কাঞ্চন-শ্রীময়ীর রিসেপশন পার্টিতে ঢোকা বারণ ড্রাইভার- সিকিউরিটি গার্ডের! কাঞ্চনের এই ঔদ্ধত্য মনে করালো ভারতীয়দের প্রতি ব্রিটিশদের অপমানকে - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday 8 March 2024

কাঞ্চন-শ্রীময়ীর রিসেপশন পার্টিতে ঢোকা বারণ ড্রাইভার- সিকিউরিটি গার্ডের! কাঞ্চনের এই ঔদ্ধত্য মনে করালো ভারতীয়দের প্রতি ব্রিটিশদের অপমানকে

 


কাঞ্চন-শ্রীময়ীর রিসেপশন পার্টিতে ঢোকা বারণ ড্রাইভার- সিকিউরিটি গার্ডের! কাঞ্চনের এই ঔদ্ধত্য মনে করালো ভারতীয়দের প্রতি ব্রিটিশদের অপমানকে 





প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ০৮ মার্চ: কাঞ্চন মল্লিক এবং শ্রীময়ী চট্টরাজের মতে সাংবাদিক, সিকিউরিটি গার্ড এবং ড্রাইভাররা বোধহয় মানুষ নন। তাই তাদের বিয়েবাড়িতে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। কথাটা আমরা বলছি না, কাঞ্চন এবং শ্রীময়ীর রিসেপশনের আমন্ত্রণ বোর্ডেই বড়ো বড়ো করে লেখা রয়েছে এই কথা। যে সাংবাদিকদের দৌলতেই আজ কাঞ্চন-শ্রীময়ী বিখ্যাত, যে পার্সোনাল সিকিউরিটি গার্ডরা তারকাদের নিরাপত্তা দেন, যে ড্রাইভার রা আমাদের নিদির্ষ্ট গন্তব্যে নিরাপদে পৌঁছে দেন, তাদের কী কোনও গুরুত্ব ই নেই? মনে পড়ে যাচ্ছে ইংরেজ আমলে ক্লাবের বাইরে লিখে রাখা একটা বোর্ডের কথা, যেখানে বড়ো বড়ো করে লেখা থাকতো "Dogs and Indians are not allowed"। কোথাও কী মিল পাচ্ছেন এই ঘটনাটার সঙ্গে? 


এবার আপনারা বলতেই পারেন এটা কাঞ্চন বাবু এবং শ্রীময়ী দেবীর পার্সোনাল পার্টি, সেখানে ওঁরা কাকে ঢুকতে দেবেন আর কাকে ঢুকতে দেবেন না, সেটা ওদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার। হ্যাঁ ঠিকই কথা সেটা। কিন্তু এভাবে প্রকাশ্যে ফতোয়া জারি করাটা একটা ঔদ্ধত্যের পরিচয়। এইভাবে ফতোয়া জারি করে সমাজের কিছু অংশের মানুষকে ব্রাত্য করে দেওয়াটা অপমানজনক। আর ঠিক সেই কারণেই সবাই ক্ষেপে গেছেন এই বিষয়টা নিয়ে। তবে এক্ষেত্রে কাঞ্চন মল্লিকের হয়ে অনেকেই সওয়াল ওঠাচ্ছেন। বলছেন এটা এমনিতেই কাঞ্চন বাবুর তৃতীয় বিয়ে, তার ওপর হাঁটুর বয়সী একটি মেয়েকে তিনি বিয়ে করেছেন। ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই নিয়ে সাংঘাতিক ট্রোল হচ্ছেন তিনি।এক্ষেত্রে হয়তো একটু শান্তির আশাতেই মিডিয়াকে আড়ালে রেখে রিসেপশানটা সারতে চাইছিলেন, যাতে আর কোনও নতুন খবর বাইরে না যায়। 


