'নির্বাচনী বন্ড অসংবিধানিক', রায় সুপ্রিম কোর্টের
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৫ ফেব্রুয়ারি: নির্বাচনী বন্ড মামলার বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে এবং অবিলম্বে এটি নিষিদ্ধ করেছে। আদালত বলেছে যে, এই প্রকল্পটি আরটিআই লঙ্ঘন। শুধু তাই নয়, ৬ মার্চের মধ্যে এসবিআই-কে নির্বাচনী বন্ডের তথ্য দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মোট চারটি পিটিশন দাখিল করা হয়। গত বছরের অক্টোবরে আদালত এ বিষয়ে শুনানি করে এবং নভেম্বরে সিদ্ধান্ত সংরক্ষণ করে। বৃহস্পতিবার নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশনের উপর রায় দেওয়ার সময়, সিজেআই ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, 'বেঞ্চের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মত। যদিও, এই ক্ষেত্রে দুটি সিদ্ধান্ত আছে, কিন্তু উপসংহার একটি।'
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে, সরকার যুক্তি দিয়েছিল যে, এই প্রকল্প কালো টাকা বন্ধ করবে। কিন্তু এই যুক্তি মানুষের জানার অধিকারকে প্রভাবিত করে না। এই প্রকল্পটি আরটিআই লঙ্ঘন। আদালত বলেছে যে, 'সরকার দাতাদের গোপনীয়তা বজায় রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেছে। কিন্তু আমরা এটার সাথে একমত নই।'
আদালত বলেছে, নির্বাচনী বন্ড স্কিম ১৯ ১(এ) ধারার অধীনে সুরক্ষিত জানার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে। যাইহোক, প্রতিটি অনুদান সরকারি নীতিকে প্রভাবিত করার জন্য নয়। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণেও মানুষ দান করে। এটা প্রকাশ্যে করা ঠিক হবে না। তাই ক্ষুদ্র অনুদানের তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা ভুল হবে। একজন ব্যক্তির রাজনৈতিক ঝোঁক গোপনীয়তার অধিকারের আওতায় আসে।
সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে বড় কথা
- নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প অসাংবিধানিক।
- নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প আরটিআই লঙ্ঘন।
- ২০১৭ সালে আয়কর আইনে করা পরিবর্তন (এমনকি বড় অনুদান গোপন রাখা) অসাংবিধানিক।
- ২০১৭ সালে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের পরিবর্তনও অসাংবিধানিক।
- কোম্পানি আইনের পরিবর্তনও অসাংবিধানিক।
- এই সংশোধনীর কারণে লেনদেনের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত অনুদানের তথ্যও লুকানো হয়।
- এসবিআই-কে ৬ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে সব পক্ষের প্রাপ্ত অনুদানের তথ্য দিতে হবে।
- নির্বাচন কমিশনকে ১৩ মার্চের মধ্যে তাদের ওয়েবসাইটে এই তথ্য প্রকাশ করতে হবে।
- রাজনৈতিক দলগুলি সেই বন্ডগুলি ফেরত দিক যা এখনও ব্যাঙ্কে নগদ করা হয়নি৷
নির্বাচনী বন্ড স্কিম কি ছিল?
কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প শুরু করেছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত অর্থায়নে স্বচ্ছতা আনার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এটি চালু করা হয়েছে। এটি রাজনৈতিক দলগুলিকে দেওয়া নগদ অনুদানের বিকল্প হিসাবে দেখা হয়েছিল। স্টেট ব্যাঙ্কের ২৯টি শাখায় নির্বাচনী বন্ড পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে যেকোনও নাগরিক, কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান যেকোনও দলকে অনুদান দিতে পারত। এই বন্ডগুলি ১০০০ টাকা, ১০ হাজার টাকা, ১ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকার হতে পারে। বিশেষ বিষয় হল বন্ডে দাতাকে তার নাম লিখতে হবে না।
যাইহোক, এই বন্ডগুলি শুধুমাত্র সেই রাজনৈতিক দলগুলিই পেতে পারে যেগুলি জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এর ধারা ২৯এ-এর অধীনে নিবন্ধিত এবং যারা গত লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে এক শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে৷
No comments:
Post a Comment