বিয়েবাড়িতে বিনা নিমন্ত্রণে ধরা পড়লেই ২ বছরের জেল!
প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২০ ফেব্রুয়ারি: সেজেগুজে বিয়ে বাড়ি গেলেন মাছ-মাংস খাবেন ভেবে, আর দু'বছরের জন্য খেতে হল জেলের মোটা চালের ভাত আর জলের মতো ডাল! কি শুনে চমকে উঠলেন তো? তবে আসুন আজকের লেখার মাধ্যমে আপনাদের সামনে এমন একটি তথ্য তুলে ধরি, যা শোনার পর বিয়ে বাড়ি খেতে যাওয়ার আগে ১০০ বার ভাববেন।
আমরা সবাই জানি ভারতবর্ষে কোনও পরিবারের বিয়ের অনুষ্ঠান হলে আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশীদের ডেকে নেমন্তন করে ভালো মন্দ খাওয়ানো প্রথা রয়েছে। আর এই অনুষ্ঠান বহু প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে এবং প্রত্যেকটি বিয়ে বাড়িতে নিমন্ত্রিত ব্যক্তিদের সংখ্যা অনুযায়ী খাবার পরিমাণ একটু বেশিই রাখা হয়। কারণ আমরা সবাই দেখেছি প্রচুর বিয়ে বাড়িতে বহু মানুষ বিনা নেমন্তনে খেয়ে যান। কেউ আসেন অভাবের তাড়নায় , কেউ আসেন ভালো-মন্দ খাওয়ার আশায়, আর কেউ কেউ আসেন স্রেফ মজা করার জন্য। আপনিও যদি এই মজা করে ধরা পড়েন, তাহলে আপনার এই মজার শাস্তি হিসেবে দু'বছরের জেল হতে পারে আপনার।
না না ভুল শুনেন নি একদম ঠিক শুনেছেন। আইপিসি বা ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ধারা ৪৪২ এবং ধারা ৪৫২ লাগু হতে পারে আপনার ওপর। যখন কোনও মানুষ বিনা অনুমতিতে কারও বাড়ি বা তাবুতে ঢুকে পড়েন যেখানে আগে থেকেই কোন কেউ বসবাস করছে তাহলে বিনা অনুমতিতে কারও ব্যক্তিগত স্থানে প্রবেশ করার জন্য সেই ব্যক্তির ওপর ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৪২ লাগু হয়।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৫২ কখন লাগু হয় জানেন? যখন কোন ব্যক্তি তার বিনা অনুমতিতে ঢুকে সেখানে বসবাসরত ব্যক্তির ক্ষতিসাধন করে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৫২ অনুযায়ী একজন ব্যক্তির ৭ বছর অব্দি জেল হতে পারে। অবশ্য দোষ এবং ক্ষয়ক্ষতির ওপর শাস্তির বাড়ি বা কমা নির্ভর করে। বিনা নেমন্তন্নে কোন বিয়ে বাড়িতে ঢুকে খাওয়াকে যতই মজার ছলে দেখা হোক, তার শাস্তি কতটা গুরুতর হতে পারে বুঝতে পারছেন তো?
আসলে বিনা নিমন্ত্রণে খাবার খাওয়ার হিড়িক ক্ষেত্রে কলেজ এবং স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যেই দেখা যায়। শীতকালে সন্ধ্যেবেলা টিউশন ছুটির পর দল বেঁধে ছেলেরা ঢুকে পড়ে বিয়ে বাড়িতে এবং চটপট খাবারের স্টলে গিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খাবার খেয়ে বেরিয়ে আসে। মাঝে মাঝে বিয়ে বাড়ির লোকের হাতেও ধরা পড়ে যায় কেউ কেউ। এমন মজার ঘটনা মফঃস্বলের বিয়ে বাড়িতে হামেশাই ঘটে থাকে।
এবার ব্যাপারটা একটু অন্যভাবে দেখা যাক। ধরুন কোনও ব্যক্তি তাঁর কষ্টের উপার্জনের সমস্তটুকু ব্যয় করে তাঁর ছেলে বা মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন। সেই রকম একটা বিয়ে বাড়িতে আপনি কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঢুকে পড়লেন। খেয়ে বেরিয়েও এলেন। এবার আপনাদের খাবার খেয়ে ফেলার ফলে আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের খাবারে ঘাটতি দেখা গেল। যে মানুষটা জীবনের সমস্ত উপার্জন ব্যয় করে ফেলেছেন এই বিয়েতে, তাঁর অবস্থাটা ভাবুন। সব টাকা খরচ করেও তাঁর সম্মান মাটিতে মিশে গেল কয়েকজনের মজা করার জন্য। একটা মজা কোন মানুষের সম্মানহানের কারণ হোক, এটা কখনই কাম্য নয়। তাই একজন সভ্য নাগরিক হিসেবে সবসময় আমাদের উচিৎ কিছু ক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকা। তাহলেই একটা সুস্থ এবং স্বাভাবিক সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।
No comments:
Post a Comment