আমরা এই যুক্তি সসম্মানে মেনে নিলাম কিন্তু ড্রাইভার আর পার্সোনাল সিকিউরিটি গার্ড রা কি দোষ করল বলতে পারেন? ড্রাইভার কিংবা সিকিউরিটি গার্ডরা তো ক্যামেরা, মাইক, বুম হাতে নিয়ে কাঞ্চন বাবুর পিছনে ছুটতেন না কিংবা তাদের উত্ত্যক্ত করতেন না! তাহলে কেন ওই খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে এভাবে বোর্ড ঝুলিয়ে অপমান করা হবে বলতে পারেন? এক্ষেত্রেও অনেকে যুক্তি দিচ্ছেন, অনেক বিয়েবাড়িতেই তো ড্রাইভারদের গাড়িতে বসিয়ে রাখা হয়, তাদের কাছে প্যাকেট পৌঁছে দেওয়া হয়।বিয়েবাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তর্কের খাতিরে এই যুক্তি ও একদম ঠিক। কিন্তু এক্ষেত্রে একটা কথা বলি, গাড়ির ড্রাইভারদের একটা আত্মসম্মান আছে, ওরা গরীব হতে পারে কিন্তু তাই বলে ওরা যেখানে-সেখানে ঢুকে পড়ে না। আর পার।সোনাল সিকিউরিটি গার্ডরাও যেখানে সেখানে পাত পেড়ে খেতে বসে যায় না। 


তবে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা দেখেছি পারসোনাল সিকিউরিটি গার্ডদের সঙ্গে তারকাদের কতটা ভালো সম্পর্ক থাকে। সবচেয়ে বড়ো উদাহরণ সালমান খান এবং শেরা। তাই এমন বোর্ড ঝুলিয়ে এই দুই শ্রেণীর মানুষদের দূরে ঠেলে দেওয়াটা সত্যি সত্যিই ঔদ্ধত্যের পরিচয়। তবে সাধারণ মানুষ আরও আহত হচ্ছেন অন্য একটা বিষয় নিয়ে ভেবে, সেটা হল অভিনেতা, সেলিব্রেটি এই পরিচয় ছাড়াও কাঞ্চন বাবুর এখন একটা বড় পরিচয় আছে, এই রাজ্যের একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। এই সমস্ত ড্রাইভার এবং সিকিউরিটি গার্ডদের মতো খেটে খাওয়া মানুষেরাই ভোট দিয়ে ওঁকে নির্বাচনে জিতিয়েছেন। সমস্ত সাংবাদিক ভাই-বোনেরাই ওর কথা পৌঁছে দিয়েছেন সাধারণ মানুষের কাছে। আর সেই কারণেই উনি জনপ্রতিনিধি হয়ে উঠতে পেরেছেন। তাহলে কীভাবে একজন জনপ্রতিনিধি নিজের সবচেয়ে আনন্দের দিনটায় এভাবে ফতোয়া জারি করে ওদের ব্রাত্য করতে পারেন? 


কাঞ্চন মল্লিক কতবার বিয়ে করেছেন, কাকে ডিভোর্স দিয়েছেন কিংবা কার সাথে নতুন জীবন শুরু করতে চলেছেন, এই বিষয় নিয়ে আমাদের বিন্দু মাত্র মাথাব্যথা ছিল না কারণ ওটা ওঁর ব্যাক্তিগত ব্যাপার। আর কারও ব্যাক্তিগত জীবনে নাক গলানোটা আমাদের কাজ নয়। খবর তখনই তৈরি হল, যখন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের ফতোয়া জারি করে অপমান করা হল। উনি অবশ্য ফতোয়ার শেষ লাইনে আগেভাগে ক্ষমাও চেয়ে রেখেছেন, যাতে কেউ দুঃখ না পায়, যাতে কারও খারাপ না লাগে কিন্তু আমাদের মতে এই বোর্ডটা ঝোলানোর কোনও দরকারই ছিল না। আলাদা ভাবে মিডিয়াকে জানিয়ে দিলেই হতো গোটা বিষয়টা, তাহলে হয়তো জনতার মনে কাঞ্চন বাবু এবং শ্রীময়ী দেবীকে নিয়ে এই ক্ষোভ তৈরি হতো না। 


আসলে তারকা এবং জনপ্রতিনিধিদের অনেক দায়িত্ব থাকে এই সমাজের প্রতি। যত ক্ষমতা তত দায়িত্ব, আর সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের আত্মসম্মানটা বরাবরই একটু বেশি হয়, তাই তাতে ঘা লাগলে সাধারণ মানুষ গর্জে ওঠেন। যাই হোক আমাদের তরফ থেকে কাঞ্চন বাবু এবং শ্রীময়ী দেবীকে বিবাহিত জীবনের অনেক শুভেচ্ছা রইল। আশা করি ওঁরা এই ভুলটা থেকে ভবিষ্যতে শিক্ষা নেবেন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad