মাছের ক্ষত রোগ চেনার উপায় এবং প্রতিরোধ
রিয়া ঘোষ, ১৮ মার্চ : মাছের ক্ষত রোগ (লাল ক্ষত রোগ)-এপিজুটিক আলসারেটিভ সিনড্রোম: এই রোগটি অ্যাফানোমাইসিস নামক এক ধরণের ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয় যা একটি নির্দিষ্ট জলজ পরিবেশে আক্রমণ করে, প্রথমে জলের দূষিত পরিবেশে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে।
সময়:
সাধারণত শীতের শুরুতে ও শেষে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এই রোগটি সাধারণত তেলাপিয়া, কারপিও, মৃগেল, রুই, গ্রাসকার্প, কই, সরপুঁটি মাছে আক্রান্ত হয়।
কারণ:
• এই রোগের প্রধান কারণ হল Aphanomyces invadens নামক একটি ছত্রাক, প্রধানত যখন পেশী আক্রান্ত হয় এবং কিছু ব্যাকটেরিয়া প্রোটোজোয়াও আক্রমণ করতে পারে।
• তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়া (শীতকালে অর্থাৎ নিম্ন তাপমাত্রা), pH কমে যাওয়া, ক্ষারত্ব কমে যাওয়া, ক্লোরাইডের ঘাটতির কারণে জলের দূষিত পরিবেশ।
মাছের ক্ষত সনাক্ত করার উপায়:
• মাছের শরীরে ভারসাম্যহীনতা দেখা যায়। প্রাথমিক অবস্থায় শরীরে লাল ক্ষত দেখা দেয়, ধীরে ধীরে তা গভীর ক্ষতে পরিণত হয়। ক্ষতস্থানে পুঁজ থাকে। উপরন্তু, ক্ষতের চারপাশে তুলোর মতো খোসা দেখা যায়।
• আক্রান্ত মাছের শরীরে, বিশেষ করে মাথার পাশে এবং পিছনে লাল দাগ দেখা যায়।
• আক্রান্ত মাছ পুকুরের পাড়ে সাঁতার কাটতে থাকে।
প্রতিষেধক:
প্রতিরোধ রোগের চিকিৎসার চেয়ে বেশী ভাল। তাই এ রোগের প্রাদুর্ভাবের আগে শীত শুরু হওয়ার আগে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ০.৫ থেকে ১ কেজি শিলা চুন জলে গুলে তিন থেকে ছয় ফুট গভীরতার প্রতিটি জলাশয়ে স্প্রে করতে হবে।
চিকিৎসা:
• প্রতি আধা কেজিতে ৬ থেকে ৮ মিলি হারে লবণ ভালো মানের জীবাণুনাশক (BKC-80%) দিয়ে সমস্ত পুকুরে স্প্রে করতে হবে যাতে মাছের ক্ষত দেখা দেওয়ার সাথে সাথে সেরে যায়।
• অক্সিটেট্রাসাইক্লিন বা অ্যামোক্সিসিলিন গ্রুপের ওষুধ, প্রতি কিলোগ্রাম খাবারে ৫ থেকে ৭ গ্রাম, ভিটামিন সি (প্রতি কিলোগ্রাম খাবারে ৩ গ্রাম) মিশিয়ে ৫ থেকে ৭ দিন খাওয়াতে হবে।
• নিম গাছের ডালসহ পাতা জলে ভিজিয়ে রাখলেও ভালো ফল পাওয়া যায়।
No comments:
Post a Comment