রাতের অন্ধকারে তৃণমূল কর্মীর পুকুরে বিষ! ৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি, উত্তেজনা

 

রাতের অন্ধকারে তৃণমূল কর্মীর পুকুরে বিষ! ৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি, উত্তেজনা 

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ০৪জানুয়ারি: রাতের অন্ধকারে পুকুরে বিষ মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তেজনা ছড়াল মালদার চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কলিগ্রামের নিমতলায়। রাতের অন্ধকারে কলিগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রেজাউল খানের খুড়তোতো ভাই তৃণমূল কর্মী হাক্কান খানের পুকুরে বিষ মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার মাছের ক্ষতি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে কলিগ্রামের খানমোড় সংলগ্ন কালীবাড়িতে মাছ চাষের জন্য একটি পুকুর লিজ নিয়েছিলেন হাক্কান খান। সেই পুকুরে মাছ চাষ করেন তিনি। দীর্ঘ দুই মাস অশান্তির জেরে এলাকার জনজীবন ব্যাহত হওয়াই তিনি পুকুরে যেতে পারছিলেন না দেখভালের জন্য। যেতে গেলেও মাঝে মাঝেই কিছু দুষ্কৃতীর হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছিল তাকে। কিন্তু সম্প্রতি এলাকায় পুলিশ প্রশাসনের মধ্যস্থতায় শান্তি বৈঠক এবং শান্তি মিছিল হয়। তারপরেই বৃহস্পতিবার ভোররাতে এলাকার শান্তি কমিটির সভাপতি এবং পুলিশ ক্যাম্পে থাকা কর্তব্যরত পুলিশদের জানিয়ে জেলেদের নিয়ে পুকুরে যান মাছ মারার জন্য। বৃহস্পতিবার সকালে বিহারের বাজারে সেই মাছ রপ্তানি করতেন তিনি। 

হাক্কান খানের অভিযোগ, পুকুরে গিয়েই বিষের গন্ধ পান।তারপরেই মোবাইলের আলো জ্বেলে দেখতে পান পুকুরের জলে বিষ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে ফোন করেন তিনি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বাহারাম খান এবং রাতে পেট্রোলিংয়ে থাকা চাঁচল থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে আসে। পঞ্চায়েত সদস্য এবং পুলিশের নির্দেশে হাক্কান খান পুকুর থেকে মাছ তুলে দেখতে পান সব মাছ মৃত। প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী হাক্কান খানের।

এই প্রসঙ্গে হাক্কান খান বলেন, 'আমি তো দীর্ঘদিন ধরে পুকুরে আসতেই পারতাম না। শান্তি মিছিল হওয়ার পর শান্তি কমিটির সভাপতি এবং কর্তব্যরত পুলিশদের জানিয়ে আমি এসেছিলাম। রাতে মাছ না ওঠাতে পারলে ভোরের মধ্যে মাছ পাঠানো যায় না। এসে এই অবস্থা দেখতে পেলাম। পুলিশ যে দুই মাস ধরে এলাকায় রয়েছে তবে পুলিশ কি করছে। এতকিছুর পরও যারা এলাকাকে অশান্ত করতে চাইছে তাদের গ্রেফতার করুক। সাড়ে চার লক্ষ টাকা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে এই পুকুরটা লিজ নিয়েছিলাম। প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মাছের ক্ষতি হল। আমাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।:

সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য বাহারাম খান বলেন, 'আমাকে যখন রাতে ফোন করে আমি রাতেই এসেছি।এসে দেখি এই অবস্থা। অনেক মাছের ক্ষতি হয়েছে। যারাই এটা করেছে পুলিশ তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিক এটাই চাইব।'

প্রসঙ্গত, মহালয়ার ফুটবল খেলার বিবাদকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুজোর সময় তৃণমূল এবং জোটের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠে নিমতলা। অগ্নিসংযোগ থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত প্রধান রেজাউল খানের ভাই ইমরান খানকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠে। মাথায় গুরুতর চোট পান ইমরান। তারপর থেকেই এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প করা হয়েছে। শান্তি বৈঠক এবং শান্তি মিছিলের পর সম্প্রতি স্বাভাবিক হয়েছে নিমতলার জনজীবন। কিন্তু তারপর এদিনের ঘটনায় ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে।