বাংলায় মিলল জাল লটারি চক্রের হদিস
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ০৭ মার্চ: বিহার থেকে সক্রিয় জাল লটারি চক্রের ব্যবসা। জাল লটারি বিক্রির জন্য চাপ এক লটারি ব্যবসায়ীকে। তিনি বিক্রি করতে অস্বীকার করলে জাল লটারি ব্যবসার পান্ডা এবং ওই লটারি বিক্রেতার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মারধর এবং ভাঙচুরের অভিযোগ। আবার এই প্রসঙ্গে ওই লটারি ব্যবসায়ীর স্ত্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে অভিযোগ নিলেও পাননি রিসিভ। এমনকি, রিসিভ চাইতে গেলে জিডিতে থাকা পুলিশ অফিসার হেনস্থা এবং অশালীন মন্তব্য করেন বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ। সমগ্র ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ ওই লটারি ব্যবসায়ীর স্ত্রী। যদিও ওই পুলিশ অফিসার সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছেন। তিনি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার দাবী তুলেছেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে স্তম্বিত গোটা হরিশ্চন্দ্রপুর।
স্বামীকে জাল লটারি বিক্রি করতে বাধ্য করা এবং তার কাছ থেকে টাকা ছিনতাই ও মারধর করা হয়েছে এই নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে অভিযোগ রিসিভ না করে এলাকার এক গৃহবধূকে অশালীন মন্তব্য ও কুরুচিকর ইঙ্গিত করার অভিযোগ উঠল হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার বরুই অঞ্চলের বাসিন্দা লিপি মণ্ডলের অভিযোগ, তার স্বামী দ্বীপেশ মণ্ডলকে জাল লটারি টিকিট বিক্রি করার পরামর্শ দেন এলাকার বাসিন্দা তথা তার ভাই তপেস মণ্ডল এবং বিহারের বাসিন্দা মোহাম্মদ খাতিব। কিন্তু তিনি সেই জাল লটারির টিকিট বিক্রি করার প্রস্তাবে অস্বীকার করলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় এবং তার কাছ থেকে ২৪ হাজার ৫০০ টাকা ছিনতাই করে নেওয়া হয়। তার বাড়ি-ঘরেও ভাঙচুর চালানো হয়।
এই বিষয়ে তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে এলে সেই সময় ডিউটি অফিসার এসআই শঙ্কর রজক তাঁর অভিযোগ পত্রের রিসিভ দিতে অস্বীকার করেন। পাশাপাশি লিপি মণ্ডলকে দীর্ঘক্ষণ থানায় বসিয়ে রাখা হয়। লিপি মণ্ডলের আরও অভিযোগ, এমনকি থানার বাইরে এসে এসআই শঙ্কর রজক তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, অশালীন ভাষায় কথা বলেন এবং কুরুচিকর ইঙ্গিত করেন। এরপরই তিনি তার অভিযোগ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে দ্বারস্থ হন।
এ প্রসঙ্গে লিপি দেবী বলেন, 'আমি অভিযোগ দিতে গেলে আমার অভিযোগ নেওয়া হয়নি। উল্টে, যারা আমার সঙ্গে এবং আমার স্বামীকেকে মারধর করেছিল তাদের অভিযোগ নেওয়া হয়। আমাকে জল পর্যন্ত খেতে দেওয়া হয়নি। উল্টে আমার ফোন নম্বর নেন ওই আধিকারিক এবং থানার বাইরে এসে আমার সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলেন। আমি সুবিচার চেয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। এখনও এলাকা ছাড়া হয়ে আছি বাড়ি ফিরতে পারিনি ওদের ভয়ে।'
এসআই শঙ্কর রজকের কথায়, 'উনি ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। আমি কোনও বাজে ব্যবহার ওনার সঙ্গে করিনি।আমি যদি ওনার সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করে থাকি তাহলে সেটা থানার সিসিটিভি ফুটেজই ধরা পড়বে। ওনার স্বামীর বিরুদ্ধে উল্টে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি কোর্টে চলে গিয়েছে। এখন বিচারাধীন রয়েছে।'
অভিযুক্ত দেওর তপেস মণ্ডলের দাবী, 'লিপি মণ্ডলের অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওরা নিজেরা নিজেদের আঘাত করে এখন আমাকে এবং ওই পুলিশ আধিকারিককে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।'
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার অভিযোগ হয়েছে, সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানান, ঘটনার অভিযোগ হয়েছে। চাঁচল মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে এ বিষয়ে সম্পূর্ণ তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment