সন্দেশখালির মহিলাদের কাছে পুলিশের ভূমিকা জানতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা: সন্দেশখালির মহিলাদের মুখে শেখ শাহজাহান বাহিনীর নির্যাতনের বর্ণনা শুনে চমকে উঠেলেন প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার বারাসতের কাছারি মাঠে সভা শেষে সন্দেশখালিতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের হাতে আক্রান্ত মহিলাদের ৫ প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ করেন। সব শুনে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার বারাসতের সভায় আসার সময় সকাল সাড়ে ছয়টা নাগাদ শতাধিক মহিলা ধামাখালি থেকে বাস ভাড়া করে রওনা দেন। দুপুরে সভা শেষ হওয়ার মুখে কাছারি মাঠে পৌঁছান। মহিলাদের অভিযোগ, চালক নানা টালবাহানা করে বারাসতে আনেন তাদের। এই ঘটনার জন্য তৃণমূলকে দায়ি করেছেন মহিলারা। অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে না পারেন সেকারণেই চালক দেরি করেছেন পথে। সভাস্থলে এনেছেন ঘুরপথে। যদিও নাম বলতে না চেয়ে এক চালকের দাবী, "বারাসতে আসার রাস্তা চিনি না। শুনে শুনে আসতে হয়েছে। সেকারণেই দেরি হয়েছে।" এক অভিযোগকারিনী বলেন, "কলকাতা ধামাখালি রুটের চালক বারাসতে আসার রাস্তা চেনে না এটা কি বাস্তবে সম্ভব?"
বিজেপি সূত্রের খবর, এদিন সভা শেষ করে অস্থায়ী ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি আগেই ঠিক ছিল। ফলে প্রধানমন্ত্রী মোদী সভা শেষে খোঁজ নেন সন্দেশখালির মহিলাদের অবস্থান। সঙ্গে থাকা সন্দেশখালির বিজেপি নেতা বিকাশ সিং-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিজেপি নেতৃত্ব। সভাস্থলে পৌঁছানোর পর পাঁচ মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর কাছে।
এক অভিযোগকারিনী বলেন, "সাত মিনিট সময় দিয়ে মহিলাদের ওপর নির্যাতন, টাকা না দেওয়া, জমি কেড়ে নেওয়া, ভোট লুট, উন্নয়ন না করা সবিস্তারে বলেছি প্রধানমন্ত্রীকে। উনি আমাদের মুখে শুনে চমকে ওঠেন। তিনি বলেছেন, দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে।আপনাদের পাশে আছি। "
পাত্র পাড়ার এক অভিযোগকারিনী বলেন, "প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি আমি তৃণমূল করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেই। তবুও আমার ওপর নির্যাতন করেছে শাহজাহানের লোকেরা। বলতে বলতে চোখে জল আসে। প্রধানমন্ত্রী তখন নিজেই বলেন, থাক আর বলতে হবে না। আমি বুঝেছি।"
অভিযোগকারিনী মহিলাদের দাবী, 'এদিন সভাস্থলে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাতে দেখা না করতে পারি সেকারণে চালক তৃণমূলের কথায় ঘুর পথে এনেছেন। এখনও হুমকি দিচ্ছে শাহজাহানের লোকেরা। পুলিশ আমাদের পাশে আগেও ছিল না এখনও নেই, তা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি। মাঝের পাড়ার এক অভিযোগকারিনী বলেন, "পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছিলেন আমাদের কাছে। সব বলে দিয়েছি। এখন দেখা যাক উনি কি ব্যবস্থা নেন। "
বিজেপি নেত্রী রূপা গাঙ্গুলী বলেন, "কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করা হবে। কেউই রেহাই পাবে না।" বিজেপি সূত্রের দাবী, বুধবার সভায় আসার আগে সন্দেশখালির সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কিত রিপোর্ট তিনি দেখেন। খোঁজ নেন বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে। রাজ্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসন এবং তৃণমূলের পদক্ষেপ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য ছিল রিপোর্টে।
No comments:
Post a Comment