ভারত-ভূমে কাঁটাতারের ওপারে কেমন আছেন ভোটাররা? প্রচারে বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ২২ মার্চ: কালিয়াচক থানার অন্তর্গত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বিস্তৃর্ণ এলাকায় রয়েছে কাঁটা তারে ঘেরা। কাঁটাতারের ওপারে রয়েছেন ভারত ভূমের কয়েকশো ভোটার। তারা প্রতিটি ভোটে অংশ গ্রহণ করলেও কখনও প্রার্থীদের দেখেন নি, যে তাদের কাছে ভোট প্রচার বা তাদের সাথে কথা বলবেন। তারা কখনও তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা বলতে পারে নি। প্রতিদিন তাদের বিএসএফ গেট খুললে এপারে এসে পানীয় জল, রুজি রোজগার করে। এদিন বৃহস্পতিবার সীমান্ত কাঁটাতারের ওপারে ভোট প্রচার করলেন মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী।
এই কেন্দ্রের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতার। আর কাঁটাতারের ওপারে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা আজও নিজ ভূমিতে পরবাসী হয়ে রয়েছেন। স্বাধীন ভারতের নাগরিক হয়েও দুই দেশের সীমান্ত কাঁটাতার প্রায় ৩০০টি পরিবারকে পরাধীন করে রেখেছে। কার্যত বন্দী জীবনযাপন করছেন সীমান্ত কাঁটাতারের ওপারে ৩০০টি পরিবার।
এই গ্রামে একসময় বসবাস করতেন প্রায় এক হাজারের বেশী পরিবার। কিন্তু সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার পর আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল পরিবার এপারে চলে এসেছেন। কিন্তু আজও আর্থিক ভাবে দুর্বল প্রায় ৩০০টি পরিবার রয়ে গেছে কাঁটাতারের ওপারে। সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নিয়মমত খোলা হয় সীমান্তের দরজা। আর বন্ধও হয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নিয়মে। দিনের কয়েক ঘন্টার মধ্যে এই এলাকার বসবাসকারীদের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সহ রুজি রোজগারের ব্যবস্থা করতে হয়। সেই সময়ে বাড়িতে খাওয়ার জলটুকুও নিতে হয়।
এই এলাকায় ভোট প্রচারে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, 'মানোয়ারা বিবি,সহ একাধিক বাসিন্দাদের এমন জীবনের জন্য দায়ী এলাকার সাংসদ তথা কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এই এলাকার সাংসদ একই পরিবারের সদস্যরা। তারা ভোটে জিতে এলাকার খবর রাখেন না। তাই আজকের দিনে এমন করুণ পরিস্থিতে বসবাসকারী বাসিন্দারা রয়েছেন।'
শুধু তাই নয় তৃণমূল কংগ্রেসকেও একই ভাবে কাঠগড়ায় তুলেছেন শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। তাঁর দাবী, এলাকার সাংসদ ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে সমস্যা সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা নীরবেই থেকেছেন। এলাকায় একটি আইসিডিএস সেন্টার নেই। নূন্যতম পরিষেবা নেই এলাকায়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে মাথার ছাদ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী জল জীবন মিশনের মাধ্যমে পানীয় জলের সুব্যবস্থা করা যেত, কিন্তু তা করা হয় নি। ফলে স্বাধীন ভারতের নাগরিক হয়েও রয়েছেন পরাধীন ভাবে। এর দায় কেবল এলাকার নির্বাচন শাসকদলের প্রতিনিধি ও কংগ্রেস দলের সাংসদের।
জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি অর্জুন হালদার বলেন, 'যিনি অভিযোগ করছেন তাঁকে আগে নিজের মুখ আয়নায় দেখতে উচিৎ। তিনি তো ইংরেবাজারের বিধায়ক। তিন বছর পার হয়ে গেছে, তিনি তিন বছরে কি কাজ করছেন সেই প্রশ্ন তোলা উচিৎ আগে। তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগটুকু রাখেন নি। কাজ তো দূরের কথা এলাকার মানুষ বলছে। আবু হাসেম খান চৌধুরী এমপি হয়েছেন পরপর তিনবার কাজ করেছে বলে হয়েছে। কি কাজ করেছে তার জবাব মানুষ দেবে। যারা কাজ করবে না এলাকার মানুষ জবাব দেবে। সুতরাং তিনি যে কাজ করেছে এটাই প্রমাণ। কে কি বলল তাতে যায়-আসে না। এর জবাব কাগজে কলমে দেব।'
অপরদিকে রাজ্য তৃণমুল কংগ্রেসের সহ সভাপতি কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, 'তিনি তো বড় বড় কথা বলেন।উনি কি করেছেন! উনি তো এমএলএ হয়েছেন। শহরটাও তো তাঁর আন্ডারে। কি করেছেন শহরে। গ্রামে কি করেছেন। আমরাও তো বিরোধী দলে ছিলাম সেই সময় সিপিএম ক্ষমতায় ছিল। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আবদার করে কাজ করাতাম। উনি কি করেছেন। দিল্লীতে সরকার তাদের। যদি এমপি কিছু না করে উনি করতে পারতেন তো। ধরে ধরে এনে উনি করতে পারলেন না! উনি তো প্রচুর ভোটে জিতেছিলেন সেই ভোট গুলো মিস ইউজ করেছেন। সুতরাং মানুষকে বোকা বানিয়ে কিছু হবে না। ওনাকে এখন বলছে না সবাই নিজের নাম চেঞ্জ করে নির্ভয়া দিদি বলছিলেন এখন সবাই বলছেন নিরুদ্দেশ দিদি।'
No comments:
Post a Comment