সতর্ক থাকুন ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি থেকে
প্রেসকার্ড নিউজ,লাইফস্টাইল ডেস্ক,৫ এপ্রিল: ডায়াবেটিস যদি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়,তাহলে এর কারণে শরীরের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে।এটি একটি খুব বিপজ্জনক অবস্থা,যা এড়ানো প্রয়োজন।সুগারের রোগীরা এ ধরনের কোনও উপসর্গ লক্ষ্য করলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
ডায়াবেটিস ও নার্ভ ড্যামেজ:
ডায়াবেটিসের কারণে মানুষের রক্তে শর্করা বেড়ে যায় এবং সারা জীবন তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হয়।ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার লেভেল অনিয়ন্ত্রিত হয়ে দীর্ঘ সময় ধরে এভাবে থাকলে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে।যখন অতিরিক্ত চিনির মাত্রার কারণে স্নায়ুগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে,তখন এই অবস্থাকে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি বলা হয়।আমাদের শরীরের কোনও অংশের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে স্নায়ুগুলো সেই অংশে সংকেত পাঠানো বন্ধ করে দেয়।এই কারণে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিকমতো কাজ করতে পারে না।এটি একটি খুব বিপজ্জনক অবস্থা,যা কখনও কখনও মারাত্মক হতে পারে।এই ব্যাপারে একেবারেই অসতর্ক হওয়া উচিৎ নয়।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) রিপোর্ট অনুযায়ী,প্রায় ৫০ শতাংশ ডায়াবেটিক রোগীকে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির মুখোমুখি হতে হয়।নার্ভ ড্যামেজের অনেক উপসর্গ আছে,সেগুলো শনাক্ত করে সঠিক সময়ে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখলে পরবর্তী ক্ষতি এড়ানো যায়। ডায়াবেটিস রোগীরা দীর্ঘ সময় ধরে তাদের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখলে নার্ভের ক্ষতি এড়ানো যায়।ডায়াবেটিসের কারণে চার ধরনের স্নায়ুর ক্ষতি হয়।প্রথমটি হল পেরিফেরাল নার্ভ ড্যামেজ,দ্বিতীয় হল অটোনমিক নার্ভ ড্যামেজ,তৃতীয় হল প্রক্সিমাল নার্ভ ড্যামেজ এবং চতুর্থ হল ফোকাল নার্ভ ড্যামেজ। সব ধরনের নার্ভ ড্যামেজে শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উচ্চ চিনির মাত্রা সাধারণত হাত,পা,চোখ,হৃৎপিণ্ড,পেট, মূত্রাশয় এবং গোপনাঙ্গের মতো অংশে স্নায়ুর ক্ষতি করে।
ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির অনেক উপসর্গ আছে,যেগুলো শনাক্ত করলে শুরুতেই ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি শনাক্ত করা যায়।হাত ও পায়ের অসাড়তা,হাত ও পায়ে কাঁটা ফোঁটা অনুভূত হওয়া,পায়ের আলসার,জয়েন্টে ব্যথা,বমি-বমি ভাব,বমি, ডায়রিয়া,ক্ষুধামান্দ্য,গোপনাঙ্গে সমস্যা,নিতম্বে প্রচণ্ড ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা,দৃষ্টি ঝাপসা ইত্যাদি উপসর্গ থাকলে সতর্কতা অবলম্বন করুন।এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি প্রতিদিন আপনার ব্লাড সুগার নিরীক্ষণ করুন।যদি আপনি লক্ষ্য করেন যে আপনার চিনির মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত,তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।এই ব্যাপারে কোনওভাবেই গাফিলতি করবেন না।না হলে সমস্যা বাড়তে পারে।একবার নার্ভের ক্ষতি হয়ে গেলে তা আর ফেরানো সম্ভব নয়।অতএব,এই বিষয়ে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করুন।
এখন প্রশ্ন জাগে রক্তে শর্করা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে,ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিক খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা উচিৎ। এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা উচিৎ এবং তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিৎ।এই ধরনের রোগীদের সম্পূর্ণরূপে অ্যালকোহল এবং ধূমপান এড়ানো উচিৎ।এছাড়া চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ সময়মতো খেতে হবে।আপনার প্রতিদিন রক্তে শর্করার নিরীক্ষণ করা উচিৎ এবং প্রচুর পরিমাণে জল পান করা উচিৎ।এই সমস্ত কিছু মেনে চললে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
No comments:
Post a Comment