্ন শুনে প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দিয়েছেন জেলার ও কোর কমিটির নেতারা।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহানের বাড়ির দেওয়ালে হাজির সমন দেওয়ার পর বসিরহাট তৃণমূলের অন্দরে আতঙ্ক বেড়েছে। পরিস্থিতি এমন যে সন্দেশখালি ২ ব্লকের বিডিও অফিস সংলগ্ন মাঠে প্রাণী সম্পদ বিকাশ সপ্তাহের জেলা স্তরের অনুষ্ঠানে হাজির হননি সাংসদ ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী সহ জেলাপরিষদের কেউই। সূত্রের দাবি, তৃণমূলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাধিপতি হাজি নুরুল ইসলামও হাজির হননি সরকারি অনুষ্ঠানে। তৃণমূল সূত্রের খবর, ইডির সমনে শেখ শাহজাহান যাবে কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলার শাহজাহান ঘনিষ্ঠ নেতারা।
শাহজাহান ঘনিষ্ঠ নেতাদের যুক্তি, শাহজাহান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হাজিরা না দিলে নতুন করে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। আবার হাজিরা দিতে গেলে গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার এক তৃণমূল নেতার দাবি, ভয় আতঙ্ক এতটাই ঢুকেছে যে প্রাণী সম্পদ বিকাশ সপ্তাহের সরকারি অনুষ্ঠানে হাজির হননি সভাধিপতি সহ কোনও নেতা জনপ্রতিনিধি। বুধবার জেলা পর্যায়ের এই অনুষ্ঠান হয়েছে সন্দেশখালি ২ ব্লকের বিডিও অফিস সংলগ্ন মাঠে। প্রশাসন সূত্রের খবর,গত বছর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠানটি দেগঙ্গা ব্লকে হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরে শেখ শাহজাহান প্রভাব খাটিয়ে সন্দেশখালি ২ ব্লকে নিয়ে যায়।
শাহজাহান কান্ডের পর প্রশাসন ভেন্যু বদল করেনি। তৃণমূল সূত্রের খবর, শাহজাহানের আকুঞ্জিপাড়ার বাড়িতে বুধবার সকালে ইডির আধিকারিকরা যাওয়ায় তৃণমূলের নেতা জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে যাওয়া বাতিল করেন ।নারায়ণ গোস্বামী বলেন, " পরপর কর্মসূচি থাকায় সন্দেশখালি যেতে পারিনি। ওখানে গেলে ফিরতে দেরি হত। বাকি কর্মসূচিতে হাজির হতে পারতাম না।"
বুধবার বসিরহাট পৌরএলাকার প্রান্তিক মাঠে ছিল তৃণমূলের কর্মী সভা সেখানে অবশ্য জেলা পরিষদের সভাপতি নারায়ণ গোস্বামী, হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা হাজির হন। তৃণমূলের সভায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান নির্মল ঘোষ ছাড়াও দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ,পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী হাজির ছিলেন। বসিরহাটের অন্যান্য নেতারা শাহজাহান ও সন্দেশখালির তৃণমূল সংগঠন বিষয়ে কি করবেন তার পরামর্শ নিতে যায় কোর কমিটির সদস্যদের কাছে। এক নেতার দাবি, সুজিত বসুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসিরহাটের দায়িত্ব দিয়েছেন। নির্মল ঘোষ কোর কমিটির চেয়ারম্যান, নারায়ণ গোস্বামী কোর কমিটির সদস্য। ওঁরা উত্তর না দিয়ে প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দেন।
নারায়ণ গোস্বামী শেখ শাহজাহান সম্পর্কে বলেন, "বিচারাধীন বিষয়ে আমি কিছু বলব না।জেলার সর্বত্র দল দলের কাজ করছে। সুজিত বসু বুধবার সভা শেষে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, "আইন মেনে যে কারোরই বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যেতে পারে। আইনের পক্ষে আমরা।আইন আইনের মতো করে চলবে। এটাই আমরা বলে এসেছি"। তৃণমূলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হাজি নুরুল ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি মেসেজের। তবে বসিরহাটের আরএক নেতা একে এম ফারাদ বলেন, "আমরা নিচু তলায় কাজ করি। দল অনেককেই দিয়েই চলে। ফলে সব রকম পরিস্থিতিতে আমাদের কাজ করতে হবে। "
No comments:
Post a Comment