পরজীবী আক্রান্ত মুরগির লক্ষণ-রোগ প্রতিরোধ
রিয়া ঘোষ, ৩১ মার্চ : অন্ত্রের পরজীবী সংক্রমণ মুরগির মধ্যে সাধারণ। আর এসব কৃমি মুরগি নিঃসন্দেহে খামারিদের জন্য ক্ষতির কারণ। তবে উন্নত ব্যবস্থাপনা, স্বল্পমেয়াদী মুরগি বিশেষ করে ব্রয়লার পালন, খাঁচায় মুরগি পালন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে মুরগির খামারে অভ্যন্তরীণ পরজীবী বা পোকামাকড়ের কারণে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে গেছে। তবে, অনেক সময় এটি কৃমি দ্বারা সংক্রামিত পাওয়া যায় বিশেষ করে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পালিত গৃহপালিত মুরগি এবং পাড়া ও প্রজননকারীদের গভীর আবর্জনার মধ্যে।
মুরগির কৃমি:
কেঁচোর মতো দেখতে এই পোকাগুলোকে কৃমি বলা হয়। এরা মুরগির ক্ষুদ্রান্ত্রে বাস করে। মুরগি ছাড়াও, এই কীটটি গিনি ফাউল, টার্কি, রাজহাঁস এবং বন্য প্রাণীকেও সংক্রমিত করে। কেঁচো এবং ফড়িং তাদের ডিম খায় এবং রোগ ছড়াতে সাহায্য করে। বয়স্ক মুরগির তুলনায় অল্প বয়স্ক মুরগি এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। গোলকৃমি ২-৫ ইঞ্চি লম্বা হয়। বৃহত্তর কৃমি খাদ্যনালীতে ডিম পাড়ে যা মল দিয়ে বের হয়ে যায় এবং খাদ্য বা জলের মাধ্যমে সুস্থ মুরগিকে সংক্রমিত করার জন্য শরীরে পুনরায় প্রবেশ করে।
লক্ষণ:
শারীরিক বিকাশ স্বাভাবিক হবে না। আক্রান্ত মুরগি সঙ্কুচিত হবে। ডানা ঝাপটাবে। আলগা মল থাকবে। ডিম পাড়া কমবে।
চিকিৎসা:
নিচের যে কোনও একটি অ্যানথেলমিন্টিক ওষুধ খাবার বা জলের সঙ্গে মিশিয়ে সংক্রমিত মুরগিকে খাওয়াতে হবে। তারপর ২১ দিন পর এই ওষুধটি আবার একই পদ্ধতিতে দিতে হবে।
১) অ্যালবেন্ডাজল: প্রতি কেজি শরীরের ওজনের জন্য ১০-৪৫ মিলিগ্রাম খাবার বা জলের সাথে দিতে হবে।
২) ফেনবেন্ডাজল: প্রতি কেজি ওজনের ৬.২৫-১৬ মিলিগ্রাম খাবারের সাথে মেশাতে হবে।
৩) লেভামিসোল: প্রতি কেজি ওজনের ১৮-৩৬ মিলিগ্রাম খাবার ও জলের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে।
৪) মেবেন্ডাজল: ৫০ মিলিগ্রাম প্রতি কেজি ওজনের খাবার বা জলের সাথে মেশাতে হবে।
৫) Piperazine Adipate: প্রতি কিলোগ্রাম শরীরের ওজন ০.৫-১ গ্রাম।
৬) পাইপেরাজিন হেক্সাহাইড্রেট: ০.৫ গ্রাম প্রতি কেজি শরীরের ওজন (লার্ভার বিরুদ্ধে কার্যকর নয়) তবে ১.২ গ্রাম/কেজি শরীরের ওজন ১০-৩০ দিন পুরানো কৃমির বিরুদ্ধে কার্যকর।
৭) টেট্রামিজোল হাইড্রোক্লোরাইড: ৪০-৬০ মিলিগ্রাম প্রতি কিলোগ্রাম শরীরের ওজন সব বয়সের পোকামাকড়ের জন্য প্রযোজ্য।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা:
খামারের পরিবেশ সবসময় সুস্থ রাখতে হবে। বন্য পাখি সহ প্রাপ্তবয়স্ক পাখির সাথে বাড়ন্ত মুরগির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। কেঁচো রোগ ছড়ায়। এ কারণে মুরগি যাতে কেঁচো না খায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
No comments:
Post a Comment