জেনে নিন মঙ্গল গ্রহ থেকেও শীতল গ্রামের কথা - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday, 10 February 2024

জেনে নিন মঙ্গল গ্রহ থেকেও শীতল গ্রামের কথা


জেনে নিন মঙ্গল গ্রহ থেকেও শীতল গ্রামের কথা


প্রদীপ ভট্টাচার্য, ১০ই ফেব্রুয়ারি, কলকাতা: শীত ঋতু অনেকের কাছে আনন্দের হলেও অনেকের কাছে অভিশাপও। আমাদের গ্রীষ্ম প্রধান দেশে শীতের দেখা পাওয়া যায় মাসখানেক। আমাদের দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০, ৭ বা খুব বেশি হলে ৫ ডিগ্রি পর্যন্ত হয়ে থাকে। অথচ সাইবেরিয়ায় ওয়মিয়াকন নামক এক গ্রামে শীতকালে তাপমাত্রা নেমে যায় মাইনাস ৭০ ডিগ্রিতে।


এখানে ঠান্ডা এতটাই তীব্র যে, মঙ্গলগ্রহ থেকেও বেশি শীতল মনে করা হয় এই অঞ্চলটিকে। যেখানে মঙ্গলগ্রহে তাপমাত্রা কম থাকার কারণে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা করা যাচ্ছে না। কেউ কেউ সেখানে তাপমাত্রা বাড়াতে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের পরামর্শও দিচ্ছেন। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমাদের পৃথিবীতেই তার চেয়েও বেশি একটি শীতল জায়গা আছে।


তবে আশ্চর্যের কথা এইরকম ভয়ংকর ও প্রতিকূল পরিবেশেও এখানকার গ্রামগুলোতে বছরের পর বছর ধরে মানুষ বসবাস করছে। রাজধানী মস্কো থেকে প্রায় ৩৩০০ মাইল দূরবর্তী সেন্ট্রাল সাবেরিয়ার ওয়মিয়াকন গ্রামটিকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল গ্রাম। এখানকার গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯২৪ সালে এখানকার তাপমাত্রা মাইনাস ৭১ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছিল। এরপর ২০১৮ সালে তাপমাত্রা নেমেছিল মাইনাস ৮৮ ডিগ্রিতে। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে এখানে তেমন কোনও ফসল হয় না শুধু বলগা হরিণ পালন করা হয়। মাংস আর স্যুপ এখানকার মানুষের প্রধান খাদ্য। এখানে খাবার নষ্ট হওয়ার কোনও ভয় নেই। এখানে গাড়ি না চললেও তার ইঞ্জিন চালু করে রাখতে হয়। তা না হলে গাড়ি অকেজো হয়ে যেতে পারে। কয়েক বছর আগে এখানে ঠান্ডায় জমে দুজন মানুষ মারা যায়। তাদের গাড়ি নষ্ট হয়ে গেলে তারা গাড়ি থেকে নেমে বাকি পথ হেঁটে যাবার চেষ্টা করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা বরফে জমে মারা যান। 


এখানে সব মিলিয়ে মাত্র ৫০০ লোকের বাস। বেঁচে থাকার চেয়েও মারা যাওয়া বেশি বিড়ম্বনার ওয়মিয়াকনে। কারণ এখানে শীতল পরিবেশে মানুষকে শায়িত করার জায়গা পাওয়া কঠিন। এখানে মৃতদেহ সমাধিস্থ করার আগে আগুন জ্বালিয়ে বরফযুক্ত মাটি কাটা হয়। আর এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লেগে যায় অন্তত তিন থেকে চার দিন। এখানে বছরের পর বছরেও সমাধিস্থ মৃতদেহে পচন ধরে না। জানুয়ারি মাসেই সবচেয়ে বেশি শীতল থাকে এই রহস্যময় জায়গাটি। তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রির নিচে চলে গেলে বন্ধ রাখা হয় এখানকার একমাত্র স্কুলটি। একবার ঠান্ডায় এখানকার আবহাওয়া কেন্দ্রের থার্মোমিটারই বিকল হয়ে গিয়েছিল।


অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে এখানে কোনরকম উদ্ভট পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় বাসিন্দাদের। প্রচন্ড ঠান্ডায় এখানে কিছুক্ষণ বাইরে থাকলেই চোখের ওপর  বরফের আস্তরণ জমে যায়। এছাড়া কলমের কালি, গ্লাসে রাখা জলও তরল থাকে না। বাইরে ফুটন্ত জল নিয়ে গেলেও সেটি জমে বরফ হয়ে যায় মাত্র কয়েক মিনিটে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad