মৌচাকে ঢুকিয়ে দেন মাথা! বি-ম্যানের কাণ্ড দেখলে আঁতকে উঠবেন
দেবনাথ মোদক, বাঁকুড়া, ২৪ ফেব্রুয়ারি: মৌমাছিকে ভয় পায় এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দায়! জঙ্গলের রাজা সিংহ ভয় পায় এই মৌমাছিকে। মৌমাছির তাণ্ডব দৌঁড়ে পালায় হাতি। তবে ভয় পান না বাঁকুড়ার সুখ মহম্মদ ওরফে মৌমাছি মানব। উল্টে মালার মত করে মৌচাকে ঢুকিয়ে দেন মাথা। এ যেন তাঁর কাছে একটা খেলা। মৌমাছির কামড়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে যায় সাধারণ মানুষের। তবে কিছুই হয়না সুখ মহম্মদের। সে যেন কোনও দৈববলে বশ মানিয়ে রেখেছে মৌমাছির দলকে।
বাঁকুড়ার মৌমাছি মানবের গল্প খবরে সম্প্রচারের পর দিকে দিকে ছড়িয়েছে তাঁর নাম। সেই কারণেই এবার বাঁকুড়া এসডিও-এর অনুরোধে বাঁকুড়া সদরের রবীন্দ্রভবনে এক বিরাট মৌচাক ভাঙতে আসেন সুখ মহম্মদ। তবে মৌচাক দেখলেই যেন ভিতরের শিশুটি জেগে ওঠে। আগের বারের মতই এবারও করে বসলেন এক দুঃসাহসিক কাজ। গলায় মালার মত করে পরে নিলেন মৌচাককে। সুখ মহম্মদ জানান, "দীর্ঘ দিন ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থেকে এতটা আত্মবিশ্বাস এসেছে। আমি ৪০০ থেকে ৫০০ মৌমাছির কামড় সহ্য করতে পারি।"
চারিদিকে ভন ভন করছে মৌমাছি। মুখ চোখ ঢেকে দর্শকের মত দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন স্থানীয়। অবাক হয়ে তারা সুখ মহম্মদের কাণ্ড দেখছেন। খেলার মত মনে হলেও এদিন প্রায় ৫০ মৌমাছির কামড় খান মৌমাছি মানব। মৌমাছি নয় যেন মশা। নির্দ্বিধায় এক একটি হুল ছাড়িয়ে ফেলে দিতে থাকেন তিনি। বাঁকুড়া জেলার ওন্দা ব্লকের চিঙ্গানি গ্রামের বাসিন্দা সুখ মহম্মদ এক দশকের বেশি সময় ধরে ভেঙে আসছেন মৌমাছির চাক। বাঁকুড়া ছাড়াও গোটা রাজ্যে তিনি ‘বি-ম্যান’ নামেই পরিচিত।
সদ্য মৌচাক ভেঙে পাড়া মধু খেয়ে স্থানীয় বাসিন্দা তুফান পাত্র বলেন, "এমন দৃশ্য আগে দেখিনি। মৌমাছির এত কাছে কোনোওদিন যায়নি। দাদার কাণ্ড (সুখ মহম্মদ) দেখে রোমাঞ্চিত হলাম। খাঁটি মধু এই প্রথম খেলাম, এক কথায় অনবদ্য।"
মৌমাছির ভূমিকা অপরিসীম এবং মৌমাছির কারণেই হতে পারে কৃষির উন্নয়ন, বললেন বাঁকুড়ার সুখ মহম্মদ। এছাড়াও বাঁকুড়ার মধুর গুনগত মান এবং ঘনত্ব সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বলেই জানিয়েছেন তিনি। মৌমাছি এবং মধুর সঙ্গে এই যুদ্ধ এবং প্রেমই যেন সুখ মোহাম্মদকে বাঁকুড়ার মৌমাছি মানব বলে সুপ্রতিষ্ঠিত করে তুলেছে।
No comments:
Post a Comment