শিবু হাজরা গ্রেফতার
উত্তর ২৪ পরগনা: উত্তম সর্দারকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল, এ বার সন্দেশখালি ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শিবপ্রসাদ (শিবু) হাজরাকেও গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার বিকেলে ন্যাজাট থেকে তাঁকে ধরা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ দিনই উত্তম ও শিবপ্রসাদের বিরুদ্ধে এলাকায় গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত শাহজাহান এবং তার দুই শাগরেদ শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ সন্দেশখালির মানুষের ক্ষোভ দাবানলের চেহারা নেয়। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা। শাহজাহানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত শিবু হাজরার বিরুদ্ধে জমি কেড়ে নেওয়া থেকে মহিলাদের শ্লীলতাহানির অভিযোগও ওঠে। শুধু তাই নয়। জানা গিয়েছে, এক মহিলার গোপন জবানবন্দীর ভিত্তিতে শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে সন্দেশখালি থানার পুলিশ গণধর্ষণের মামলার রুজু করেছে। তারপরেই এদিন শিবু হাজরার গ্ৰেফতারির খবর সামনে আসে।
উত্তম সর্দারকে গত শনিবার গ্রেফতার করা হলেও ফেরার ছিলেন শিবু। শনিবার ধরা পড়লেন তিনি। রবিবার তাকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করা হবে। অপরদিকে, এই ঘটনায় উত্তমকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হয়েছে আদালতের কাছে। আট দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এদিকে শনিবারও শিবু হাজরা দাবী করেন, তিনি অন্তরালে নয়, উন্নয়নের কাজে রয়েছেন। তিনি বলেন, 'বিরোধীরা বিভ্রান্তিকর কথা বলছে। সাধারণ মানুষ জানেন আমরা কীভাবে মানুষের পাশে থাকি, উন্নয়ন করি।'
গত কয়েকদিন ধরেই সন্দেশখালিতে মহিলাদের ওপর নির্যাতনের একের পর এক অভিযোগে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজানের সঙ্গী শিবপ্রসাদ হাজরা এবং উত্তম সর্দারের ইন্ধনে সন্দেশখালিতে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন চলতো, রাতে মহিলাদের ডেকে পাঠানো হতো পার্টি অফিসে। সংবাদমাধ্যমেও উঠে এসেছে একাধিক নিন্দনীয় ঘটনা।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকেই শিরোনামে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি। তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হন ইডির আধিকারিকরা। তারপর থেকেই নিখোঁজ শাহাজাহান। এরপর ৯ই ফেব্রুয়ারি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। শাহজাহান ঘনিষ্ঠ শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারের গ্রেফতারের দাবীতে ফুঁসে ওঠেন গ্রামবাসীরা। দীর্ঘদিন ধরে চলা অত্যাচারের বিরুদ্ধে ঝাঁটা হাতে আন্দোলনে শামিল হন মহিলারা।
No comments:
Post a Comment