নির্দিষ্ট আওয়াজে রাগ-বিরক্তি? হতে পারে মিসোফোনিয়া, জেনে নিন কী এই রোগের লক্ষণ
প্রেসকার্ড নিউজ লাইফস্টাইল ডেস্ক, ২০ জানুয়ারি: আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে কিছু লোক অন্যদের শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দে, খাবার চিবানো বা ঢেঁকুর, হাঁচি বা ফ্যানের শব্দে বিরক্ত হয়। প্রায়ই লোকেরা এটিকে একটি স্বাভাবিক অভ্যাস বিবেচনা করে উপেক্ষা করে। কিন্তু এই সমস্ত লক্ষণগুলি মিসোফোনিয়া ডিসঅর্ডারের দিকে নির্দেশ করে। মিসোফোনিয়া হল একটি গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি নির্দিষ্ট শব্দ শুনে বিরক্ত হয়। তাই আসুন আজকে এই প্রতিবেদনে মিসোফোনিয়ার লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
মিসোফোনিয়া কি?
মিসোফোনিয়া দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। এতে মিসো অর্থ ঘৃণা এবং ফোনিয়া অর্থ কণ্ঠ বা ধ্বনি। এই অবস্থায় ব্যক্তি নির্দিষ্ট শব্দে সমস্যায় পড়তে শুরু করেন। মিসোফোনিয়া নির্বাচনী শব্দ সংবেদনশীলতা ব্যাধি হিসাবেও পরিচিত। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি নির্দিষ্ট কণ্ঠস্বর বা শব্দের কারণে রাগ এবং নার্ভাস হতে শুরু করে। যে ব্যক্তির মস্তিষ্কের এই অস্বাভাবিকতা আছে তার মস্তিষ্ক এই ধরনের শব্দ অবিলম্বে ধরে এবং তারপরে তার ফোকাস সেখানেই থাকে। কিছু রোগীর অবস্থা এতটাই গুরুতর যে এই ধরনের শব্দ শুনে তারা মেজাজ হারিয়ে ফেলেন, এমনকি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন।
কোন বয়সে মিসোফোনিয়া হয়?
যে কোনও বয়সের মানুষই মিসোফোনিয়ায় ভুগতে পারে। একজন ৬ বছরের শিশু থেকে ৬০ বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত যে কেউ এই রোগের শিকার হতে পারে।
মিসোফোনিয়ার লক্ষণ
মিসোফোনিয়ার সমস্যায় রোগী কিছু শব্দে অসুবিধা অনুভব করেন। এর মধ্যে রয়েছে শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ, খাবার খাওয়ার শব্দ, নাক ডাকার শব্দ, টাইপ করার শব্দ, কলম টোকা দেওয়ার শব্দ, বাসন ঠেকানোর শব্দ, শিস বাজানো ইত্যাদি। এই বিশেষ শব্দ বা কণ্ঠের প্রতি রোগীর প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে-
বিরক্ত
রাগ
আক্রমণাত্মক আচরণ
ঘৃণা
মিসোফোনিয়ার কারণ
মিসোফোনিয়ার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে একটি গবেষণায় দেখা গেছে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীণ ইনসুলার কর্টেক্স খুবই সক্রিয় থাকে। এটি মস্তিষ্কের একটি অংশ যা আবেগ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়।
মিসোফোনিয়ার চিকিত্সা
জ্ঞানীয় আচরণগত থেরাপির মাধ্যমে মিসোফোনিয়ার চিকিৎসা করা হয়। এ ছাড়া ডাক্তার রোগীকে ঘুমের জন্য ওষুধও দিতে পারেন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার উন্নতি, মানসিক চাপ কমানো এবং প্রতিদিনের ব্যায়াম এই রোগের চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে।
No comments:
Post a Comment