বহুমুখী গুণের অধিকারী হরিতকি
প্রেসকার্ড নিউজ,লাইফস্টাইল ডেস্ক,১৪ ফেব্রুয়ারি: হরিতকি বা মাইরোবালান আয়ুর্বেদে একটি উপকারী ভেষজ হিসাবে পরিচিত।আয়ুর্বেদেও এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।হরিতকি অনেক ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।ত্রিফলা চূর্ণ তৈরিতেও হরিতকি ব্যবহার করা হয়।এটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ।এছাড়া এটি পেট সংক্রান্ত অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি দিতেও সাহায্য করে।আজ আমরা জানাতে যাচ্ছি যে কখন এবং কীভাবে হরিতকি খাওয়া উপকারী।
ত্রিফলা চূর্ণ -
ত্রিফলা চূর্ণকে আয়ুর্বেদে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। আপনি এটি বাড়িতেও প্রস্তুত করতে পারেন।এক ভাগ হরিতকি গুঁড়ো,দুই ভাগ বহেড়া গুঁড়ো এবং তিন ভাগ আমলকি গুঁড়ো মিশিয়ে এটি তৈরি করুন।এই ত্রিফলা চূর্ণ খাওয়া কাশি,গ্যাস ও অম্লতা রোগে খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়।শীতকালে প্রতি রাতে গরম জলের সাথে ত্রিফলা গুঁড়ো খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
ওজন কমাতে সহায়ক -
আপনিও যদি ওজন কমাতে চান,তাহলে হরিতকি খাওয়া আপনার জন্য উপকারী হতে পারে।কারণ এটি খেলে গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।এর ফলে আপনার ওজনও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
হজমে সাহায্য করে -
হজম সংক্রান্ত সমস্যায় হরিতকি খাওয়া খুবই উপকারী।এটি বদহজম সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে কাজ করে।অনেক সময় আমরা খাবারে যে পুষ্টি গ্রহণ করি তা সঠিকভাবে শোষিত হয় না।এমন পরিস্থিতিতে হরিতকি খাবারে উপস্থিত পুষ্টি শোষণে সহায়ক।
গ্যাস এবং অ্যাসিডিটি থেকে সুরক্ষা দেয় -
শীতে আমাদের জীবনধারা বদলে যায়।এই মরসুমে তৈলাক্ত ও মশলাদার খাবার খাওয়া,কম জল পান করা এবং ব্যায়ামের অভাবের কারণে গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা শুরু হয়।এসব সমস্যায় হরিতকি খুবই উপকারী।গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গরম জলে হরিতকির গুঁড়ো মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে পান করুন।এটি আপনাকে দ্রুত স্বস্তি দেবে।
মাথা ব্যথা চলে যাবে -
শীতের মরসুমে ঠাণ্ডা বা বদহজমের কারণে মাথাব্যথা হয়। এমন অবস্থায় মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে গরম জলে হরিতকি গুঁড়ো মিশিয়ে পান করলে মাথা ব্যথা উপশম হয়।এছাড়া এর প্রকৃতি উত্তপ্ত।তাই শীতকালে এটি খাওয়া উপকারী।
কাশি উপশম করে -
শীতকালে মানুষ সাধারণত সর্দি,কাশি ও কফের সমস্যায় ভোগে।কফ বেড়ে গেলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।এমতাবস্থায় হরিতকি খাওয়া কফ গলতে সাহায্য করে এবং কফ থেকে মুক্তি দেয়।
শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে -
যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য হরিতকি খুবই উপকারী। এতে হাইপোগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়,যা শরীরে চিনির মাত্রা কমাতে সহায়ক।প্রতিদিন এটি খেলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ফোলা কমে যায় -
শরীরে ফোলার সমস্যা থাকলেও হরিতকি ব্যবহার করা যেতে পারে।কারণ এটি শরীরের ফোলাভাব কমাতে সহায়ক এবং এতে মনও সুস্থ থাকে।এটি খেলে মানুষ আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত হয় না।
জয়েন্টের ব্যথা থেকে মুক্তি দেয় -
শীতের মরসুমে প্রায়ই মানুষের জয়েন্টে ব্যথা শুরু হয়।এমন পরিস্থিতিতে হরিতকি খাওয়া উপকারী।এটি শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি বাত এবং জয়েন্টের ব্যথায়ও উপশম দেয়।
হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী -
হরিতকির ব্যবহার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং লিপিড গঠন রোধে সাহায্য করে।এটি হার্ট অ্যাটাক,ব্লকেজ, এথেরোস্ক্লেরোসিস এবং জমাট বাঁধা ইত্যাদির ঝুঁকিও কমায়।
গায়ের রং বাড়ায় -
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট,ম্যাগনেসিয়াম,পটাসিয়াম,ভিটামিন সি এবং আয়রনের মতো পুষ্টি উপাদান হরিতকিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।এই সমস্ত পুষ্টি উপাদান ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করতে কাজ করে।এতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি ত্বকের সংক্রমণ এবং অ্যালার্জি থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
খুব বেশি হরিতকি খাবেন না -
হরিতকি প্রয়োজনের বেশি ব্যবহার করা উচিৎ নয়।কারণ এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়।এটি অত্যধিক খাওয়া শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
বি.দ্র: এখানে দেওয়া তথ্য সাধারণ জ্ঞান ও ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে দেওয়া। প্রেসকার্ড নিউজ এটি নিশ্চিত করে না। কোনও নতুন কিছু শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অবশ্যই নিন।
No comments:
Post a Comment