আদরের পোষ্যদের জন্য হাসপাতাল টাটার! জানেন কী কী সুবিধা থাকছে? - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday 22 February 2024

আদরের পোষ্যদের জন্য হাসপাতাল টাটার! জানেন কী কী সুবিধা থাকছে?

 


আদরের পোষ্যদের জন্য হাসপাতাল টাটার! জানেন কী কী সুবিধা থাকছে? 




প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২২ ফেব্রুয়ারি: ১৬৫ কোটি টাকা খরচ করে পশুদের জন্য হাসপাতাল বানালেন শিল্পপতি রতন টাটা। মুম্বাইয়ের মহালক্ষ্মীতে ২.২ একর জমির ওপর এই ঝাঁ চকচকে ছয় তলা হাসপাতাল দেখলে আপনারও মাথা ঘুরে যাবে। ভারতবর্ষের বুকে এই পশু হাসপাতালের নাম রাখা হয়েছে 'টাটা ট্রাস্ট স্মল অ্যানিমেল হসপিটাল'। যেখানে কুকুর, বিড়াল, খরগোশের মত পোষ্যদের যত্ন নিয়ে চিকিৎসা করা হবে।


এই হাসপাতালটির বিশেষত্ব হল এটি খোলা থাকবে ২৪ ঘন্টা। আজ্ঞে হ্যাঁ! একই সাথে কোনও পশু যাতে বিনা চিকিৎসায় ফেরত না যায় সেদিকেও রয়েছে কড়া নির্দেশ।তাই আসুন এই প্রতিবেদনে জেনে নিই ভারতবর্ষের সবথেকে বড় পশু হাসপাতালের সম্পর্কে। পশুদের চিকিৎসার জন্য কী কী সুবিধা রাখা রয়েছে এই হাসপাতালে।


মিস্টার রতন টাটা আগাগোড়াই একজন পশুপ্রেমী মানুষ, যে মানুষটা তাঁর পোষ্য কুকুরের অসুস্থতার জন্য, ইংল্যান্ডের প্রিন্স চার্লসের থেকে লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্টের মতো বড়ো অ্যাওয়ার্ড পর্যন্ত নিতে যাননি। আজ্ঞে হ্যাঁ! এতটাই ভালোবাসেন তিনি এই অবলা জীবদের। মুম্বাইয়ের টাটা গ্রুপের হেড কোয়াটারে শুধু রাস্তার কুকুরদের জন্য আলাদা একটি জায়গা রাখা রয়েছে, যেখানে মিস্টার টাটা প্রতিদিন অফিসের কাজের পর নিজে গিয়ে ওই কুকুরদের সাথে সময় কাটান। তাদের যত্ন নেন। এমনকি কেরালের হাতি মৃত্যুর ঘটনাকেও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মিস্টার টাটা। 


তাঁর প্রতিবাদের ফলস্বরূপ কেরল সরকারও বাধ্য হয়েছিল তাঁর কাছে জবাবদিহি করতে। তাই মুম্বাইয়ের রাস্তায় কুকুরদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে, বৃষ্টির মরশুমে গাড়ি চালকদের উদ্দেশ্যে চারচাকা স্টার্ট করার আগে গাড়ির নিচে দেখে নেওয়ার বার্তা, কখনও বা রাস্তার কুকুরদের চিকিৎসা আবার কখনও তাদের দত্তক নেওয়া, সবেতেই এই ৮৬ বছর বয়সের মানুষটার মানবিক মুখ বার বার উঠে এসেছে। 


রতন টাটা স্বপ্ন দেখতেন, মুম্বাইয়ের মত শহরে পশুদের জন্য অত্যাধুনিক একটি হাসপাতাল তৈরি করবেন। তাই তাঁর এই 'পেট প্রজেক্ট'-এর স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবায়িত হল। মার্চে শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের জন্য খুলে যাচ্ছে এই হাসপাতালের দরজা। এই হাসপাতালে পশুদের জন্য মোট ২০০ টা বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছয় তলা এই হাসপাতালে নেতৃত্ব দেবেন ব্রিটিশ পশু চিকিৎসক টমাস হিথকোট। এই হাসপাতালে পশুদের জন্য এমার্জেন্সি এবং ক্রিটিকাল কেয়ার তো রয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে যে কোনও ধরণের গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরিসেবা। থাকছে আইসোলেশন ইউনিট সহ আইসিইউ। থাকছে ইন পেসেন্ট ইউনিট। এছাড়াও থাকছে অপারেশনের ব্যবস্থা। 


হাসপাতালের মধ্যে দরকারি ওষুধের দোকান থাকার পাশাপাশি পশুদের জন্য এমআরআই, এক্সরে, সিটি স্ক্যান, ইউএসজি করারও সুব্যবস্থা রয়েছে। একই সাথে পশুদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য থাকছে উন্নতমানের সব ল্যাবরেটরি। এছাড়াও থাকছে অ্যানাসথেসিয়ার সুবিধাও। আমাদের দেশে পশুদের চিকিৎসার জন্য ভালো পরিকাঠামো নেই। তাই অনেক মানুষই তাদের পশুদের ভালোভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। আবার সবার পক্ষে বিদেশে গিয়েও ট্রিটমেন্ট করিয়ে আনা সম্ভব হয় না। 


এছাড়াও আমরা রাস্তা ঘরে চলতে ফিরতে অনেক অবলা প্রাণীদের অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। যাদের ওপর অত্যাচারের খবরও কানে আসে। কিন্তু এই অবলা প্রাণীদের মিস্টার রতন টাটা নিজের পরিবারের একজন সদস্য মনে করে। তাই তাদের আদর যত্ন এবং চিকিৎসায় যাতে কোনও ফাঁক না থাকে সেজন্যই তিনি এই পেট প্রজেক্টটি শুরু করেছিলেন। 


মিস্টার টাটা বলেন, 'এই হাসপাতাল নির্মাণ করা আমার স্বপ্ন ছিল। শহরগুলিতে অত্যাধুনিক পশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকা খুবই জরুরি। এই বিরাট দেশে সেই অর্থে পশু চিকিৎসার কোনও পরিকাঠামোই নেই। তা থেকেই এই হাসপাতালের ভাবনা। এখন এই হাসপাতাল চালুর পথে। স্বভাবতই আমি ভীষণ খুশি।' 


তাই এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। দেশের অন্যতম বড় পশু চিকিৎসা হাসপাতালের পরিষেবা ঠিক কেমন হতে চলেছে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে গোটা দেশের মানুষ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad