বাংলার সবচেয়ে ভায়োলেন্ট মুভি 'পারিয়া'
প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ০৯ ফেব্রুয়ারি: পথ কুকুরদের ভোট দেওয়ার ক্ষমতা নেই শুধু ভালোবাসার ক্ষমতা আছে। তাই ওদের নিয়ে কোনও নেতা-মন্ত্রীদের মাথাব্যথা নেই। 'পারিয়া' বাংলা ছবির ইতিহাসে সবচেয়ে ভায়োলেন্ট মুভি। টানা আট মিনিটের একটি ফাইট সিন। অ্যানিমেল মুভির ভিলেন ববি দেওল পর্যন্ত এই ছবির ট্রেলার শেয়ার করেছেন ইতিমধ্যেই। এই পারিয়া মুভিটি আসলে পথ কুকুরদের ওপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে এক সাধারণ মানুষের রুখে দাঁড়ানোর গল্প।
কুকুর বিড়াল আদতে অবলা জীব। সমাজের বহু মানুষ এই অবলাদের নিজের সন্তানের মত ভালোবাসেন। কিন্তু যতক্ষণে এই প্রতিবেদন পড়ছেন, ততক্ষণে ভারতবর্ষে প্রায় আটটা কুকুর মারা গেছে মানুষের অত্যাচারে। কখনও মুখে বোম ঢুকিয়ে, কখনও পিটিয়ে, কখনও আবার গায়ে অ্যাসিড বা গরম জল ছুঁড়ে পথ কুকুরদের মেরে ফেলে মানুষেরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনও শাস্তি হয় না। এই অত্যাচারিত বোমা জীবদের প্রতিবাদের ভাষায় হল পারিয়া।
শহর কলকাতায় ঘটে যাওয়া বেশ কিছু সত্যি ঘটনার উপর তৈরি এই মুভি নাকি বাংলা ছবির ইতিহাসের সবচেয়ে ভায়োলেন্ট মুভি হতে চলেছে। তবে এই মুভিতে পথ কুকুরদের ওপর কোনও অত্যাচারের দৃশ্য দেখানো হয়নি বরং কুকুরদের ওপর অত্যাচার করা মানুষদের নৃশংস শাস্তি দিয়েছে এই মুভির নায়ক বিক্রম। এই মুভির ডিরেক্টর তথাগত মুখার্জি এবং নায়ক বিক্রম চ্যাটার্জী দুজনেই সারমেয়প্রেমী। কলকাতা শহরে কুকুরদের ওপর যখনই কোনও অত্যাচার হয়েছে বিক্রম-তথাগত বরাবর ছুটে গেছেন। এই মুভির আরেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র শ্রীলেখা মিত্রও কুকুরদের হয়ে লড়াই করেন। মোট কথা, সমস্ত ডগ লাভাররা এক জায়গায় জড়ো হয়ে এই মুভিটা বানিয়েছেন।
কিন্তু হঠাৎ একটা বাংলা ছবির বিষয়বস্তুতে কুকুর কেন? আর বাংলা ছবি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার তরুণ প্রজন্ম পারিয়া কেনই বা দেখতে যাবে? মুভি ডিরেক্টর তথাগত এবং নায়ক বিক্রমের কথায়, 'এই মুভিটা সমস্ত বয়সী মানুষদের দেখা উচিৎ। ভারতবর্ষে প্রায় ৬ কোটি পথ কুকুর রয়েছে। সংখ্যাটা কি খুব কম! নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যেভাবে জওয়ান, কেজিএফ দেখে আনন্দ পায়, আমরাও চেষ্টা করেছি সেই হার্টকোর মশালা মুভির মোড়কেই এই ছয় কোটি বোবা জীবের ভালোবাসাটা সবার মধ্যে পৌঁছে দিতে।'
কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাস তো ভালোবাসার মাস। এই ভালোবাসার মাসে এত রক্তারক্তি এত ভায়োলেন্স দেখবে কেন মানুষ? এই প্রশ্নের উত্তরে তথাগত মুখার্জি বলেন, কুকুরের প্রতি মানুষের ভালবাসাটা কি ভালোবাসা নয়? আজ যদি কোনও বয়ফ্রেন্ডের চোখের সামনে তার গার্লফ্রেন্ডকে অথবা কোনও ছেলের চোখের সামনে তার মাকে অত্যাচারিত হতে হয়, তাহলে কি তারা রুখে দাঁড়াবে না? ভালোবাসাই তো তাদের বাধ্য করবে অ্যাকশন নিতে।'
কলকাতা শহরে একটানা ২৪-২৫ দিন ধরে শ্যুটিং হয়েছে এই মুভিটির। তবে, এই মুভির ভিলেন নাকি বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে চমকে দেবে। আর তাই হয়তো এই ছবির ট্রেলার দেখে অ্যানিমেলের আবরার হক অর্থাৎ ববি দেওল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন টিম পারিয়াকে।
পারিয়া মুভির গল্প একটা বাচ্চা কুকুরের হারিয়ে যাওয়াকে নিয়ে। শহর কলকাতায় এক বৃদ্ধার ভাতের হোটেলে রোজ দিন একটা ছেলে খেতে আসে। সে কারখানায় কাজ করে, হোটেলে এসে সে চুপচাপ খাবার খেয়ে চলে যায়। কোনও মানুষের সঙ্গে কথা বলে না। কিন্তু সেখানেই একটা বাচ্চা কুকুরের সঙ্গে ওই ছেলেটার একটা ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর তারপরে আচমকা কারা যেন ওই কুকুরটাকে উধাও করে দেয়। একটা হারিয়ে যাওয়া বাচ্চা কুকুরের জন্য এক সাধারন মানুষ কতদূর পর্যন্ত লড়াই করতে পারে, তারই গল্প বলবে পারিয়া।
মুভিটার কথা শুনে অনেকেরই জন উইক বা ৭৭৭ চার্লির কথা মনে পড়বে। তবে, টিম পারিয়ার দাবী তাদের মুভির গল্পটা সম্পূর্ণ আলাদা। আর তাদের এই দাবী কতটা সত্যি তা জানা যাবে ৯ই ফেব্রুয়ারি। কারণ এই তারিখেই সারা বাংলাতে মুক্তি পাচ্ছে পারিয়া মুভিটি।
No comments:
Post a Comment