বউয়ের জন্য আইসক্রিম কিনতে রাস্তার দোকানে কেজিএফ-এর রকিভাই!
প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২১ ফেব্রুয়ারি: কেজিএফের রকি ভাই, বউয়ের জন্য আইসক্রিম কিনছেন রাস্তার পাশে সস্তা দোকান থেকে। হ্যাঁ ঠিকই দেখছে, এটাই কেজিএফ মুভির নায়ক রকিং স্টার ইয়াশ। যার স্টাইলে ভারত বাংলাদেশের ছেলে মেয়েরা ফিদা।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে ইয়াশের বউ রাধিকা একটা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে, সেই আইচ ক্যান্ডি অর্থাৎ কাঠি আইসক্রিম খাচ্ছেন। এ যেন কোনও নিম্ন মধ্যবিত্ত বিবাহিত কপলের ভালোবাসার মুহূর্ত। কে বলবে দেখে এই মানুষটা আদতে প্যান ইন্ডিয়া স্টার। ইয়াশ চাইলে ভারতবর্ষের সবচেয়ে দামি আইসক্রিমটা কিনে দিতে পারতেন নিজের বউকে। কিন্তু না, এতটাই সাধারণ এবং সহজ সরল জীবন যাপন করতে ভালোবাসেন কেজিএফ-এর রকি ভাই এবং তার পুরো পরিবার। এই ছবির পিছনে লুকিয়ে থাকা কাহিনীটা জানতে ইচ্ছে করছে নিশ্চয়ই? আগেই বলে দি, এটা কিন্তু কোনও মুভি বা বিজ্ঞাপনের শুটিং নয়, একদম রিয়েল লাইফে সুন্দর একটা মুহূর্ত।
সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ ছাড়া কোনও কাজেই হাত দেন না সুপারস্টার ইয়াশ। আর তাই আগামী মুভি শুটিং শুরু করার আগে নিজের স্ত্রী রাধিকা এবং দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ইয়াস গিয়েছিলেন পুজো দিতে। কর্নাটকের সিরালি গ্রামের চিত্রপুর মঠ মন্দিরে। এখানে পুজো দিয়ে বেরোনোর সময় আচমকাই ইয়াসের স্ত্রী রাধিকা আবদার করে বসেন কাঠি আইসক্রিম খাওয়ার জন্য। অন্য কোনও সুপারস্টার হলে হয়তো নিজের ড্রাইভার অথবা গার্ডকে দিয়ে আইসক্রিম আনিয়ে নিতেন। কিন্তু ইয়াশ এসবের ধার ধারের না। তিনি নিজেই বউ রাধিকাকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হলেন একটা স্থানীয় দোকানে। বৌকে আইসক্রিম কিনে দিয়ে, বাচ্চাদের জন্য সেই দোকান থেকে লজেন্স কিনলেন ইয়াস।
ইয়াশকে এভাবে দোকানে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম আর লজেন্স কিনতে দেখে, ফ্যানেরা অবাক হয়ে ফটাফট ছবি তুলতে থাকেন। আর সেই ছবিগুলোই এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ইয়াশের সাধারণ জীবন যাপন দেখে মুগ্ধ সকলে।
আসলে ইয়াশের এই সহজ সরল জীবন যাপনের পেছনে ওঁর বাস ড্রাইভার বাবার অবদান অনেক। ছেলে সুপারস্টার হয়ে যাওয়ার পরেও ভদ্রলোক বাস ড্রাইভার এর কাজ ছাড়েননি। গর্বের সঙ্গে বাস চালিয়েছেন বছরের পর বছর। এক সময় মাত্র ৩০০ টাকা পকেটে নিয়ে মাইসরে বাড়ি ছেড়ে ব্যাঙ্গালোরে পা রেখেছিলেন ইয়াশ। স্বপ্ন দেখেছিলেন, সিনেমায় কাজ করার। আসলে সেই সময় অনেক স্ট্রাগেল আর অভাব দেখেছিলেন ইয়াশ। আর তাই প্যান ইন্ডিয়া সুপারস্টার হওয়ার পরেও, ইয়াশের পা মাটি ছুঁয়ে রয়েছে।
শুধু এই ছবিগুলোই নয়, কিছুদিন আগে ইয়াসের আরেকটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। যেখানে ভারতের জাতীয় পতাকা হাতে, খালিপায়ে দাঁড়িয়ে আছে ইয়াস এবং তার পরিবার। কোনও পবিত্র জিনিস স্পর্শ করার আগে অথবা সৃষ্টিকর্তার উপাসনা গৃহে ঢোকার আগে আমরা যেরকম জুতো খুলে রাখি, তেমনই জাতীয় পতাকা ছোঁয়ার আগে জুতো খুলে খালি পায়ে দাঁড়িয়েছিলেন ইয়াশ। আর সেটাই উচিত। আসলেই এই শিক্ষাগুলো একজন মানুষকে আর পাঁচটা মানুষের থেকে আলাদা করে তোলে। তবে ইয়াষকে মানুষ ভালোবাসেন তার সমাজ সেবামূলক কাজের জন্য।
সালটা ২০১৮, কেজিএফ পার্ট ওয়ান তখনও মুক্তি পায়নি। সেই সময় দাঁড়িয়েও জল কষ্টে ভোগা পাঁচটি গ্রামে ৪ কোটি টাকা খরচ করে জল পাঠিয়েছিলেন আমাদের রকি ভাই। এ ছাড়াও কোভিডের সময় ৩০০০ জন অসহায় মানুষকে ত্রাণ পাঠিয়ে প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন ইয়াশ। গত সাত বছর ধরে নিজের ইয়াসোমার্গা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সমাজের অসহায় মানুষদের পাশে থাকেন তিনি।
খেয়াল করে দেখবেন, আমাদের চারপাশে এরকম অনেক মানুষ রয়েছে যারা টিভি সিরিয়াল করে অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটু জনপ্রিয় হলেই নিজেদের কেউকেটা মনে করতে শুরু করেন। ইয়াশের এই সাধারণ জীবন যাপন দেখে তাদের প্রত্যেকের শেখা উচিৎ, আসলে মানুষকে জনপ্রিয় করে তোলে তার কাজ পরিশ্রম। মিথ্যে দেখনদারি দিয়ে শেষমেষ কিছুই হয় না। দিনের শেষে এটাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন কেজিএফের রকি ভাই।
No comments:
Post a Comment